ঢাকাই চলচ্চিত্রের একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা অঞ্জু ঘোষ। যিনি বাংলাদেশ ও ভারতের মোট ছয়টি ভাষার ৩০০টিরও বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশি সিনেমা ‘বেদের মেয়ে জোসনা’র জন্য তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত। তোজাম্মেল হক বকুল পরিচালিত ১৯৮৯ সালের এই সিনেমায় তিনি তখনকার সুপারহিট নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের বিপরীতে অভিনয় করেন।
এক সময়ের পর্দা কাঁপানো এ নায়িকা দেশ ছেড়েছেন ২৫ বছরের বেশি সময়। এখনকার আবাস পাশের দেশ ভারতে। সেখানকার নগরিকত্বও নিয়েছেন। তবে এ দেশের মানুষ তাঁকে আজও ভোলেনি। চলচ্চিত্রপ্রেমী সবার আজও প্রিয়মুখ তিনি। 'বেদের মেয়ে জোসনা' একটি ছবিই তাঁকে বাঁচিয়ে রাখবে যুগের পর যুগ। শুধু ছবি অভিনয় নয়, কালজয়ী গান 'ওরে ও বাঁশিওয়ালা'র জন্যও মনে রাখবে এই মানুষটিকে।
তবে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে চলচ্চিত্র অভিনেত্রী দুলারী চিত্রনায়িকা অঞ্জু ঘোষের বিরুদ্ধে নানা ধরনের নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। যা কলকাতায় বসবাসরত অঞ্জু ঘোষের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এ নিয়ে দেশের একটি গণমাধ্যমের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।
অঞ্জু বলেন, আমি শুধু অবাকই হইনি মর্মাহতও হয়েছি। দুলারীর মতো একজন সিনিয়র অভিনেত্রী কি সুন্দর ভাবে আমার সম্পর্কে মিথ্যাচার করেছেন। উনি বেশ কিছু সিনেমায় আমার মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। উনি বলেছেন ‘আমি মদ পান করি। ঢাকায় থাকতে মিথ্যা ভালোবাসার অভিনয় করে অনেকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে কলকাতায় পালিয়েছি। উনি শুধু আমার ব্যাপারে নয়, অন্য সিনিয়র নারী শিল্পীদের ব্যাপারেও এ ধরনের মন্তব্য করেছেন।’
অঞ্জু বলেন, আমি জানি বর্তমানে বাংলাদেশের সিনেমার ক্রান্তিকাল চলছে। আগের অনেক শিল্পী কর্মহীন হয়ে পড়েছে। তাই বলে সামান্য কিছু অর্থের জন্য ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা ইউটিউব চ্যানেলগুলোতে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে দুলারী আপার মিথ্যাচার করতে হবে! উনি মিথ্যাচার করে নিজের কুরুচির পরিচয় দিয়েছেন।
তিনি বলেন, দুলারি আপার কথার রেশ ধরেই যদি বলি, উনি কি কোনোদিন আমার সঙ্গে বসে মদ খেয়েছেন? কিংবা মিথ্যার প্রলোভন দেখিয়ে যাদের কাছ থেকে আমি অর্থ হাতিয়ে নিয়েছি কোনো সাক্ষী-প্রমাণ দেখাতে পারবেন? অভাব অনটন থাকতেই পারে, তাই বলে সামান্য কিছু টাকার জন্য যেখানে সেখানে আবোল তাবোল বলা একজন শিল্পীর শোভা পায় না।
অঞ্জু প্রশ্ন রেখে বলেন, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সাফল্যের ইতিহাস লিখতে গেলে অঞ্জু ঘোষ কে বাদ দেয়া কি সম্ভব দুলারী আপা?
তিনি বলেন, আমি অঞ্জু ঢাকাতেও রানীর মতো ছিলাম, বর্তমানে কলকাতায়ও আপনাদের আশীর্বাদে রানীর হালেই আছি। আমি বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের বর্তমান শিল্পী সমিতির কমিটির প্রতি অনুরোধ করবো, সামান্য অর্থের জন্য যে সকল শিল্পী সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে সহশিল্পীদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন প্লিজ তাদের মুখের লাগাম টেনে ধরুন।