ঢাকায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদীর ওপর গুলি বর্ষণের ঘটনায় হামলাকারীরা ময়মনসিংহ সীমান্ত ব্যবহার করে ভারতে পালিয়ে গেছে কী না—তা এখনও শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ করা মানবপাচারকারী ফিলিপ স্নালকে ধরতে ময়মনসিংহ ও শেরপুর জেলার সীমান্তজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
হাদীর ওপর হামলার ঘটনার পরপরই বিজিবি সম্ভাব্য পালানোর রুট ও মানবপাচার চক্রের গতিবিধি বিশ্লেষণ করে সীমান্ত এলাকায় অভিযান শুরু করে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাত থেকেই সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়। বসানো হয় একাধিক অস্থায়ী ও স্থায়ী চেকপোস্ট। একই সঙ্গে সীমান্ত টহলের সংখ্যা বাড়ানো হয়।
বিজিবি জানায়, হামলার সঙ্গে জড়িতরা ময়মনসিংহ সীমান্তের দুর্গম এলাকা ব্যবহার করে পালানোর চেষ্টা করতে পারে—এই আশঙ্কায় সীমান্তের অধিকাংশ এলাকায় সতর্ক অবস্থান নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে মানবপাচারকারীদের ব্যবহৃত সম্ভাব্য রুটগুলো চিহ্নিত করে সেখানে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ময়মনসিংহ নগরের খাগডহর বিজিবি ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘গুলি বর্ষণকারীরা ময়মনসিংহ সীমান্ত ব্যবহার করে ভারতে পালিয়েছে কী না—তা এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। তবে এ বিষয়ে বিজিবি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সীমান্তজুড়ে কঠোর নজরদারি ও অভিযান চালাচ্ছি। ফিলিপ স্নালকে গ্রেপ্তার করতে পারলে হামলার পেছনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে আসবে।’
বিজিবি জানায়, অভিযানের অংশ হিসেবে ফিলিপ স্নালের স্ত্রী ডেলটা চিরান, তার শ্বশুর ইয়ারসন রংডি এবং মানবপাচারকারী লুইস লেংমিঞ্জাকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের অধিকতর অনুসন্ধানের জন্য পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ ছাড়া ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী বারোমারি এলাকা থেকে বেঞ্জামিন চিরাম নামে আরও একজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বিজিবির এই কর্মকর্তা আরও জানান, হামলার ঘটনায় কারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত এবং তাদের পালানোর পথ কী ছিল—তা উদ্ঘাটনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর মধ্যে সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে সীমান্ত এলাকায় অভিযান আরও জোরদার করা হবে।
ইখা