এইমাত্র
  • দীপ্ত টিভির তামিম হত্যার ঘটনায় অন্যতম আসামি গ্রেফতার
  • চলতি মাসেই বিশ্বব্যাংক-এডিবি থেকে ১১০০ মিলিয়ন ডলার পাবে বাংলাদেশ
  • আমার ঘর চাই না, দু'মু‌ঠো খাবার চাই
  • হামাসের সঙ্গে সংঘর্ষে ৩৫ ইসরাইলি সেনা নিহত, আহত শতাধিক
  • ২১ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২৪ হাজার কোটি টাকার বেশি
  • সংস্কারের রূপরেখা বহু আগেই দিয়েছিল বিএনপি: মির্জা ফখরুল
  • কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়ে সারজিসের আশ্বাসে সড়ক ছাড়লেন চিকিৎসকরা
  • গাজীপুরে কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে, নিহত ১
  • রাশিয়ার গভীরে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা, নতুন গ্রাম দখলের দাবি মস্কোর
  • সৌদি আরবে ২০ হাজারের বেশি অবৈধ প্রবাসী গ্রেফতার
  • আজ রবিবার, ৮ পৌষ, ১৪৩১ | ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    স্বপ্নের সেতু আটকে আছে ফাইলে

    আরেফিন লিমন, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০৩ পিএম
    আরেফিন লিমন, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০৩ পিএম

    স্বপ্নের সেতু আটকে আছে ফাইলে

    আরেফিন লিমন, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০৩ পিএম

    পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার রামনাবাদ নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের স্বপ্ন যেন শুধুই স্বপ্ন হয়েই রয়ে গেছে। দুই বছর আগে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় প্রকল্প অনুমোদিত হলেও এখনো পর্যন্ত এর কাজ শুরু হয়নি।

    কাগজে-কলমে আটকে থাকা এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছেন লক্ষাধিক মানুষ। অথচ প্রকল্প অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে কাজ শুরু হয়ে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি শেষ হওয়ার কথা ছিল।

    দক্ষিণাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এই নদীর ওপর সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। ব্রিজ না থাকায় প্রতিদিন নৌকা ও ভাঙাচোরা ফেরিতে ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার করতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। যাতায়াতে সময় ও অর্থের অপচয়ের পাশাপাশি রোগী, বয়স্ক ও শিক্ষার্থীদের জন্য এই পারাপার অত্যন্ত কষ্টকর। বিশেষত বর্ষাকালে ভোগান্তি চরমে পৌঁছে।

    সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের প্রস্তাবিত প্রকল্পটি ২০২২ সালে একনেক অনুমোদন দেয়। প্রথমে এর ব্যয় ২০৪.৩৬ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হলেও পরবর্তীতে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫২১.২৫ কোটি টাকায়। দুই লেন বিশিষ্ট ৮৮২.৮১ মিটার দীর্ঘ এবং ১০.২৫ মিটার প্রশস্ত এই পিসি গার্ডার সেতুটি নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে কাজ শুরুর কথা থাকলেও আট মাস পেরিয়ে গেলেও কার্যক্রম শুরু হয়নি। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা হতাশা প্রকাশ করেছেন।

    গাড়িচালক মো. রনি বলেন, "গত ৩০ বছর ধরে শুনে আসছি সেতু হবে। কিন্তু কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে হয়।"

    এক শিক্ষার্থী জানান, "স্কুলে যেতে নৌকায় অনেক সময় লাগে। বৃষ্টি হলে পুরো দিনই মিস হয়ে যায়। ব্রিজ হলে আমাদের অনেক সুবিধা হতো।"

    পঞ্চাশোর্ধ্ব এক ব্যক্তি বলেন, "১৯৯৬ সাল থেকে ব্রিজের কথা শুনছি। প্রতিবারই বলা হয় কাজ শুরু হবে, কিন্তু বাস্তবে কিছুই হচ্ছে না। আমরা চাই দ্রুত কাজ শুরু করে আমাদের ভোগান্তি কমানো হোক।"

    সাবেক সেনা সদস্য বলেন, "ব্রিজ হবে শুনে আসছি বহু বছর। জীবিত অবস্থায় এটি দেখে যেতে পারব কি না জানি না।"

    স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা এবং গণ অধিকার পরিষদের গলাচিপা শাখার আহ্বায়ক বলেন, "সেতুটি নির্মাণ হলে রামনাবাদ নদীর দুই তীরের মানুষের জীবন বদলে যাবে।"

    জামায়াতে ইসলামির সদস্য অধ্যাপক ইয়াহিয়া খান বলেন, "ব্রিজ নির্মিত হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নও ঘটবে।"

    গলাচিপা বিএনপির উপজেলা শাখার সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, "ব্রিজটি লাখ লাখ মানুষের প্রাণের দাবি। কাজেই এটি জরুরিভিত্তিতে নির্মাণ হওয়া প্রয়োজন।"

    উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, "প্রকল্পটি অনুমোদিত হলেও কাজ শুরুর নির্দিষ্ট তারিখ বলা সম্ভব নয়।" তবে তিনি নদী পাড়াপাড়ে মানুষের নানা ভোগান্তির স্বীকার করেন। স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবি বিবেচনায় দ্রুত প্রকল্পের কাজ শুরু হবে বলে আশা করেন।

    সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়ার কাজ চলছে। অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই নির্মাণকাজ শুরু হবে।"

    সচেতন নাগরিকরা মনে করছেন, সেতুটি নির্মিত হলে পটুয়াখালীর সদর, বাউফল, দশমিনা, গলাচিপা, রাঙ্গাবালী ও আমতলী উপজেলার মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। বরিশাল বিভাগের এই অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলে অর্থনৈতিক প্রবাহেও গতি আসবে। ভোগান্তি কমবে তিন উপজেলার প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষের। সেতুটি কবে বাস্তবে রূপ নেবে, তা এখনো অনিশ্চিত। ফাইলবন্দি এই প্রকল্প কবে বাস্তবায়িত হবে, তা জানতে অধীর অপেক্ষায় রয়েছেন স্থানীয়রা। সরকারের দ্রুত পদক্ষেপই স্থানীয়দের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন পূরণের একমাত্র আশা।

    এইচএ

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…