বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। বৃহস্পতিবার মিশরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে এক বৈঠকে এই আমন্ত্রণ জানান শাহবাজ।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের আলোচনা
বৈঠকে ব্যবসা-বাণিজ্য, খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ঢাকা-ইসলামাবাদের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে দুই নেতা একমত হন। এছাড়া, চিনি শিল্প ও ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনার মতো নতুন ক্ষেত্রগুলোতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা করেন তারা।
বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালিত চিনিকলগুলোকে উন্নতভাবে পরিচালনার জন্য পাকিস্তান প্রযুক্তিগত সহায়তার প্রস্তাব দেয়। একইসঙ্গে, ডেঙ্গু প্রতিরোধে পাকিস্তানের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার আগ্রহ প্রকাশ করে শাহবাজ শরিফ।
অমীমাংসিত বিষয় নিয়ে আলোচনা
১৯৭১ সালের অমীমাংসিত ইস্যুগুলো নিষ্পত্তির আহ্বান জানান ড. ইউনূস। জবাবে শাহবাজ শরিফ বলেন, “১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে অনেক ইস্যু মীমাংসা হয়েছে। তবে নতুন কোনো অমীমাংসিত বিষয় থাকলে তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।” ড. ইউনূস ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বিষয়গুলো চিরতরে সমাধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
আঞ্চলিক সহযোগিতা ও কৌশলগত সম্পর্কের আহ্বান
বৈঠকে সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করার আহ্বান জানান দুই নেতা। শাহবাজ বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক গড়তে আমরা আগ্রহী। আমাদের এই ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদার করার অপেক্ষায় আছি।”
দুই দেশের সম্পর্কের উষ্ণতা
দেড় দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের শীতল সম্পর্কের অবসানের সম্ভাবনা দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর দুই দেশ সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
বৈঠকের এক পর্যায়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারকে ফেব্রুয়ারিতে মালয়েশিয়া সফরের পথে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান ড. ইউনূসের বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। শাহবাজ শরিফও ড. ইউনূসকে সুবিধামতো সময়ে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানান।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বৈঠক দুই দেশের সম্পর্ক উষ্ণায়নের পথ খুলে দিতে পারে।
এসএফ