এইমাত্র
  • ‘ছদ্মবেশে’ বাজার পরিদর্শনে উপদেষ্টা আসিফ
  • দেশের প্রেক্ষাগৃহে আসছে 'পুষ্পা টু'-'ভুলভুলাইয়া থ্রি'
  • রেদওয়ান রনির সঙ্গে প্রেম করছেন সাদিয়া আয়মান?
  • তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের
  • ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালাবে ইরান
  • যশোর করোনারি কেয়ার ইউনিটে পদ আছে চিকিৎসক-সেবিকা নেই
  • বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথ আউয়াল
  • নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ মিছিল করলেই গ্রেপ্তার: আইজিপি
  • কুমিল্লায় স্বামীকে হত্যা করে সিলিংয়ে ঝুলিয়ে রাখেন স্ত্রী
  • বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে হাসনাত আব্দুল্লাহসহ ৭ ছাত্রনেতা
  • আজ শনিবার, ১১ কার্তিক, ১৪৩১ | ২৬ অক্টোবর, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    যশোর করোনারি কেয়ার ইউনিটে পদ আছে চিকিৎসক-সেবিকা নেই

    বিল্লাল হোসেন, যশোর প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩০ পিএম
    বিল্লাল হোসেন, যশোর প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩০ পিএম

    যশোর করোনারি কেয়ার ইউনিটে পদ আছে চিকিৎসক-সেবিকা নেই

    বিল্লাল হোসেন, যশোর প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩০ পিএম

    যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) হৃদরোগের চিকিৎসা নেই। উন্নত চিকিৎসাসেবার আশায় স্থাপিত প্রতিষ্ঠানটি এখন নিজেই রোগী। তিন বছর আগে ২৮টি পদের অনুমোদন হলেও এখনো জনবল মেলেনি। রোগীর কাছ থেকে আদায়ের টাকা দিয়ে ভাড়াটিয়া কর্মচারী দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। হৃদরোগ পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রপাতিই নষ্ট। হৃদযন্ত্রের প্রয়াজনীয় পরীক্ষার জন্য ছুটতে হচ্ছে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।

    জানা গেছে, ২০০৫ সালে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে করোনারি কেয়ার ইউনিটের তিনতলা ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। ২০০৬ সালের ১২ অক্টোবর নিজস্ব জনবল ছাড়াই উদ্বোধন হয় যশোর করোনারি কেয়ার ইউনিটের। কিন্তু জনবলের বন্ধ ছিলো চিকিৎসা কার্যক্রম। ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হাসপাতাল কতৃপক্ষ ২৪ জন চিকিৎসক ৫৬ জন নার্স ও ১৪৩ জন কর্মচারী নিয়োগের চাহিদাপত্র পাঠায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ে। কিন্তু কয়েক দফায় ইউনিটটি চালুর সময় পিছিয়ে যায়।

    শেষমেষ নানা সংকটের মধ্যে ২০০৯ সালের ১২ জুলাই যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জনবল দিয়েই শুরু হয় চিকিৎসা কার্যক্রম।সেই থেকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে বিভাগটি। ২০২০ সালে ৭৮ জন জনবল চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়। এরমধ্যে চিকিৎসকের পদ ছিলো ২০ টি, সেবিকার পদ ছিলো ৩০ টি ও ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির পদ ছিলো ২৮ টি।

    পরের বছর ৭৮ পদের মধ্যে ২৮ পদের অনুমোদন মেলে। এরমধ্যে ১২ জন চিকিৎসক, ১ জন নার্সিং সুপারভাইজার, ১৩ জন সেবিকা ও ২ জন কার্ডিওগ্রাফার। চিকিৎসকের পদে রয়েছেন কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ১ জন, জুনিয়র কনসালটেন্ট ১ জন, আবাসিক চিকিৎসক ১ জন, সহকারী রেজিস্ট্রার ১ জন, সহকারী সার্জন ও মেডিকেল অফিসার ৬ জন ও ইমাজেন্সি মেডিকেল অফিসার ২ জন।

    এরমধ্যে ১ জন জুনিয়র কনসালটেন্ট ,১ জন সহকারী রেজিস্ট্রার ও ১ জন রেডিওগ্রাফার যোগদান করেছেন। বাকি পদে জনবল সৃষ্টির ব্যাপারে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি বলে হাসপাতালের প্রশাসনিক বিভাগ নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের কার্ডিওলজি কনসালটেন্ট ও মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক চিকিৎসকরা বাড়তি দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু যন্ত্রপাতির অভাবে তারা রোগীদের উন্নত চিকিৎসা প্রদানে ব্যর্থ হচ্ছেন। প্রাথমিক ব্যবস্থাপত্রে সুস্থ না হলে রোগীকে অন্যত্র রেফার্ড করে দিচ্ছেন তারা।

    এদিকে কার্যক্রম চালুর পর পর্যায়ক্রমে ইকোকার্ডিও গ্রাম, ইটিটি, কার্ডিওয়াক মনিটর, কালার ডপলার, ডিজিটাল ইসিজি মেশিন প্রভৃতি বরাদ্দ মেলে। কিন্তু সেগুলো অব্যবহৃত অবস্থায় অকেজো হয়ে গেছে। পরে বরাদ্দ পাওয়া আরও একটি অত্যাধুনিক ইকো মেশিন সচল থাকলেও রোগীদের তেমন জানানো হয়না। ফলে রোগীরা বাইরের ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ছুটছেন।

    সূত্র জানায়, সরকারি এই প্রতিষ্ঠানে ইকো করতে ২০০ টাকা খরচ হলেও বাইরের ক্লিনিকে এই পরীক্ষা করাতে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা ব্যয় হয়। যা দরিদ্র রোগীদের পক্ষে কষ্টকর হয়ে পড়ছে। একইভাবে সরকারি হাসপাতালে ইটিটি করতে ব্যয় হতো ৩০০ টাকা অথচ বাইরে পরীক্ষাটি করাতে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। এ ব্যয় বহন করা সাধারণ রোগীর পক্ষে সম্ভব হয় না।

    সরেজমিনে দেখা গেছে, করোনারি কেয়ার ইউনিটে মোট ২৮ টি শয্যা রয়েছে। এছাড়া বর্হিবিভাগে প্রতিদিন শতাধিক রোগী চিকিৎসার জন্য আসেন। তাদের বেশির ভাগই দরিদ্র মানুষ। কিন্তু ইসিজি ছাড়া হৃদরোগে আক্রান্তদের অন্য কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্তবিভাগ ও বহির্বিভাগের রোগীরা সব পরীক্ষা হাসপাতালের বাইরের ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক থেকে করিয়ে আনতে হয়। এতে করে রোগীদের হয়রানী ও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আবার পরীক্ষায় নিরীক্ষায় গুনতে হচ্ছে বাড়তি পরিমান অর্থ। সিসিইউতে নিয়মিত ইকো করা হলে সরকারি রাজস্ব বাড়বে। আবার রোগীরাও আর্থিক ক্ষতি থেকে রেহাই পাবে।

    ২৮টি বেডে রোগী ভর্তি অনুযায়ী প্রত্যেক রোগীর জন্য একজন চিকিৎসক ও ২ জন সেবিকা থাকার কথা। তবে বাস্তবচিত্র সম্পূর্ণ উল্টো। এখনো পর্যন্ত নিজস্ব জনবল নেই বললেই চলে। যশোর মেডিকেল কলেজ ও যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক সেবিকা ও কর্মচারী দিয়ে হয় সেখানে চিকিৎসা কার্যক্রম। ১২ পদের বিপরীতে মাত্র দুই জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছেন। সূত্র জানায়, এখানে ইটিটি মেশিন, কার্ডিয়াক মনিটর, কালার ডপলার মেশিন বছরের পর বছর অকেজো অবস্থায় ওয়ার্ডের স্টোরে পড়ে রয়েছে।

    খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনারি কেয়ার ইউনিটে কর্মচারী সংকটের কারণে ১৪ জন ভাড়াটিয়া কর্মচারী রাখা হয়েছে। রোগী প্রতি ১শ টাকা ভর্তি ফিস নিয়ে ওই কর্মচারীদের বেতন দেয়া হয়। এসব কর্মচারীদের কারণে হযবরল অবস্থার সৃষ্টি হয়। তারা রোগীদের জিম্মি করেও বাণিজ্য করে।

    যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ জানান, করোনারি কেয়ার ইউনিট নানা সমস্যায় জর্জরিত। নানা সংকটের মধ্যে এখানে রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হয়। কিছু দিন আগে ট্রপোনিন- আই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে।

    এবি

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…