আনুষ্ঠানিকতা শেষ পর্যায়ে। ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন নিয়ে। বেনাপোল থেকে মাত্র ৩ ঘন্টায় ঢাকা যাওয়া যাবে এই আনন্দে ভাসছে বেনাপোল, নাভারন ও ঝিকরগাছাসহ যশোরবাসী। দীর্ঘদিনের কাঙ্খিত স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে এ অঞ্চলের মানুষের। এক্সপ্রেস ট্রেনটি আগামী পহেলা ডিসেম্বর থেকে বেনাপোল-নড়াইল-ঢাকা রুটে চলাচল করবে। এমন ঘোষণা বেনাপোলে এসে পৌঁছালে খুশিতে মেতে উঠেন বেনাপোলবাসী।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বেনাপোল রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান জানান, মাত্র ৩ ঘন্টা সময় নিয়ে ঢাকার সাথে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন চলবে। বেনাপোলের সাথে ঢাকার দূরত্ব খুব বেশি না। স্বল্প সময়ে ট্রেনে আরামদায়ক ভ্রমণে যাত্রীর সংখ্যা যেমন বাড়বে তেমনি আমদানিকৃত পণ্য এবং স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য কম সময়ে যাবে ঢাকায়। ফলে নানা দিক থেকে উপকৃত হবেন এ অঞ্চলের মানুষ।
তিনি আরো জানান, সকাল ৬টায় ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে বেনাপোল পৌঁছাবে সকাল ৯টায়। একঘন্টা পর সকাল ১০টায় বেনাপোল ছেড়ে দুপুর ১টায় কমলাপুর পৌঁছাব। দুপুর ২টায় পুনরায় কমলাপুর থেকে বেনাপোলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে বিকাল ৫টায় বেনাপোল পৌঁছাবে। ট্রেনটি সন্ধ্যা ৭টায় বেনাপোল থেকে রওনা দিয়ে রাত ১০টায় ঢাকা পৌঁছাবে।
গত জুলাই মাসে বেনাপোল থেকে নড়াইল হয়ে ট্রেনটি ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল। রাজনৈতিক ডামাডোলের কারণে পিছিয়ে যায় উদ্বোধনের দিনক্ষণ। পাসপোর্ট যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে রেল কর্তৃপক্ষ দিনে ২ বেলা ট্রেনটি বেনাপোল-ঢাকার সাথে পদ্মাসেতু হয়ে চলাচলের ব্যবস্থা নেয়। এদিকে ২ বেলা ট্রেন চলাচলের খবরে মাথায় হাত দিয়েছে পরিবহন ব্যবসায়ীরা। যাত্রী কমে যাবার আশঙ্কায় ঢাকার বিকল্প রুটের চিন্তা করছেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে যশোর উন্নয়ন পরিষদের ব্যানারে যাত্রী কল্যাণ সংগঠনের লোকজন ইতিমধ্যে যশোর রেল স্টেশনে কয়েক দফা বিক্ষোভ করেছে। সংগঠনের নেতাদের দাবি, যশোরবাসীকে রেল পরিষেবার বাইরে রেখে ১৫ কিলোমিটার দূরে পদ্মবিলা নামক স্থানে করা হয়েেছ রেল স্টেশন। ঢাকা যেতে হলে যশোরের লোকজনকে পদ্মবিলা স্টেশনে যেতে হবে। যশোর রেল বাস্তবায়ন কমিটির নেতা ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, যশোর ব্রিটিশ আমলের পুরাতন জেলা শহর।
বেনাপোল বৃহত্তম স্থল বন্দর ছাড়াও যশোর সেনানিবাস, এমএম কলেজ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও যশোরে রয়েছে সবচেয়ে বড় মটর ও মটর সাইকেল পার্টসের ব্যবসা। প্রতিদিন কয়েক হাজার যাত্রী যশোর থেকে ঢাকায় যাতায়াত করেন। বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কথা মাথায় রেখে যশোরের সাথে আরও দুটি ট্রেন যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে। বেনাপোলের পাশাপাশি চুয়াডাঙ্গা বা দর্শনার সাথে একটি ট্রেন চালু করলে যশোরের যাত্রীসহ গেদে বর্ডার হয়ে ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রী ও ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর ও কালিগঞ্জ এলাকার যাত্রীরা উপকৃত হবেন।