এইমাত্র
  • সেভেন সিস্টার্সকে ভারত থেকে আলাদা করে দেবো: হাসনাত
  • দিল্লিতে ২৭টি সিগারেট খাওয়ার সমান ক্ষতি হবে মেসির ফুসফুুসে!
  • গালফ প্রো কার চ্যাম্পিয়ন হলেন অভিক আনোয়ার
  • সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে
  • নেপালকে হারিয়ে সেমির পথে বাংলাদেশ
  • বিএনপির প্রার্থী পুনঃবিবেচনার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
  • পিএসএলের কারণে পিছোতে পারে পাকিস্তানের বাংলাদেশ সফর
  • ৩০ বছর পর রোগীর পেট থেকে বের হলো লাইটার
  • বার্সেলোনাকে কিনতে ১০ বিলিয়ন ইউরো’র প্রস্তাব সৌদি যুবরাজের
  • বিজয় দিবসে যেসব সড়ক এড়িয়ে চলতে বলেছে ডিএমপি
  • আজ সোমবার, ১ পৌষ, ১৪৩২ | ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
    ধর্ম ও জীবন

    ৩৯ বছর বুখারি শরিফ পড়ানো মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী মারা গেছেন

    ধর্ম ও জীবন ডেস্ক প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৫৯ পিএম
    ধর্ম ও জীবন ডেস্ক প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৫৯ পিএম

    ৩৯ বছর বুখারি শরিফ পড়ানো মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী মারা গেছেন

    ধর্ম ও জীবন ডেস্ক প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৫৯ পিএম
    ছবি: সংগৃহীত

    জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়ার স্বনামধন্য শাইখুল হাদিস হযরত মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

    আজ সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর মিরপুর-২ কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৬৩ বছর।

    তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে মুহাম্মদ মারগুবুল হক। পরিবার সূত্রে জানা যায়, তিনি দীর্ঘ ৫ বছর ধরে ডায়াবেটিসজনিত রোগে ভুগছিলেন।

    মরহুম মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে পিরোজপুর জেলার জিয়ানগর থানার নলবুনিয়া গ্রামে এক দ্বীনি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন মাওলানা শামসুল হক এবং দাদা ছিলেন মৌলভি নাজেম আলী হাওলাদার। মাতুল ও পিতুল উভয় দিক থেকেই তিনি আলেম পরিবারে লালিত-পালিত হন।

    শৈশবেই নিজ এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করার পর তিনি দ্বীনি শিক্ষার পথে অগ্রসর হন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত দারুল উলুম বাদুরা মাদরাসায় উর্দু, ফার্সি ও মিযান জামাত সম্পন্ন করেন। এরপর গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ার কাজুলিয়া মাদরাসায় নাহবেমীর ও হেদায়াতুল্লাহ জামাত শেষ করেন। ১৯৭৮ সালে গরহরডাঙ্গা দারুল উলুম খাদেমুল ইসলাম মাদরাসা থেকে কাফিয়া জামাত সমাপ্ত করে বোর্ড পরীক্ষায় মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ হন।

    ১৯৭৯ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত তিনি আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসায় শরহে জামী, শরহে বেকায়া ও হেদায়া জামাত সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে ১৯৮২ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দে জালালাইন, মেশকাত, তাকমিলে দাওরা ও তাকমিলে আদব সম্পন্ন করেন।

    মেশকাত জামাতে তিনি কৃতিত্বের সাথে মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ হন। দারুল উলুম দেওবন্দে তাঁর গড় নম্বর ছিল অত্যন্ত উঁচু, যার কারণে ইফতা বিভাগে ভর্তির সুযোগ তৈরি হলেও তৎকালীন সদরুল মুদাররিসীন হযরত মাওলানা মেরাজুল ইসলাম (রহ.)-এর পরামর্শে তিনি তাকমিলে আদবে অধ্যয়ন অব্যাহত রাখেন।

    ১৯৮৭ সালে তিনি আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে উর্দু সাহিত্যে মাস্টার্স সমমানের কামেল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রশংসনীয় ফলাফল অর্জন করেন এবং বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হন। একই সময়ে দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে খোশখাত বা ক্যালিগ্রাফিতে বিশেষ সনদও অর্জন করেন।

    শিক্ষকতা জীবনের সূচনা হয় ভারতের রাজস্থানের জামিয়া লতিফিয়ায়। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সেখানে তিনি বুখারি শরিফ, তিরমিজি, মুসলিম ও মিশকাত শরিফের দরস প্রদান করেন। পরবর্তীতে ১৯৯১ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত জামিয়া রহমাতুল্লাহ আমলাপাড়া মাদরাসায় এবং ১৯৯৯ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত জামিয়া আশরাফুল উলুম বড় কাটারা মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। ২০০০ সালে জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়ায় দাওরায়ে হাদিস চালু হলে তিনি সেখানে বুখারি ও তিরমিজি শরিফের দরস শুরু করেন। দীর্ঘদিন তিনি নাজেমে তালীমাতের দায়িত্বও পালন করেন এবং আমৃত্যু জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়ার খেদমতে নিয়োজিত ছিলেন।

    তিনি লালমাটিয়া মাদরাসার পাশাপাশি লালবাগ জামিয়া শায়েখিয়া, জামিয়া আবরারিয়া কামরাঙ্গীরচরসহ বিভিন্ন মাদরাসায় বুখারি শরিফের দরস প্রদান করেন। ১৯৯১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি নারায়ণগঞ্জের ঐতিহাসিক কেল্লা শাহী মসজিদে নিয়মিত খতিবের দায়িত্ব পালন করেন।

    ইসলাহি ও তাসাউফের ক্ষেত্রে তিনি দারুল উলুম দেওবন্দে অধ্যয়নকালেই হযরত মাওলানা মছিহুল্লাহ খান জালালাবাদী (রহ.)-এর হাতে বাইআত গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে হযরত শাহ আবরারুল হক (রহ.) এবং এরপর হযরত আল্লামা মাওলানা কমরুদ্দীন সাহেবের হাতে রুজু ও বাইআত গ্রহণ করে খেলাফত লাভ করেন।

    মরহুম মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী সৌদি আরব, থাইল্যান্ড, ভারত ও পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে সফর করে দ্বীনি খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন। তিনি মৃত্যুকালে স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তাঁর ইন্তেকালে দেশের আলেম সমাজ, ছাত্রবৃন্দ ও ভক্ত-অনুরাগীদের মাঝে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তাঁকে গ্রামের বাড়ি নলবুনিয়ায় দাফন করা হবে।

    আল্লাহ তাআলা এই মহান আলেমকে জান্নাতুল ফেরদাউসের উচ্চ মাকাম দান করুন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার ও অসংখ্য ছাত্র-মুরিদকে সবরে জামিল দান করুন। আমিন।

    এইচএ

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…