এইমাত্র
  • কোটি টাকা চাঁদা দাবি: আজিজ-হারিস-জোসেফসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
  • বাংলাদেশকে হতাশার সাগরে ডুবিয়ে প্রথমদিন শেষ করল ভারত
  • সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে দরপত্র জমার সময় বাড়ছে
  • রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী
  • লক্ষ্মীপুরে বিএনপির ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত
  • শেরপুর জেলার সব থানার ওসিকে একযোগে বদলি
  • ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে ঝালকাঠিতে প্রাথমিক শিক্ষকদের মানববন্ধন
  • টেকনাফে নিখোঁজের ৫ দিন পর যুবকের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার
  • সুনামগঞ্জে বিদেশী মদসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার
  • ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যা : তিন শিক্ষার্থী পুলিশি হেফাজতে
  • আজ বৃহস্পতিবার, ৪ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    কিশোরগঞ্জে জমজমাট মাদক ব্যবসা, ধরা ছোঁয়ার বাইরে গডফাদাররা

    সাব্বির হোসেন, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৬ পিএম
    সাব্বির হোসেন, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৬ পিএম

    কিশোরগঞ্জে জমজমাট মাদক ব্যবসা, ধরা ছোঁয়ার বাইরে গডফাদাররা

    সাব্বির হোসেন, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৬ পিএম

    মাদকের জোয়ারে ভাসছে কিশোরগঞ্জ। প্রায় প্রত্যেকটি পাড়া মহল্লায় গড়ে উঠেছে একাধিক মাদক স্পট। ধীরে ধীরে মাদকের করাল গ্রাসের শিকার হচ্ছে তরুণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বেকার যুবকেরা। এমনকি চাকরিজীবী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিরাও জড়িয়ে পড়ছেন নতুন নতুন নেশায়। একের পর এক অভিযানে বিভিন্ন মাদকদ্রব্যসহ বিক্রেতারা আটক হওয়ার পরও থেমে নেই মাদকের জমজমাট ব্যবসা।

    এদিকে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ ও র‌্যাব-১৪ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্প নিয়মিত অভিযান চালালেও রহস্যজনক কারণে অধরা থেকে যাচ্ছে মূল হোতারা। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অন্যান্য এলাকায় মাদকের ব্যাপারে কঠোর ভূমিকা নিলেও মাদকের আখড়া বলে প্রচলিত রেলস্টেশন ও যশোদলের বানিয়াকান্দি এলাকায় তৎপর না থাকায় মাদক ব্যবসায়ীরা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

    বিশেষ করে র‌্যাব-১৪, সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের উত্তর পার্শ্বে, সদর উপ‌জেলার য‌শোদল এলাকায় অব‌স্থিত আল-‌হেরা ডি‌জিটাল ডায়াগন‌স্টিক সেন্টারের পূর্ব পার্শ্বে গাইঞ্জা পট্টি নামে খ্যাত স্থানটিতে এখন গাঁজা,ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ সবধরণের মাদক দ্রব্য বিক্রি করা হয়। এছাড়া রেলওয়ে স্টেশন মাদক দ্রব্যের আনা-নেওয়ার গেটওয়ে হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

    বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে বানিয়াকান্দি ও নিউটাউন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লুঙ্গির গোঁছায় গেঞ্জির নিচে পোটলা করা বড় আকারের ব্যাগভর্তি গাঁজা ও ইয়াবা। রিকশাচালক, বাইক আরোহী এবং পথচারী দেখলেই কয়টা লাগবে বলে জিজ্ঞেস করছিলেন কয়েকজন তরুণ ও মহিলা। অনেকে কিছু বুঝে কিংবা না বুঝে চলে গেলেও কেউ কেউ দাঁড়িয়ে খুব দ্রুতই লেনদেন সারছিলেন। কেবল এসব স্পটে নয় রেলস্টেশন এলাকা, আলোর মেলা, খরমপট্টি, বত্রিশ, মনিপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে খুচরা পর্যায়ে প্রকাশ্যেই মাদক বেচাকেনা লক্ষ করা গেছে। যদিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, প্রতিদিনই তারা কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় মাদক কেনাবেচা ও সেবনের বিরুদ্ধেও অভিযান চালান। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি দেখা যাচ্ছে না বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা।

    মাদক ব্যবসায়ীরা কেউ কেউ নিজেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স পরিচয় দিয়ে জমজমাট পরিসরে মাদক ব্যবসা করছে। এ মাদকের বিষয়ে এলাকার সচেতন মানুষ যদি কোন প্রতিবাদ করে তবে গড ফাদাররা সে সব লোকজনকে কোন না কোন ভাবে ফাঁসিয়ে দিয়ে উল্টো তাদের কে হয়রানি করতে থাকেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

    সচেতন নাগরিক কমিটির মম জুয়েল বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় প্রশাসন একটু ঢিলেঢালা থাকার সুযোগে কিশোরগঞ্জে মাদক ব্যবসা বেড়ে যায়। এ বিষয়ে প্রশাসনকে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান।

    র‍্যাব ও পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইয়াবা আসার পরে ফেনসিডিলের কদর কমে যায় মাদকসেবীদের কাছে। এখন বিপুল পরিমাণ ইয়াবা জেলায় বিক্রি হলেও তা ধরা মুশকিল হয়ে পড়েছে। ফেন্সিডিলের চেয়ে ইয়াবা ট্যাবলেট বহন করা সহজ হওয়ার কারণে তা থেকে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

    স্থানীয়দের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইচ্ছা করলে সহজেই এখানকার মাদকের স্পটগুলো বন্ধ করে দিতে পারে। কিন্তু মোটা অংকের টাকা পায় বলে প্রশাসন সব কিছু দেখেও না দেখার ভান করে।

    অভিভাবকরা বলেন, প্রকাশ্যে মাদক বেচনাকেনা হয়। সন্তানদের পাহারা দিয়েও মাদকের হাত থেকে রক্ষা করা যাচ্ছে না। পিতার চোখের সামনে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সন্তান। অনেক সময় মাদক কেনার টাকা না পেয়ে সন্তানের হাতে নিগ্রহের শিকার হচ্ছেন অনেক বাবা-মা। কিন্তু কিছুই করতে পারছেন না।

    কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘এরকম কিছু মাদক চক্রের তৎপরতা ওই এলাকায় আছে, সেটা আমরাও জানি। এ চক্র রেললাইনের দুই পাশের কৌশলে কাজে লাগিয়ে খুচরা পর্যায়ে বা ঘুরে ঘুরে মাদক কেনাবেচা করে বলে খবর পাওয়া যায়। এ বিষয়ে অভিযান চালানো হবে। তবে কোনো পুলিশ সদস্য মাদক কেনাবেচা দেখেও কিছু বলবেন না, এমনটি হওয়ার কথা নয়। সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ বা অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

    র‌্যাব-১৪ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশরাফুল কবির বলেন, মাদক ও কিশোরগ্যাং দমনে আমরা নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে অনেককেই গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনা হবে। কোনো অপরাধীকে ছাড় দেয়া হবেনা। র‌্যাবের এ ধরনের অভিযান ও গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত আছে। যখন যেখানে অভিযোগ পাওয়া যায় সেখানেই অভিযান চালানো হয়।

    এইচএ

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…