সড়ক দুর্ঘটনা রোধ ও সহজ যাতায়াতের জন্য আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় নির্মাণ করা হয় একটি আন্ডারপাস। নির্মাণের ৪ বছর যেতে না যেতে আন্ডারপাসটি পরিণত হয়েছে ভুতুড়ে গলিতে। ময়লা আর ছিনতাইকারীর দখলে থাকে আন্ডারপাসটি। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এই এলাকায় বসবাস করা পোশাক শ্রমিকসহ হাজার হাজার মানুষকে। সেই সঙ্গে সকালে আন্ডারপাসটি ব্যবসায়ীদের দখলে থাকায় চলাচল এক প্রকার বন্ধ হয়ে যায়।
জানা গেছে, প্রায় ৪ বছর আগে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের আশুলিয়ার বাইপাইলে সড়ক পারাপারের সুবিধার্থে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে অর্ধকোটি টাকায় সেতুর নিচে আন্ডারপাসটি তৈরি করা হয়। প্রায় ২০০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০.২৫ মিটার প্রস্থের আন্ডারপাসটিতে মানুষ এবং রিকশা-ভ্যান-মোটরসাইকেল চলাচলের জন্য আলাদা দুটি লেন করা হয়। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের মানিকগঞ্জ সড়ক বিভাগ কর্তৃপক্ষ আন্ডারপাসটি নির্মাণ করে।
রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আন্ডারপাসটি এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ভেঙে গেছে ছাউনির বিভিন্ন অংশ। বৃষ্টি ছাড়াই জমে থাকে কাদা-পানি, সব সময় থাকে স্যাঁতসেঁতে ভাব। ময়লার স্তূপ থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এই আবর্জনা আর দুর্গন্ধে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে আন্ডারপাসটি। বৈদ্যুতিক বাতিগুলোও দীর্ঘদিন অকেজো। দিনে যেনতেনভাবে পার হওয়া গেলেও রাত হলেই ছিনতাইকারী ও মাদকের আসর বসে এখানে। তাদের কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক পথচারী। সন্ধ্যা হলেই অন্ধকার রাজ্যে পরিণত হয় আন্ডারপাসটি। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে মাদকসেবী-ছিনতাইকারীর সংখ্যা।
একজন পথচারী বলেন, পাশে ময়লা ও প্রস্রাব-পায়খানার দুর্গন্ধের জন্য অনেক সময় এই পথ এড়িয়ে যান। তা ছাড়া সন্ধ্যা হলেই জটলা বেধে মাদক সেবন করতে দেখা যায়। ছিনতাইয়ের ভয়ে আর যাওয়া হয় না।
আমিনুল নামের স্থানীয় বাসিন্দা জানান, গত ৫ বছর এই সড়কে চলাচল করেন। তবে কয়েক বছর আগে আন্ডারপাস হওয়ায় কিছু্টা খুশি হলেও বেশিদিন এটির সুফল পাননি। ক্ষোভ নিয়ে বলেন, অনেকটাই ঝুঁকি নিয়ে সকাল আর সন্ধ্যায় সড়ক পার হতে হয়। আন্ডারপাস হওয়ায় স্বস্তি হলেও অস্বস্তিকর অভিজ্ঞতাও রয়েছে তার। দিনের বেলা পার হতে পারলেও সন্ধ্যায় অন্ধকারে ঝুঁকি নিয়ে পার হন সড়ক।
মানিকগঞ্জ সড়ক বিভাগ এর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী দেবাশীস রায় বলেন,অন্ধকার থাকায় মানুষের চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। অপকর্ম বেড়ে যাচ্ছে। আমরা ইতোমধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছি। যথাসম্ভব দ্রুত আলোর ব্যবস্থা করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হবে। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী একটি মাছের আড়ত থাকায় তাদের ময়লা-আবর্জনায় দুর্গন্ধ ছড়ায়। আমরা তাদের বিষয়টি জানিয়েছি, তারা এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়নি।’
এইচএ