যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়নে ঘুনী গ্রামে বড় ভাই রেজাউল মোল্যার চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে ছোট ভাই শামছুল মোল্যা রহমান। জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ওই রাস্তায় বাঁশের খুঁটি, টিন ও বিভিন্ন কায়দায় বেড়া দিয়ে তার পরিবারকে অবরুদ্ধ করা হয়েছে বলে ভুক্তভোগীর অভিযোগ। স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি অমানবিক এই কাজে শামছুল মোল্যাকে সহায়তা করেছেন। চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রেজাউলের পরিবার বিপাকে পড়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘুনী গ্রামের ছবেদ আলী মোল্যার দুই ছেলে রেজাউল মোল্যা ও শামছুল মোল্যা। পৈত্রিক সূত্রে দুই ভাই ৩ শতক করে জমি পেয়েছেন। রাস্তার পাশের অংশ পেয়েছেন শামছুল ও শেষের অংশ থেকে পেয়েছেন রেজাউল। এছাড়া পিতার কাছ থেকে আরও ৮ শতক জমি কিনে নেন শামছুল। যে কারণে তার জমি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ শতক। মেয়েদের নগদ টাকা দেয়ার জন্য ছবেদ মোল্যা শামছুলের কাছে জমি বিক্রি করে দেন।
রেজাউল মোল্যা জানান, আমার জমি পিছনে হওয়ায় কারণে পরিবারের সদস্যদের চলাচলে দুর্ভোগের শেষ নেই। ছোট ভাই শামছুল ও তার স্ত্রী শাহিনা বেগম প্রায় তাদের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। সর্বশেষ রোববার স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তির সহায়তায় আমাদের চলাচলের একমাত্র রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। আপন ভাই শামছুল শরীকের রাস্তা কিভাবে বন্ধ করতে পারলেন এটা আমার বোঁধগম্য নয়। পিছনের অংশে বাড়ি হওয়ায় আমি কি চলাচলের রাস্তা পাবো না। রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে শামছুল হীনমানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। আমার পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখা যেন তাদের প্রধান লক্ষ্য ছিলো।
রেজাউল মোল্যার স্ত্রী রীনা বেগম জানান, আমাদের বাড়ি পেছনে পড়ায় চলাচলের রাস্তা প্রয়োজন। কিন্তু শামছুল ও তার পরিবারের লোকজন জমি নিজেদের দাবি করে চলাচলের রাস্তায় বাঁশের খুঁটি, টিন ও বিভিন্ন কায়দায় বেড়া দিয়েছেন। এতে আমার পরিবারের সদস্যরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। নানা সমস্যার মধ্যে সময় পার করছেন তারা। রাস্তা বন্ধের প্রতিবাদ করায় বিভিন্ন হুমকি-ধামকির শিকার হচ্ছেন। আমাদের জব্দ করার জন্য স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি অমানবিক এই কাজে শামছুল গংকে সহায়তা করেছেন। রাস্তা বন্ধের ঘটনায় মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন রীনা বেগম।
এই বিষয়ে শামছুল মোল্যার বক্তব্য নেয়ার জন্য বাড়িতে গেলে পরিবারের সদস্যরা বলেন ছুটি শেষ হওয়ায় তিনি ঢাকায় কর্মস্থলে ফিরে গেছেন। এসময় তার স্ত্রী শাহিনা বেগম জানান, নিজেদের জমির সীমানা নির্ধারণ করে রান্না ঘর তৈরি করা হয়েছে। অন্যের প্রয়োজনে জমি তো ফেলে রাখা যায়না। কারো জমি দখল করে বেড়া দেয়া হয়নি।
পরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে শামছুল মোল্যা জানান, আমার পূর্ব পাশের প্রায় ১ শতক জমি রেজাউল মোল্যা অবৈধভাবে ভোগদখল করছেন। বারংবার বলা হলেও তিনি জমি ছাড়ছেন না। এরপরেও আমার জমি ওপর দিয়ে তারা চলাচল করেন। ফলে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুর রহমান জানান, রেজাউল মোল্যা এক দিনমজুর। জমি নিয়ে ছোট ভাই শামছুল মোল্যার সাথে তার জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। বিগত দিনে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে শালিস করে বিবোধ নিষ্পত্তি করা হয়। হঠাৎ শুনছি শামছুল বড় ভাই রেজাউলের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। বিষয়টি সত্যি অমানবিক।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বর রফিকুল ইসলাম জানান, রেজাউল মোল্যা ও শামছুল মোল্যা আপন দুই ভাই। তাদের মধ্যে জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। শালিস বিচারও করা হয়েছে। রেজাউলের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করার ঘটনাটি জানা নেই। কেউ অভিযোগও করেননি। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এফএস