সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। টেলিভিশন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন ডাক্তার পরিচয় দেওয়া এক নারী। তিনি চিকিৎশাস্ত্রে ব্যবহৃত সাধারণ কিছু শব্দের অর্থও বলতে পারছেন না।
গত ডিসেম্বরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে আনসার সদস্যরা মুনিয়া খান রোজা (২৫) নামে এক ভুয়া গাইনি চিকিৎসককে আটক করেন। এরপর তাকে প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। সেখান থেকে ওই তরুণীর ঠাই হয় জেলহাজতে।
পরে তিনি জেল থেকে বের হয়ে দাবি করেন তিনি ভুয়া ডাক্তার না।
তাকে জিজ্ঞেস করা হয় ওটি মানে কী? তিনি বলেন, ওটি মানে সার্জারি করা, ওটি করা। প্রশ্নকারী আবার বলেন, ওটির একটি অর্থ আছে। এটার পুরো মানেটা কী? তিনি উত্তর দিতে পারেননি।
তাকে জিজ্ঞেস করা হয় আইসিইউ মানে কী, এই প্রশ্নেরউত্তর দিতে গিয়ে বলেন, যেখানে রোগীকে আইসিইউতে মানে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়, অক্সিজেন দেওয়া হয়। তাকে আবার জিজ্ঞেস করা হয় আইসিইউ মানেটা কী, তিনি উত্তর দিতে পারেননি।
একটি রোগীর বিষয়ে কথা বলছিলেন মুনিয়া। উপস্থাপক তাকে জিজ্ঞেস করেন কী হয়েছিল তার? মুনিয়া বলেন, ব্রেন স্টোমাক। উপস্থাপক বুঝতে না পেরে আবার জিজ্ঞেস করেন ব্রেইন টিউমার? মুনিয়া বলেন, না; ব্রেইন স্টোমাক হয়েছে।
মুনিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে তিনি ডাক্তার কী না, কেন টিকটক করেন। এর উত্তরে মুনিয়া বলেন , আমি যদি ডাক্তার না হই তাহলে কী আমাকে ঢাকা মেডিকেলে এমনি এমনি পেশেন্ট দেখতে দেয়?
অভিযুক্ত তরুণী ঢাকা মেডিকেল থেকে বেসরকারি হাসপাতালে রোগী ভাগিয়ে নিতেন এবং সুযোগ পেলে চিকিৎসকদের রুমে ঢুকে মোবাইলসহ বিভিন্ন মালামাল চুরি করতেন। এ ছাড়া নীলক্ষেত থেকে অ্যাপ্রোন, আইডি কার্ড এবং মিডফোর্ড থেকে স্টেথোস্কোপ কিনে প্রতারণায় ব্যবহার করতেন এবং নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিতেন।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত মুনিয়া খান রোজা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকের সেলিব্রিটি। তিনি ডাক্তার সেজে ও বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জামাদি নিয়ে ঢামেকে টিকটক ভিডিও তৈরি করতেন। টিকটকে নিজেকে চিকিৎসক হিসেবেও পরিচয় দিতেন এই তরুণী।
চিকিৎসকের মিথ্যা পরিচয় দেওয়া মুনিয়া খান চাঁদপুর সদরের হামান কর্দ্দি গ্রামের প্রয়াত মো. করিম খানের মেয়ে। তিনি পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডে ভাড়া বাসায় থাকেন।
মুনিয়া এসেছিলেন নাগরিক টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে। সেখানে তার মুখোমুখী হন আরেকজন নারী উপস্থাপক।
এফএস