একটা সময় যেখানে লাইন ধরে সেবা নিতে হতো, সেখানে সময়ের ব্যবধানে এখন আর লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না। তবে সুযোগ-সুবিধা বাড়লেও আধুনিকায়নের ছোঁয়ায় কমেছে মিরসরাই উপজেলায় ডাকঘরের গ্রাহক সংখ্যা। আগের মতো ধরতে হয় না লাইন, আশা মাত্রই সেবা নেওয়া যায়। তবুও গ্রাহকের অভাবে কখনো কখনো বসেই সময় কাটাতে হয় কর্মচারীদের।
মিরসরাই পৌসসভায় ৭জন জনবল নিয়ে নিজস্ব ভবনে সেবা দিচ্ছেন উপজেলা ডাকঘর। পর্যাপ্ত জনবল কিংবা ভবন থাকলেও আশানুরূপ মিলছে না গ্রাহক। কর্মকর্তারা বলছেন, দেশ ডিজিটালে রূপ নেয়া আর যোগাযোগ মাধ্যমের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াতে গ্রাহকের সংখ্যা আশানুরূপ নেই।
সেবা নিতে আসা বয়োবৃদ্ধ গ্রাহক আবুল কালাম জানান, বৃটিশ আমল থেকে মানুষ ডাক অফিসের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা হিসেবে চিঠিতে নিজের মনের কথা লিখে আদান-প্রদান করতো। সেসময় যখন কেউ বিদেশে থাকতো তখন দেশের পরিবারের খবর নেয়ার একমাত্র মাধ্যম ছিলো চিঠি। অথচ এখন সবকিছুই সহজ হয়েগেছে মুহূর্তেই মানুষ মনের কথা বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে পাঠাচ্ছে। তাই আগ্রহ নেই ডাকঘরের প্রতি।
আয়েশা খাতুন জানান, আমি স্বামী যখন ঢাকায় চাকরি করতেন তখন এই ডাকের মাধ্যমে আমরা চিঠি পাঠাতাম। একটা চিঠির উত্তরের জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হতো। এখন তো অনেক উন্নত হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে নাকি চিঠি পৌঁছে যায়।
উপজেলা পোস্ট মাস্টার গিয়াস উদ্দিন বলেন, একটা সময় গ্রাহক ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। আমাদের ব্যস্ত সময় পার করতে হতো প্রতিদিন। এখন গ্রাহকের সংখ্যা অনেক কম, এক প্রকার বিলুপ্তির পথে। কারণ বর্তমানে বেড়েছে উন্নত যোগাযোগ সেবা মাধ্যম। আমাদের মূল সেবা হচ্ছে চিঠি আদান-প্রদান। তবে মোবাইল, লেপটপ, কম্পিউটার, মেইল, পেসবুক, টুইটারসহ নানান সামাজিক মাধ্যম বের হওয়াতে এখন আর কেউ চিঠি নিয়ে আসে না, শুধুমাত্র অল্প সংখ্যা সরকারি কাগজপত্র আদান-প্রদান হয়।
তিনি আরও জানান, এছাড়াও আমাদের সঞ্চয়পত্র, মানি অর্ডার, পার্সেল সার্ভিস, ডাকটিকিট বিক্রি, ডাক জীবন বীমা, ডাকযোগে ভূমির পর্চা পরিবহনসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা রয়েছে।
জানাগেছে, পুরো উপজেলায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় আওতাধীন করেরহাট, মহাজনহাট, জোরারগঞ্জ, বরদ্দাসহাট, বিশ্ব দরবার, মিরসরাই, আবুতোরাব স্থায়ী-অস্থায়ী ভবনে অফিস আছে ৭টি। এরমধ্যে ৬টি স্থায়ী নিজস্ব ভবন রয়েছে। এছাড়াও উপ-পোস্ট সেবা আছে ৩২টি।
এইচএ