ঢাকা কলেজে বিভিন্নভাবে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ঢাকা কলেজের গণিত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসানের বিরুদ্ধে। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা কলেজ গণিত বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ আগস্ট ঢাকা কলেজ ম্যাথ অ্যাসোসিয়েশনের ২০২৪-২০২৫ সেশনের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটির অনুমোদনপত্রে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক অখিল চন্দ্র বিশ্বাসের পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নাজমুল হাসানেরও স্বাক্ষর রয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নীতি নৈতিকতার তোয়াক্কা না করে একটি রাজনৈতিক দলের নেতা নাজমুল হাসান ম্যাথ অ্যাসোসিয়েশনের মতো অরাজনৈতিক সংগঠনে স্বাক্ষর করেছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হিসেবে। হল পরিচালনা কমিটিতেও যোগ্য ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে পছন্দের ব্যক্তিদের ছাত্র প্রতিনিধি বানানোর জন্য একচ্ছত্রভাবে প্রভাব খাটিয়েছেন তিনি।
এবিষয়ে ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদ, ডিসি ইনসাইডারসহ ঢাকা কলেজের বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও গ্রুপে কমিটির প্রেসনোট প্রকাশিত হলে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানায় শিক্ষার্থীরা ।
সমন্বয়ক নাজমুলের প্রভাব বিস্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মিরাজ হাসান তিহান বলেন, সমন্বয়ক পদ নিয়ে দেখি এখন ছাত্রলীগ, ছাত্রদলের মতো ক্যাম্পাসে একচেটিয়া রাজত্ব শুরু হয়ে গেছে।
অপর একজন শিক্ষার্থী রাব্বি হাসান বলেন, ভিপি নুরের ছাত্র অধিকার পরিষদের রাজনীতি করেন তিনি। পরবর্তীত কেন্দ্রীয় কমিটির গঠন করেছে সেই কমিটিতেও নাম রয়েছে সমন্বয়ক নাজমুলের। ম্যাথ এসোসিয়েশনের কমিটিতে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক পরিচয়ের থেকে গণিত বিভাগের পরিচয় ব্যবহারটা বেশি যৌক্তিক ছিল।
ঢাকা কলেজের আরেক শিক্ষার্থী তৈয়্যেব বলেন, ম্যাথ অ্যাসোসিয়েশন একটা ডিপার্টমেন্ট ভিত্তিক অরাজনৈতিক সংগঠন সেখানে ম্যাথ ডিপার্টমেন্ট এর ছাত্র হিসেবে যে-কেউ কমিটিতে থাকতে পারে সেখানে সমন্বয়ক ব্যবহার করার কোনো যৌক্তিকতা নাই। এই সমন্বয়ক ব্যবহার করে নতুন বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে বলে মনে করি।
কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নাজমুল হাসান বলেন, আমার কমিটিতে সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে থাকার কথা ছিলো। সেখানে অ্যাসোসিয়েশনের শিক্ষার্থীরা সমন্বয়ক শব্দ ব্যবহার করেছে। এবিষয়ে অ্যাসোসিয়েশনের শিক্ষার্থীরা বিস্তারিত বলতে পারবে। আর হলের সিট দেওয়ার বিষয়ে আমার কোনো প্রভাব নেই। এটা আমি আজ প্রথম শুনলাম।
ঢাকা কলেজ গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক অখিল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, নাজমুল মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। সে বাইরে কি করে আমি জানি না। তবে আমার সাথে সে কোনো রাজনৈতিক প্রভাব খাটায় না। আমার বিভাগে মিলেমিশে সবাই থাকে। আমার এই অরাজনৈতিক সংগঠনে এসে যদি কেউ পলিটিক্স করে তাহলে আমি তাকে বের করে দিবো। এখানে আসলে সাধারণ ছাত্র হিসেবে থাকতে হবে। ম্যাথ এসোসিয়েশনের কমিটি গঠনের বিষয়ে তার (নাজমুল) কোনো প্রভাব নেই বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, নাজমুল হাসান ঢাকা গণিত বিভাগের ২০১৭-২০১৮ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হিসেবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন।
এমআর