গত (৫ আগস্ট) আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সারাদেশের মতো কিশোরগঞ্জেও বিভিন্ন থানায় একের পর এক মামলা করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে করা হচ্ছে আসামি। কিন্তু আসামির তালিকা থেকে বাদ যাননি যুবদলের কর্মীরাও। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ১৭ মাস কারাভোগ ও ১০ দিনের রিমাণ্ডে নিয়ে নির্যাতনের শিকার যুবদলের কর্মী রুহুল আমিনকে ছাত্রলীগ কর্মী সাজিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার একটি মামলায় আসামি করা হয়েছে।
আসামিদের তালিকায় যুবদল নেতা রুহুল আমিন নিজের নাম দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি অভিযোগ করেন জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম, সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইসরাইল মিয়ার তত্বাবধানে মামলাগুলো করা হচ্ছে। মোটা অংকের টাকায় তারা মামলা বাণিজ্য করছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন। এবং তিনি বিগত সরকার বিরোধী বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম থেকে শুরু করে জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনেও তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন কিশোরগঞ্জে।এসব আন্দোলনের ছবি তার ফেসবুক আইডিতেও পোস্ট করেন তিনি। এছাড়া সরকার পতনের পর তার নিজ এলাকা উকিলপাড়ায় যেন কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এবং চুরি ছিনতাইয়ের মত ঘটনা না ঘটে সেজন্য রাত জেগে পাহারাও দিয়েছেন রুহুল আমিনসহ এলাকার স্থানীয় যুবকরা।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বরাবর এ সংক্রান্ত লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগটি বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গ্রহণ করা হয়েছে।
জেলা বিএনপির সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা বলেন, অহেতুক নিরপরাধ কাউকে যেন মামলায় জড়ানো না হয়, সে বিষয় নেতৃবৃন্দকে নির্দেশনা দেওয়া আছে। মামলার বিষয় দেখভাল এবং আসামি যাচাই বাছাই সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলামই করছেন উল্লেখ করে নিজেদের অজান্তেই কিছু ভুলভ্রান্তি হয়ে যাচ্ছে বলে স্বীকার করেন তিনি। সিনিয়র কয়েকজন আইনজীবীর পরামর্শে তিনি নিজেই মামলার আইনি বিষয়গুলো দেখছেন বলে জানান।
জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল জানান, সুজন একটি মামলা করেছে এবং অনেক নিরীহ লোকদেরকেও আসামি করেছে শুনেছি। মামলার বিষয়গুলো সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম এবং আইনি বিষয়টা সহ সভাপতি এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা হেন্ডেল করছেন বলে তিনি জানান।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি দেখে দেওয়ার পরও ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে কাউকে কাউকে আসামি করা হচ্ছে। বিষয়গুলো ওসি সাহেবকে বলেছি চার্জশিট থেকে যেন তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় গত সোমবার কিশোরগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন লতিবাবাদ উত্তরপাড়া গ্রামের শিক্ষানবিশ আইনজীবী সুজন মিয়া। মামলায় ৯০ জনের নামোল্লেখ ও অজ্ঞাত ২০০/২৫০ জনকে আসামি করা হয়। যুবদলকর্মী রুহুল আমিন এই মামলার ৩৬ নম্বর আসামি।
এইচএ