অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পুরোনো উপদেষ্টাদের মধ্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনকে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং তার জায়গায় তুন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম। জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী স্বরাষ্ট্রের সঙ্গে কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও সামলাবেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে দেওয়া প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি জানানো হয়েছে। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে আরও তিন উপদেষ্টার সঙ্গে শপথ নেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বঙ্গভবনে তাদেরকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরপর তাদের মধ্যে দপ্তর বণ্টন করা হয়। দপ্তর বণ্টন ছাড়াও আজ বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের দপ্তর পুনর্বণ্টন করা হয়।
যেখানে নতুন শপথ নেওয়া ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে পরিকল্পনা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আলী ইমাম মজুমদারকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় এবং বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বঙ্গসেনা জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষের সময় ২০০৩ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসের (বর্তমান বিজিবি) মহাপরিচালক ছিলেন। এরপর তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার হিসেবে নিয়োগ পান। জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর জন্ম ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৩ সালে এবং ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আর্টিলারি কর্পসে কমিশন করেন। তিনি একজন গানার হিসেবে কর্মজীবনের শুরুতে তিনি কমান্ডিং টু আর্টিলারি ব্রিগেডস এবং ফিল্ড আর্টিলারি রেজিমেন্টসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন।
বাংলাদেশ সামরিক একাডেমির প্রশিক্ষকও ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এরপর তিনি ইন্টার সার্ভিসেস সিলেকশন বোর্ডে একটি গ্রুপ টেস্টিং অফিসার (জিটিও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, রুয়ান্ডা এবং জর্জিয়াতে জাতিসংঘের সামরিক পর্যবেক্ষক ও স্টাফ হিসেবে তিনটি ভিন্ন জাতিসংঘ মিশনে কাজ করেছিলেন তিনি। জাহাঙ্গীর আলম ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড এবং স্টাফ কলেজে এবং ঢাকা ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের স্নাতক।
তাকে রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনে গিয়ে বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদকে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে বলার কৃতিত্ব দেওয়া হয়। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহে তার উত্তরাধিকারী মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ ও তার স্ত্রী নাজনীন হোসেন শাকিল শহীদ হন। এরপর কিউএমজি হিসেবে মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সেনাবাহিনীর তদন্ত কমিটির নেতৃত্ব দেন। এরপর ২০০৯ সালের ৩ ডিসেম্বর তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
এবি