জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, 'আমরা বলেছি ৫ই আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ এবং জুলাই ঘোষণাপত্র হতেই হবে। এর কোন বিকল্প আমরা দেখতে চাই না। আমরা আশা করব ৫ই আগস্টের মধ্যে অন্তবর্তী সরকার এবং সকল রাজনৈতিক দল জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে পারবে। যে আকাঙ্ক্ষিত গণঅভ্যুত্থানের এক বছর আমরা সকলে একসাথে উদযাপন করতে পারবো।'
তিনি বলেন, '৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের পরে রাজনৈতিক দলগুলো বাংলাদেশের জনগণের সাথে, ছাত্রদের সাথে প্রতারণা করেছিল। তারা রূপরেখা তৈরি করেছিল, তা কোন দল মানে নাই। ফলে আমরা এবারো কোন প্রতারণার সুযোগ দিব না।'
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যায় গাজীপুর শহরে রাজবাড়ী রোডে গাজীপুর জেলা ও মহানগর জাতীয় নাগরিক পার্টি আয়োজিত "দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা" অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, 'এই গাজীপুরের টঙ্গীতে আমাদের মাদ্রাসার ছাত্ররা, আলেম সমাজ গণঅভ্যুত্থানে প্রতিরোধ তৈরি করেছিল। আমরা সেই সকল আলেম ভাইদের মাদ্রাসা ছাত্রদের লাল সালাম জানাই। তাদের এই অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা ফ্যাসিসকে বিতাড়িত করতে পেরেছিলাম। আমরা গাজীপুরে এসেছি। গাজীপুরের সমস্যা নিয়ে কথা বলতে চাই। জাতীয় নাগরিক পার্টি গণঅভ্যুত্থানের পরে একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে, একটা নতুন গাজীপুরের স্বপ্ন দেখে। গাজীপুরকে জাতীয় নাগরিক পার্টি এবং গণঅভ্যর্থনে অন্যতম দুর্গ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই।'
তিনি আরো বলেন, 'গাজীপুরের এ লড়াই আজকের নয়, মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে এর আগের বিভিন্ন আন্দোলনে বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ে গাজীপুরের সাহসী সন্তানেরা লড়াই করেছে সব সময়। কিন্তু আমরা কখনো খোঁজ নেই নাই গাজীপুরের নাগরিক ও শ্রমিকেরা কিভাবে জীবন যাপন করে। গাজীপুর নগরীকে সিটি কর্পোরেশন করা হলেও অপরিকল্পিত নগর হিসেবে রেখে দেয়া হয়েছে। এই আওয়ামী লীগের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুরে লুটপাট করেছে, দুর্নীতি করেছে, সন্ত্রাস কায়েম করেছে। আমরা গণঅভ্যুত্থানের সময় মেয়র জাহাঙ্গীরকে প্রতিরোধ করেছিলাম। এই সন্ত্রাসীকে আমরা গাজীপুরের ঢুকতে দেইনি, গাজীপুর থেকে বিতাড়িত করেছি। দুঃখের বিষয়, গাজীপুরে এখনো স্বৈরাচারের দোসরেরা বিভিন্ন জায়গায় রয়ে গেছে। এই সকল স্বৈরাচারীর দোসর ও সন্ত্রাসীদের বিতাড়িত করবো।'
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এনসিপি'র দক্ষিণ অঞ্চলের মূখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, উত্তর অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, উত্তর অঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আলী নাসের খান, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা সহ স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
নাহিদ ইসলাম বলেছেন, 'গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের নামে প্রচুর জমি দখল করা হয়। মেয়র জাহাঙ্গীর এই জমি দখলের অন্যতম কারিগর ছিল। আমরা চাই সাধারণ মানুষকে তাদের জমির অধিকারী ফিরিয়ে দিতে। গাজীপুরে বাংলাদেশের অন্যতম শিল্প অঞ্চল। গাজীপুরের শ্রমিকদের মধ্যে আমরা কিছুদিন পরপর অসন্তোষ দেখি। কারণ তারা ন্যায্য মজুরি পায় না। এই সমস্ত শ্রমিকরা কিন্তু গণঅভ্যুত্থানে আমাদের সাথে এসে দাঁড়িয়েছিল। আমরা সেই সকল শ্রমিক ভাইদের জন্য কাজ করে যেতে চাই।'
এনআই