যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ১৪ বছর ধরে খাবারের টেন্ডার হয় না। ঠিকাদারের মামলার কারণেই টেন্ডার না হওয়ার কারণ। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বলেছেন, টেন্ডার না হওয়ায় নতুন রেটের উন্নত খাবার থেকে থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। মামলাটি তুলে নেয়ার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ঠিকাদারকে অনুরোধ করা হয়েছে। মানবিক কারণে মামলাটি তিনি তুলে নিতে রাজি হয়েছেন।
হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্র জানিয়েছে, গত ২০১০-১১ অর্থবছরের পর থেকে খাদ্য সরবরাহের টেন্ডার হয়নি। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে আহবান করা টেন্ডারে অনিয়মের অভিযোগে উচ্চ আদালতে মামলা করেছিলেন ঠিকাদার হাফিজুর রহমান শিলু। এরপর থেকে খাবারের টেন্ডার হয়নি। আদালতের নির্দেশে টেন্ডার বন্ধ রয়েছে। সেই থেকে একজন ঠিকাদার রোগীদের জন্য খাবার সরবরাহ করে আসছেন। আগের ১২৫ টাকা রেটে খাবার সরবরাহ করায় উন্নত খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।
হাসপাতালের ঠিকাদার হাফিজুর রহমান শিলু জানিয়েছেন, খাবারের টেন্ডারে অনিয়মের অভিযোগে তিনি ২০১৪ সালের ১৬ জুন উচ্চ আদালতে মামলা করেছিলেন। বর্তমানে মামলাটি চলমান রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার মামলার বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনায় বসা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ, সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইসহাক ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রাশেদ খান। তারা মানবিক কারণে মামলাটি তুলে নেয়ার প্রস্তাব দিলে তিনিও সম্মতি দিয়েছেন। এখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে মামলাটি তুলে নেয়ার ব্যাপারে চিঠি দেবেন। পরবর্তীতে তিনি আইনজীবির মাধ্যমে মামলা তুলে দেয়ার জন্য আদালতে আবেদন করবেন। ঠিকাদার হাফিজুর রহমান শিলু আরও জানান, ১২৫ টাকা রেটে রোগীদের যথেষ্ট পরিমাণ ভালো মানের খাবার তিনি সরবরাহ করছেন।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ জানিয়েছেন, মামলায় টেন্ডার কার্যক্রম বন্ধ থাকায় রোগীরা উন্নত খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ১২৫ টাকায় রোগীদের উন্নত খাবার সরবরাহ করা কঠিন। ফলে রোগীদের খাবারের মান বাড়াতে হলে নতুন টেন্ডার প্রয়োজন। যে কারণে ঠিকাদারকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসক আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করেছেন। এক প্রশ্নে তত্ত্বাবধায়ক জানান, জেলা প্রশাসক মামলা তুলে নিতে ঠিকাদারকে চিঠি দিতে বললেই তিনি দেবেন।
যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম জানান, ঠিকাদার মামলা করার সময় প্রতি রোগীর বরাদ্দ ছিলো ১২৫ টাকা। কিন্ত সরকারের নতুন হলো ১৭৫ টাকা। নতুন টেন্ডার না হওয়ার কারণে ১২৫ টাকার খাবার পাচ্ছেন রোগীরা। ফলে তারা উন্নত খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। মানবিক বিষয় বিবেচনা করে ঠিকাদারকে মামলাটি তুলে নেয়ার অনুরোধ করা হলে রাজি হয়েছেন। মামলা তুলে নেয়ার পর নতুন করে খাবারের ওপেন টেন্ডার আহ্বান করা হবে।