পিরোজপুরে বাস ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে আখি আক্তার (৩৪) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার পিরোজপুর-বরিশাল মহাসড়কের রানীপুর নিমতলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় শিশুসহ ৪ জন আহত হয়। আহতদের পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পরে বরিশাল শেরে-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে বেলা ১২টার দিকে ওই নারীর মৃত্যু হয়। বাকিদের হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।
নিহত আখি আক্তার কাউখালী উপজেলার চিরাপড়া ইউনিয়নের ইমরান হাওলাদারের স্ত্রী। আহতরা হলেন- ইমরান হাওলাদার (২৪) জহুরা বেগম (৬৫), রেশমা বেগম (৩০) ও ফোরকান হাওলাদার (৬০)। তারা সবাই কাউখালি উপজেলার চিরাপড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা। তারা বাগেরহাটের বাধাল বাজার এলাকায় মৃত স্বজনের বাড়িতে গিয়েছিলেন।
পিরোজপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোবহান হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইমাদ পরিবহনের একটি বাস বরিশাল থেকে পিরোজপুরের দিকে যাচ্ছিল। অন্যদিকে যাত্রী নিয়ে একটি ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা বাগেরহাট থেকে পিরোজপুরের কাউখালীতে যাচ্ছিল। এ সময় রানীপুর নিমতলা নামক স্থানে অটোরিকশাটি আরেকটি অটোরিকশাকে পাশ কাটাতে গেলে ইমাদ পরিবহনের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এরপর স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান শেষে বরিশালে পাঠানো হয়, সেখানে নেওয়ার পথে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে।
পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সুমন হালদার বলেন, আহত অবস্থায় ৫ জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদেরকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শুনেছি সেখানে নেওয়ার পথে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
একই দিনে পিরোজপুরে বাস চাপায় দিপ্তী রানী সাহা (৫২) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। ভোর রাতে খুলনায় চিকিৎসাদীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তিনি পিরোজপুর পৌর সভার রাজারহাট এলাকার সঞ্জীব সাহার স্ত্রী। এর আগে বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাতে পিরোজপুরের সদর উপজেলার কদমতলা এলাকায় ওই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতের জামাতা (মেয়ের স্বামী) সুষেন কুমার দত্ত জানান, তার শাশুড়ি ওই রাতে স্থানীয় কদমতলা বাজার সংলগ্ন এলাকায় ধর্মীয় জগদত্রী পূজায় যান। এ সময় রাস্তার পাশ থেকে যাওয়ার সময় পিরোজপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাওয়া ওয়েলকাম পরিবহনের একটি গাড়ি তাকে চাপা দেয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। গাড়িটি তাকে আহত করে তুলে নিয়ে যেতে চাইলে স্থানীয়রা বাসটিকে আটকে তাকে নামিয়ে রাখেন। পরে স্থানীয়রা তাকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেন। সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোর রাতের সাড়ে ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের ছোট ভাই সুজা সাহা বলেন, তার বোন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে গিয়ে বাসটি তাকে চাপা দেয়।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী জহিরুল ইসলাম নামের এক ভ্যানচালক বলেন, ওই নারী রাস্তার পাশ থেকে যাওয়ার সময় বাসটি তাকে চাপা দিয়ে তুলে নিয়ে যাচ্ছিল। বিষয়টি দেখে স্থানীয়রা বাসটিকে আটকে ওই নারীকে নামিয়ে রাখেন।
পিরোজপুর সদর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সোবাহান হোসেন বলেন, এ বিষয়টি শুনেছি। সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে, তবে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখানও কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।