এইমাত্র
  • ইমরানের বিরুদ্ধে এবার সন্ত্রাসবাদে উস্কানির মামলা
  • হাসিনার ছেলে জয় ও মেয়ে পুতুলের ব্যাংক হিসাব জব্দ
  • সেনাবাহিনীর পাশাপাশি বিচারিক ক্ষমতা পেল সশস্ত্র বাহিনী
  • দেশ গঠনে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে: উপদেষ্টা নাহিদ
  • প্রথমবারের মতো ঢাকা সফরে আসছেন সৌদি যুবরাজ
  • বিদেশি পর্যটকদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা হবে
  • সংস্কারের আগে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসবে সরকার
  • মাহমুদউল্লাহকে দলে নেওয়ার ব্যাখ্যা দিলেন নির্বাচক
  • সাকিবের শেষ টেস্ট ভারতে না বাংলাদেশে, যা বলছেন তামিম
  • মাহমুদুর রহমানের জীবনকে বিপন্ন করার চক্রান্ত করা হয়েছে: ফখরুল
  • আজ সোমবার, ১৫ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    বরিশালে ডিলারের বাসা থেকে ওএমএসের চাল উদ্ধার

    আরিফ হোসেন, বরিশাল প্রতিনিধি প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৪ পিএম
    আরিফ হোসেন, বরিশাল প্রতিনিধি প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৪ পিএম

    বরিশালে ডিলারের বাসা থেকে ওএমএসের চাল উদ্ধার

    আরিফ হোসেন, বরিশাল প্রতিনিধি প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৪ পিএম

    বরিশাল নগরীর কাউনিয়া এলাকায় এক ডিলারের বাসা থেকে হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত ওএমএসের চাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত শনিবার রাত ৮ টার দিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মতাসা এলাকার সিকদার বাড়ী হাফেজ জসিম উদ্দিনের বাসা থেকে এ চাল উদ্ধার করা হয়। তবে উদ্ধারের পর স্থানীয় একটি চক্র ও থানা পুলিশের চলে নাটকীয়তা। পুলিশ উদ্ধারকৃত চাল জব্দ না করে স্থানীয় বিএনপির এক নেতার হেফাজতে ১৯ বস্তা চাল দিয়ে যায়। এনিয়ে স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। তবে ডিলারের পরিবারের অভিযোগ স্থানীয় কতিপয় বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে চলা কয়েকজন ব্যক্তি তাদের ফাঁসাতে এমনটি করেছে। ঘটনার পর থেকে ডিলার রাসেল সিকদারের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন তার পরিবার।

    গতকাল রোববার দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিলার রাসেল সিকদারের স্ত্রী সাদিয়া ইসলাম। তিনি বলেন, দোকানের ছাদ থেকে বৃষ্টি পানি ভিতরে প্রবেশ করে চাল নষ্ট হয়ে যায়। এ কারনে চালের বস্তাগুলো জসিম ভাইয়ের বাসায় রাখা হয়। বিষয়টি বিএনপির নাম ভাঙিয়ে চলা কয়েকজন স্থানীয়দের নাম উল্লেখ করে ডিলালের স্ত্রী বলেন লুটপাটের উদ্দেশ্য লোকজন নিয়ে এসে আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। উল্টো আমাদের ফাঁসাতে পুলিশদের সংবাদ দিয়ে ১৯ বস্তা চাল উদ্ধারের নাটক সাজিয়েছে বলেও দাবি করেন তারা। তবে স্থানীয় জনগনের প্রশ্ন সরকারী ওএমএসের চাল জসিমের বাসায় রাখার অনুমতি দিলো কে। তিনি বলেন, স্বামী রাসেল সিকদার ৩ বছর ধরে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় থেকে চাল, আটা কিনে এনে সরকারী মূল্য বিক্রি করছেন। তার বিরুদ্ধে কালোবাজারে বিক্রি করার কোন অভিযোগ আজ পর্যন্ত পায়নি অফিস। রাতেই স্থানীয়রা ট্যাক অফিসার হুমায়ুন কবিরকে ঘটনাটি জানিয়েছে।

    রোববার সকালে ফুট অফিসার আবু সাইদ ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত করে গেছে। স্থানীয় মিলন তালুকদার বলেন, হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত ওএমএসের চাল দোকানে না রেখে কালোবাজারে বিক্রির জন্য রাতের আধারে চাচাতো ভাই জসিম উদ্দিনের বাসায় রাখে ডিলার রাসেল সিকদার। বিষয়টি এলাকাবাসী জানতে পেরে তাদের বাসা ঘেরাও করে পুলিশকে খবর দেয়। পরে তাদের বাসা থেকে ওএমএসের চাল জব্দ করেন পুলিশ। এছাড়া বাবুল হাওলাদার, সোবহান হাওলাদার ও মামুন বলেন, এর আগেও বিভিন্ন সময় ওএমএসের চাল কালোবাজারে বিক্রি করেছেন রাসেল সিকদার। শনিবারও এমনটি করার পায়তারা চালালে এলাকাবাসী জসিম উদ্দিনের বাসা ও তার আশপাশের বিভিন্ন স্থান থেকে ওএমএসের প্রায় ৩৩ বস্তা চাল উদ্ধার করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন।

    উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার শাহারিয়া এন্টার প্রাইজ নামে রাসেল সিকদারকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রির জন্য ১ টন চাল, ১ টন আটা বরাদ্দ দেন। এসব বরাদ্দকৃত চাল তারা ৩০ টাকা কেজি দরে প্রতিদিন পাঁচ কেজি করে চাল দরিদ্রের কাছে বিক্রি করবেন। কিন্তু শনিবার রাতেই জসিম উদ্দিনের বাসা থেকে চাল উদ্ধার করে পুলিশ। রোববার নির্ধারিত দিন বেলা ১১টার দিকে মতাসা বাজারে ডিলার রাসেল সিকদারের বিক্রয়কেন্দ্রে চাল কিনতে আসা দুলাল হোসেন বলেন, আমরা ৫ কেজি চাউল কিনতে আসছি। এখন বাজে ১১টা। দোকানে তালা মারা। কেউ বলছে বলছে চাউল শেষ। অভিযান পরিচালনাকারি কাউনিয়া থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, গত শনিবার স্থানীয় ব্যক্তিদের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে রাসেল সিকদারের চাচাতো ভাই জসিম উদ্দিনের বাসা থেকে ওএমএসের ১৯ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়। পরে ডিলারের দোকানের মালিক কামাল তালুকদারের জিন্মায় তা দিয়ে দেয়া হয়েছে।

    তিনি জানান, ডিলার রাসেল সিকদারের স্ত্রী অভিযোগ করেছেন ১৪ বস্তার মত চাল তারা পচ্ছে না। দোকানের মালিক কামাল তালুকদার বলেন, দোকানের ছাদ থেকে বৃষ্টির পানি পড়ে। এ জন্য চালের বস্তাগুলো বাসায় নিয়ে রেখেছে রাসেল সিকদার। সেখান থেকে স্থানীয়রা ও পুলিশ যে কয় বস্তা চাল উদ্ধার করেছেন তা আমার জিন্মায় দিয়েছেন পুলিশ। সাপানিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হাবিবুর রহমান মুঠফোনে বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ৪/৫ মিনিট ছিলাম। এলাকাবাসী রাসেল সিকদারের বাড়ি থেকে সরকারী চাল উদ্ধার করেছে। পরে পুলিশ চাল আমাকে জিন্মায় নিতে বলেছিল তাদের না করে দিছি। এ বিষয়ে কথা বলতে ডিলার রাসেল সিকদারের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

    উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা আবু সাইদ বলেন, শনিবার রাতে ট্যাক অফিসারের কাছ থেকে জানতে পেরে রোববার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে থানা পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারি চালের বস্তাগুলো ডিলার পয়েন্টেই ছিলো। আমরা ঘটনাস্থানে গিয়ে ডিলার পয়েন্টেই চাল গুলো পেয়েছি। তিনি আরো বলেন, আপনারা বাসা থেকে চাল উদ্ধারের যে বিষয়টি জানিয়েছেন তা আমার জানা ছিলো না। তবে বিষয়টি তদন্ত করে ডিলার যদি অভিযুক্ত প্রমান হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বরাদ্দকৃত নির্ধারিত চাল পাওয়া যায়নি। বিষয়টি কাউনিয়া থানা পুলিশকে অবগত করা হয়েছে। বরিশাল জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস.এম. তাহসিনুল হক বলেন, বিষয় আমরা আবগত রয়েছি।

    অভিযুক্ত ডিলারের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তারা বিকেলের মধ্যে চাল উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আয়েশা আক্তার দিলরুবা জানান, মারধরে ভয়ে হয়তো গা ঢাকা দিয়ে আছেন রাসেল সিকদার। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

    এমআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…