বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) কম্বাইন্ড (বি.এসসি ইন ভেটেরিনারি সায়েন্স অ্যান্ড অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি) ডিগ্রির দাবিতে টানা ১৫ দিনের মতো ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করছেন পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন শুরুর পর থেকেই ওই অনুষদের ডিন অফিস ও প্রধান দুটি গেটে তালা দেওয়ায় প্রশাসনিক কার্যক্রম অচল হয়ে পড়েছে।
সোমবার (১১ আগস্ট) দুপুরে ওই অনুষদের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীরাও যোগ দিয়ে কম্বাইন্ড ডিগ্রির রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। নির্দিষ্ট সময়ে তা ঘোষণা না করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ও ফার্মসমূহে অনির্দিষ্টকালের জন্য তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা। এছাড়া এই দাবিতে প্রশাসনের উদাসীনতা লক্ষ্য করা গেলে আরও কঠোর হওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আজ সোমবার ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে কম্বাইন্ড ডিগ্রির আন্দোলনের সাথে একাত্মতায় পশুপালন অনুষদের নবীন শিক্ষার্থীরাও ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনে অংশ নিতে দেখা গেছে। এসময় অনুষদের সিনিয়র শিক্ষার্থীরা ফুল দিয়ে তাদের বরণ করে নেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই অনুষদের নবীন এক শিক্ষার্থী জানান, ‘আমরা পশুপালন অনুষদের ৬১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বিশ্ব চাকরির বাজারের চাহিদার প্রেক্ষিতে স্বেচ্ছায় আন্দোলনে যোগ দিয়েছি। ক্লাস বর্জন করেছি। কম্বাইন্ড ডিগ্রির মাধ্যমে দেশে থেকে বৈষম্য দূর না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
এ বিষয়ে পশুপালন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন জানান, ‘শিক্ষার্থীদের বারবার শ্রেণিকক্ষে ফেরার জন্য বলা হচ্ছে। আমাদের সাথে তাদের সমস্যা নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছি, কিন্তু তারা তা শুনছে না।’
সেশনজটের শঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘তারা আন্দোলন করে যদি সেমিস্টার দীর্ঘ করে, তাতে আমাদের কিছু করার নেই।’
ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমান জানান, ‘কম্বাইন্ড ডিগ্রির বিষয়ে অনুষদের শিক্ষকদের মতামত নেওয়া হয়েছে। বর্তমান দেশের চাকরির বাজার এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সরকারি পরিপত্রের চাহিদা বিবেচনা করে এই ডিগ্রির পক্ষে সবাই একমত হয়েছেন। একজন খামারি যদি একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে দুই ধরনের সেবা পান, তাহলে সে দুইজন ব্যক্তিকে মোটা অঙ্কের বেতন দিয়ে রাখবে কেন? দেশ এবং প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের স্বার্থে কম্বাইন্ড ডিগ্রি প্রয়োজন।’
এসআর