ইসরাইলি বাহিনী শুক্রবার দক্ষিণ লেবাননে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর একটি ওয়াচ টাওয়ারে গুলি চালিয়েছে। এতে দুজন আহত হয়েছেন বলে জাতিসংঘ সূত্র জানিয়েছে। এটি ছিল লেবাননে টানা তৃতীয় দিনের ঘটনা, যেখানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা ইসরাইলি হামলার শিকার হচ্ছেন।
এদিকে লেবাননের সরকার জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে বৈরুতের কেন্দ্রে একটি ইসরাইলি বিমান হামলায় ২২ জন নিহত এবং ১১৭ জন আহত হয়েছে।
হামলার লক্ষ্য ছিলেন হিজবুল্লাহর শীর্ষ কর্মকর্তা ওয়াফিক সাফা। তবে তিনি বেঁচে আছেন বলে নিশ্চিত করেছে তিনটি নিরাপত্তা সূত্র।
এদিকে ইসরাইলের উত্তরে হিজবুল্লাহর হামলায় একজন থাই শ্রমিক নিহত হয়েছেন এবং ইসরাইলি বিমান বাহিনী হিজবুল্লাহ কমান্ডারকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী। হিজবুল্লাহ এখনও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
হিজবুল্লাহ এবং ইসরাইলের মধ্যে সংঘাত এক বছর আগে শুরু হয়, যখন ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীটি গাজা যুদ্ধে হামাসের সমর্থনে ইসরাইলে আক্রমণ করে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এই সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করেছে। যেখানে ইসরাইল বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চল এবং দক্ষিণ লেবাননে হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতাদের হত্যা করেছে।
এদিকে জাতিসংঘ সূত্র জানায়, ইসরাইলি বাহিনী শুক্রবার জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর প্রধান ঘাঁটির কাছে একটি টাওয়ারে গুলি চালায়। আগের দিনও সেখানে একই ধরনের হামলায় দুজন শান্তিরক্ষী আহত হন। ইসরাইলের সামরিক বাহিনী জানায়, তারা জাতিসংঘের বাহিনীকে নিরাপদ স্থানে থাকতে নির্দেশ দিয়েছিল।
এ বিষয়ে হোয়াইট হাউস জানায়, তারা ইসরাইলের এ হামলার বিষয়ে উদ্বিগ্ন এবং ইসরাইলের কাছ থেকে বিস্তারিত জানতে চায়। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিসও সংঘাতের প্রশমন এবং যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।
তবে সব ঘটনা মিলিয়ে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে উত্তেজনা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে ইরানের ১ অক্টোবরের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইলের প্রত্যুত্তর নিয়ে।
এ ঘটনায় ইরানে ‘মারাত্মক’ ও ‘অপ্রত্যাশিত’ প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়ভ গ্যালান্ট।
বুধবার সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘যারা আমাদের আঘাত করবে, তারা তার মূল্য চুকাবে। আমাদের আক্রমণ হবে মারাত্মক, নির্ভুল এবং সবচেয়ে বড় বিষয় যেটা হবে, সেটা হলো- অপ্রত্যাশিত। তারা বুঝতেই পারবে না কী ঘটেছে এবং কিভাবে এটি ঘটেছে’।
অন্যদিকে, হামলা চালালে পালটা জবাবে আইআরজিসির একজন শীর্ষস্থানীয় কমান্ডার ইব্রাহিম জাব্বারি বলেছেন, ইসরাইল যদি ইরানে আক্রমণ করে, তাহলে ইরানও ‘হাজার হাজার ক্ষেপণাস্ত্র’ ছোড়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
আইআরজিসি প্রধান কমান্ডার হোসেন সালামির উপদেষ্টা ইব্রাহিম জাব্বারি বলেন, ‘যেহেতু আমরা ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছি, সেক্ষেত্রে এখন আমরা শত শত বা হাজার হাজার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার জন্য প্রস্তুত আছি। যেগুলো তাদের দখলকৃত অঞ্চলে এবং তাদের নিরাপত্তা, সামরিক এবং অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলোতে আঘাত হানবে‘।
তিনি বলেন, ইসরাইলের ভৌগোলিক আকার ইরানের তুলনায় ছোট। তাই ইরানের প্রতিশোধের ফলাফল নিয়ে তাদের সতর্ক থাকা উচিত। সূত্র: রয়টার্স
এসএফ