এইমাত্র
  • সিরাজগঞ্জে শ্লীলতাহানির অভিযোগে ছাত্রদল নেতা গ্রেপ্তার
  • গভীর রাতে কৃষকের গরু জবাই করে রেখে গেছে দুর্বৃত্তরা
  • খড়ের আড়ালে চোলাই মদ পাচারের চেষ্টা, আগুন দিল জনতা
  • ওসমান হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স
  • ‘হাদীর উপর হামলাকারীরা সীমান্ত ব্যবহার করে পালানোর তথ্য নিশ্চিত নয়’
  • সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে এভারকেয়ার ছাড়লেন হাদি
  • বকশীগঞ্জের এক স্কুলেরই ৬৬ ছাত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা
  • নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জে নিরাপত্তা জোরদার
  • যমুনায় জেগে উঠেছে অসংখ্য ডুবোচর, নৌ চলাচল ব্যাহত
  • আগামীকাল সাময়িক বন্ধ থাকবে মেট্রোরেল
  • আজ সোমবার, ১ পৌষ, ১৪৩২ | ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
    লাইফস্টাইল

    বিলুপ্তির পথে জাদুকরী ঔষধিগুণে সমৃদ্ধ ভেন্না পাতার উপকারিতা

    লাইফস্টাইল ডেস্ক প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৭ পিএম
    লাইফস্টাইল ডেস্ক প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৭ পিএম

    বিলুপ্তির পথে জাদুকরী ঔষধিগুণে সমৃদ্ধ ভেন্না পাতার উপকারিতা

    লাইফস্টাইল ডেস্ক প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৭ পিএম
    ছবি: সংগৃহীত

    জনপদে জাদুকরী ঔষধিগুণে সমৃদ্ধ ভেন্না গাছ সচরাচর চোখে পড়লেও সময়ের পরিক্রমায় বিলুপ্তির পথে এই গাছ। প্রাচীনকাল থেকেই মানুষের নানা চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি মানবদেহের নানা রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এই ভেন্না গাছ ও তার ফল থেকে তৈরি তেল।

    ভেন্না গাছ (Ricinus communis), যা সাধারণত রেড়ী গাছ নামেও পরিচিত, শুধু এর তেল-উৎপাদনকারী বীজ বা ক্যাস্টর অয়েলের জন্যই বিখ্যাত নয়, এর নরম পাতাগুলিও শত শত বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই পাতাগুলিতে রয়েছে বিশেষ কিছু রাসায়নিক উপাদান, যা এটিকে নানান শারীরিক সমস্যা সমাধানে এক অসাধারণ ভেষজ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

    জনপদের বনে-বাদাড়ে, পথের ধারে, পুকুর পাড় ও বাড়ির আঙিনায় একসময় দেখা যেত ঔষধি নানা গুণে সমৃদ্ধ ভেন্না গাছ। মানুষের নানা অসুখ-বিসুখে ভেন্না গাছের পাতা ও তার ফল থেকে তৈরি তেল ব্যবহার করা হতো।

    আধুনিকায়ন আর আধুনিক চিকিৎসার উৎকর্ষে ভেন্না গাছসহ নানারকম ঔষধি উদ্ভিদ ও গাছ পরিবেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে পড়ছে।

    শরীরের কাটা অংশ জোড়া লাগাতে, চুল পড়া রোধে, মুখের রুচি বাড়াতে, শরীরের বাত-ব্যথায়, ক্ষত সারাতে ও দাঁত এবং মাড়ির যে কোনো সমস্যায় যুগান্তকারী ভূমিকা রেখে আসছে।

    রাতকানা রোগে ১০ থেকে ১৫ গ্রাম ভেন্না পাতা ঘিয়ে ভেজে বা যেকোনো শাকের সঙ্গে ভেজে খেলে তা কমে যায়। মহিলাদের রক্তস্রাবের কারণে তলপেটে ব্যথা নিরাময়ে ভেন্না পাতা গরম করে তলপেটে ছ্যাঁকা দিলে ব্যথা সেরে যায় এবং এভাবে দু-একদিন ব্যবহারে এ থেকে নিরাময় মেলে। এ ছাড়াও ভেন্না গাছের মূলের ছাল ও হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে ব্যবহারে খোস চুলকানি তাড়াতাড়ি সেরে যায়। প্রস্রাব কমে যাওয়া রোগীদের ক্ষেত্রে ভেন্না গাছের কাঁচা ছাল পানিতে সেদ্ধ করে পরিমাণ মতো খেলে প্রস্রাবের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

    আয়ুর্বেদ শাস্ত্রমতে ভেন্নার বীজ থেকে তৈরি তেল গরম করে বিষফোঁড়ার ওপর লাগালে ফোঁড়া পেকে ফেটে যায়, এতে ব্যথা উপশম হয় ও রোগ থেকে আরোগ্য মেলে। সায়োটিক বাতের ক্ষেত্রে ভেন্নার বীজ বেটে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে এ রোগ থেকে আরোগ্য পাওয়া যায়। শরীরের পোড়া ক্ষতের মধ্যে ভেন্না তেল ব্যবহার করলে রোগীর জ্বালাপোড়া কমে যায় এবং কয়েকদিন ব্যবহারে এর থেকে আরোগ্য মেলে।

    এ ছাড়াও ভেন্না গাছের পাতা, পাতার রস ও বীজ এবং বীজ থেকে তৈরি তেল মানুষের আরও অনেক রোগ নিরাময়ে আদিকাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

    ভেন্না পাতার ঔষধি গুণের মূলে রয়েছে এর নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি:

    ​অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি (প্রদাহরোধী): পাতাগুলিতে থাকা কিছু ফ্ল্যাভোনয়েড এবং অ্যালকালয়েড যৌগ শরীরের অভ্যন্তরীন ও বাহ্যিক প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

    অ্যানালজেসিক (ব্যথা উপশমকারী): এটি বিভিন্ন ধরনের ব্যথা, বিশেষত জয়েন্টের ব্যথা উপশমে কার্যকর।

    স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানে ভেন্না পাতার ব্যবহার:

    ভেন্না গাছের নরম পাতাগুলি বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে কিছু বহুল প্রচলিত উপকারিতা নিচে তুলে ধরা হলো:

    স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিকার ও উপকারিতা ব্যবহার পদ্ধতি

    ** জয়েন্টের ব্যথা ও গেঁটে বাত প্রদাহ এবং ব্যথা কমায়। পাতা হালকা গরম করে ব্যথার স্থানে সেঁক দেওয়া বা পাতা বেটে প্রলেপ দেওয়া।

    ** স্তন্যদুগ্ধের স্বল্পতা দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধি করে। পাতা হালকা গরম করে স্তনের উপর রাখা (ল্যাক্টোজেনিক প্রভাব)।

    ** ফোলা ও প্রদাহ আঘাত বা মচকানোর ফলে সৃষ্ট ফোলা কমায়। গরম করা পাতা বা পাতার মণ্ড ফোলা অংশে বেঁধে রাখা।

    ** কোষ্ঠকাঠিন্য মৃদু রেচক বা জোলাপ হিসাবে কাজ করে। পাতার রস পান করা বা শুকনো পাতা ব্যবহার করা (তবে মাত্রা ও পদ্ধতি সতর্কতার সাথে গ্রহণ করা উচিত)।

    ** ত্বকের সমস্যা ফোঁড়া, ঘা বা চর্মরোগে আরাম দেয়। পাতার মণ্ড বা প্রলেপ ব্যবহার করা।

    ব্যবহারিক সতর্কতা: ​ভেন্না পাতা বা ভেন্না বীজের তেল ব্যবহারে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।

    বীজের বিষাক্ততা: ভেন্না বীজ অত্যন্ত বিষাক্ত। কাঁচা বীজ বা অপরিশোধিত তেল কখনোই খাওয়া উচিত নয়।

    ​পরামর্শ গ্রহণ: অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে (যেমন পাতার রস পান) অবশ্যই কোনো অভিজ্ঞ ভেষজ চিকিৎসক বা স্বাস্থ্য পেশাদারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ এর অতিরিক্ত ব্যবহার বা ভুল পদ্ধতিতে ব্যবহার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে।

    গর্ভাবস্থা: গর্ভবতী মহিলাদের ভেন্না পাতার যেকোনো ধরনের ব্যবহার এড়িয়ে চলা উচিত, বিশেষত অভ্যন্তরীণ ব্যবহার।

    ​উল্লেখ্য, ভেন্না গাছের নরম পাতাগুলি সত্যিই প্রকৃতির এক অমূল্য ভান্ডার। সঠিক জ্ঞান এবং অভিজ্ঞ পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করলে, এই পাতাগুলি আমাদের দৈনন্দিন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এটি প্রমাণ করে যে প্রাচীন ভেষজ জ্ঞান আজও আমাদের জন্য কতটা প্রাসঙ্গিক।

    এইচএ

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…