দেশে গত সাড়ে পাঁচ মাসে ৪০টি মাজার ও তার সাথে সম্পর্কিত ৪৪টি স্থাপনা ভাঙচুর ও হামলার তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
আজ শনিবার (১৮ জানুয়ারি) মাজার ও দরগাহে হামলার ঘটনায় পুলিশের প্রতিবেদনের বিষয়ে এই তথ্য জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর।
দপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশ পুলিশ ৪ আগস্ট ২০২৪ থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ৪০টি মাজার (সুফি সমাধিক্ষেত্র/দরগাহ) ও তার সাথে সম্পর্কিত ৪৪টি ভাঙচুর ও হামলার ঘটনা রিপোর্ট পেয়েছে।'”
এই ঘটনার মধ্যে মাজার ও ভক্তদের ওপর হামলা, মাজারের সম্পত্তি লুট, অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে সেখানে বলা আছে।
পুলিশ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি হামলার ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এই বিভাগে ১৭টি মাজার বা মাজার সর্ম্পকিত হামলার তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
এরপর চট্টগ্রাম বিভাগে ১০টি এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৭টি হামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহ বিভাগের শেরপুর জেলায় একটি মাজারে এককভাবে ৪টি হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এ পর্যন্ত ৪৪টি হামলার ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে।
এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে বা পুলিশের পক্ষ থেকে স্বঃপ্রণোদিত হয়ে বিভিন্ন থানায় ১৫টি নিয়মিত মামলা এবং ২৯টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করা হয়েছে।'
আর এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িত মোট ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি নিয়মিত মামলায় ইতোমধ্যে অভিযোগপত্র আদালতে দেওয়া হয়েছে। বাকি মামলা এবং জিডির তদন্ত চলছে।
মাজার ও দরগাহগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সব ধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের সবাইকে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়েরের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় বলছে, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মাজার ও দরগাহে যেকোনো হামলার ঘটনায় ‘শূন্য সহিষ্ণুতা’ নীতিতে অটল রয়েছে। পুলিশকে প্রতিটি ঘটনা কঠোরভাবে তদন্ত করার এবং জড়িত সকল ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মাজার ও দরগাহের নিরাপত্তার বিষয়ে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।”
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর বিভিন্ন জায়গায় মাজারে হামলা-ভাঙচুরের একাধিক ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে তখনও সরকারের পক্ষ থেকে এসব বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। পরের কয়েক মাসে তা কমে আসে।
এর মধ্যে গত ৮ জানুয়ারি ময়মনসিংহ শহরে শাহ সুফি সৈয়দ কালু শাহর মাজারে হামলা চালিয়ে মাহফিল, দোয়া ও সামা কাওয়ালি অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর গভীর রাতে কয়েকশ মাদ্রাসাছাত্র হামলা চালিয়ে ২০০ বছরের পুরনো মাজারটির একটি অংশ ভেঙে ফেলে।
পরদিন কোনো গানের আসর কিংবা মাজারে হামলা হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নেওয়ার কথা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
এবি