বৃষ্টি হলেই পানি আর শীতের মধ্যে কুয়াশার ঠান্ডা পানি ঘরের টিনের চালার ফাঁক দিয়ে পড়তো শরিলে। আবার তীব্র রৌদ্রময় আবহাওয়ার মধ্যে সূর্যের খরতাপ পড়তো গায়ে ৷ এমনি জরাজীর্ণ নির্জন ঘরে বসবাস করতো দুই অসহায় ধার্মিক বৃদ্ধ দম্পতি। আকাশে মেঘের শব্দ হলে তারা মনে করতো, আজ বৃষ্টির পানি শরিলে পড়বে৷ বৃষ্টি-কুয়াশা পানির মতো তাদের অসহায়ত্বের অশ্রু ভেজা চোখ প্রায় সময় টলমল করতো৷ নীরবে নিভৃতেই সীমাহীন কষ্ট নিয়ে বসবাস করতেন তারা৷
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া ইউনিয়নের কাজিরচর গ্রামের বৃদ্ধ ফজলুর রহমান এমনি কষ্টে বসবাস করে আসছিলেন৷
তিন ছেলের মধ্যে দুইজন প্রতিবন্ধী। পিতা ও ছোট ছেলে মিলে শ্রমজীবীর কাজ করে টেনেটুনে পরিবারের খরচ যোগান দেয়৷ কিন্তু তাদের যা উপার্জন তা দিয়ে তিনবার খাবারের যোগাড় করাই ছিলো কঠিন৷ ঘর মেরামত বা তৈরি ছিলো তাদের পক্ষে দুঃস্বপ্ন।
দীর্ঘদিন পর তাদের দুঃখ কষ্টের অবসান হয়েছে। গ্রামের মাদ্রাসার আলেম ও মসুয়া ইউনিয়ন ইমাম ওলামা পরিষদের সভাপতি মুফতি মো. ইসমাইল এলাকাবাসী থেকে অর্থ সংগ্রহ করে একটি নতুন ঘর তৈরি করতে উদ্যোগী হন৷ স্থানীয় কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, এলাকাবাসী, ইউনিয়ন ওলামা পরিষদের সহায়তায় এক মাসের চেষ্টায় ঘরটি তৈরি করে দেওয়া হয়৷ দোয়া দুরুদের মাধ্যমে নতুন ঘরে ওঠেন বৃদ্ধ দম্পতি।
বৃদ্ধ ফজলুর রহমান বলেন, সবসময়ই আমরা কষ্টের মধ্যে থাকতাম৷ বর্ষায় বৃষ্টির পানি আর শীতের মধ্যে কুয়াশার পানিতে ভিজতে হতো৷ দুঃখের সময়গুলো মনে হলে চোখে পানি চলে আইয়া পরে। এখন একটু শান্তিতে চিন্তামুক্ত ঘুমাতে পারবো৷
মসূয়া ইউনিয়ন ইমাম ওলামা পরিষদের সভাপতি মুফতি মো. ইসমাইল বলেন, এমন জরাজীর্ণ ঘরে মানুষ বসবাস করাই অসম্ভব৷ বাতাসে যে কোন সময় ঘরের চালা পড়ে দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা ছিলো। দুজন বৃদ্ধা পরহেজগার নামাজি মানুষ৷ নামাজ পড়ার মতো দাঁড়ানোর জায়গাটুকু নাই৷ আমি উদ্যোগ নিয়ে গ্রামবাসীর সহায়তায় নতুন ঘর তৈরি করে দিয়েছি তাদের৷
এইচএ