কক্সবাজারের টেকনাফে দেশীয় জলসীমার নিরাপত্তার দায়িত্বে কোস্টগার্ড বাহিনীর সাথে মাদক কারবারিদের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। উক্ত ঘটনায় মাদক পাচারে জড়িত এক কারবারি নিহত হয়েছেন। অভিযান চলাকালীন সময়ে দেশীয় তৈরি অস্ত্র, গুলিসহ মাদক পাচারে জড়িত ডাকাত দলের ১৬ জন সদস্যকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে অভিযানিক দলের সদস্যরা।
শুক্রবার (৪ জানুয়ারি) গভীর রাতের দিকে টেকনাফের নাফ নদে উক্ত ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার দিকে উক্ত ঘটনার বিষয় নিয়ে সময়ের কন্ঠস্বরকে সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কোস্টগার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লে.কমান্ডার (বিএন) মো.সিয়াম-উল-হক।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কোস্টগার্ড জানতে পারে, মিয়ানমার থেকে পাচার হয়ে আসা মাদকের একটি বড় চালান কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানাধীন শাহপরীর দ্বীপ সমূদ্র পথ দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে।
সংবাদের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩ জানুয়ারি গভীর রাত ১১টার দিকে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পূর্ব জোন অধিনস্থ বিসিজি স্টেশন টেকনাফ ও বিসিজি আউটপোস্ট শাহপরীর দ্বীপে দায়িত্বরত সদস্যরা সমুদ্রের দেশীয় জলসীমা এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করার সময় অভিযানিক দল দেখতে পায়, মিয়ানমার মংডু জেলাধীন নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা হতে একটি বড় ইঞ্জিন চালিত ফিশিং ট্রলার মিয়ানমার জলসীমা অতিক্রম করে দেশীয় জলসীমায় প্রবেশ করে।
কোস্টগার্ড আভিযানিক দল উক্ত ট্রলারটিকে থামানোর জন্য সংকেত দিলে ট্রলারটি সংকেত অমান্য করে দ্রুত গতিতে সাগর পথে কক্সবাজারের দিকে পালাতে শুরু করে। অবশেষে কোস্টগার্ডের অভিযানিক দল ট্রলারটি থামানোর জন্য ফাঁকা গুলি বর্ষণ শুরু করে। এসময় ট্রলার থেকে কোস্টগার্ড সদস্যদের লক্ষ্য করে অতর্কিত ভাবে পাল্টা গুলি বর্ষণ শুরু করে। কোস্টগার্ড সদস্যরাও আত্মরক্ষার্থে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে। পাশাপাশি ট্রলারটিকে অকেজো করার উদ্দেশ্যে ওয়াটার লাইন এবং ইঞ্জিন রুম বরাবর গুলি চালায় অভিযানিক দল।
অবশেষে ট্রলারটি ধৃত করার পর উক্ত ট্রলারে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করে ১০ হাজার ইয়াবা, ৩টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র,৩ রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করার পাশাপাশি ট্রলারে থাকা মাদক পাচারে জড়িত অস্ত্রধারী ১৬ জন ডাকাতকে আটক করতে সক্ষম হয় হয়।
তিনি আরো বলেন, জব্দ করা মাদক বহনকারী ট্রলারের ইঞ্জিনরুমে একজন পাচারকারীকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। উক্ত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আটককৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তারা কোস্টগার্ড অভিযানিক দলের উপস্থিত টের পেয়ে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা সাগরে ফেলে দিয়েছে।
সাগরে ফেলে দেওয়া উক্ত মাদক গুলো উদ্ধার করার জন্য অভিযান চলমান রয়েছে।
জব্দকৃত ইয়াবা,অস্ত্র,গুলিসহ ধৃত আসামীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়ের করার জন্য টেকনাফ মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
পিএম