এইমাত্র
  • সেভেন সিস্টার্সকে ভারত থেকে আলাদা করে দেবো: হাসনাত
  • দিল্লিতে ২৭টি সিগারেট খাওয়ার সমান ক্ষতি হবে মেসির ফুসফুুসে!
  • গালফ প্রো কার চ্যাম্পিয়ন হলেন অভিক আনোয়ার
  • সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে
  • নেপালকে হারিয়ে সেমির পথে বাংলাদেশ
  • বিএনপির প্রার্থী পুনঃবিবেচনার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
  • পিএসএলের কারণে পিছোতে পারে পাকিস্তানের বাংলাদেশ সফর
  • ৩০ বছর পর রোগীর পেট থেকে বের হলো লাইটার
  • বার্সেলোনাকে কিনতে ১০ বিলিয়ন ইউরো’র প্রস্তাব সৌদি যুবরাজের
  • বিজয় দিবসে যেসব সড়ক এড়িয়ে চলতে বলেছে ডিএমপি
  • আজ সোমবার, ১ পৌষ, ১৪৩২ | ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    চাটমোহরের মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ, অর্ধকোটি টাকার লেনদেন!

    আব্দুল লতিফ রঞ্জু, পাবনা প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৫২ পিএম
    আব্দুল লতিফ রঞ্জু, পাবনা প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৫২ পিএম

    চাটমোহরের মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ, অর্ধকোটি টাকার লেনদেন!

    আব্দুল লতিফ রঞ্জু, পাবনা প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৫২ পিএম

    পাবনার চাটমোহর উপজেলার জগতলা সিদ্দিকীয়া দ্বি-মুখী দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগ কার্যক্রমে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। মাদ্রাসার সভাপতি বুলবুল আহমেদ ও সুপার আবুল হোসেন যোগসাজশে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে প্রায় অর্ধকোটি টাকার বিনিময়ে নিজেদের আত্মীয়-স্বজনকে নিয়োগ দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন একজন চাকুরী প্রার্থী।

    তাদের নিয়োগের সুপারিশ বাতিল করে পুনরায় নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর পদের প্রার্থী রাকিবুল ইসলাম।

    লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর তারিখে চারটি পদে পুন:নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পদগুলো হলো, একজন অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর, একজন ল্যাব সহকারি, একজন নিরাপত্তা কর্মী ও একজন আয়া। তার মধ্যে অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে আবেদন করেন ভুক্তভোগী জগতলা গ্রামের মৃত আবুল মাসুদের ছেলে রাকিবুল ইসলাম। প্রথম দফায় গত ৮ নভেম্বর পরীক্ষার জন্য প্রবেশপত্র পান তিনি। যথারীতি মাদ্রাসায় উপস্থিত হলেও সেদিন সভাপতি বা সুপার কেউ মাদ্রাসায় উপস্থিত ছিলেন না। পরে তিনি জানতে পারেন পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

    এরপর দ্বিতীয় দফায় ১২ ডিসেম্বর পরীক্ষার জন্য প্রবেশপত্র পান এবং যথারীতি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন রাকিবুল ইসলাম। কিন্তু পরে খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন সভাপতি বুলবুল আহমেদ তার আপন ফুপাতো ভাই তারেক মাহমুদ ও আপন চাচাতো বোন রাবেয়া খাতুনকে নিয়োগ দিতে আগে থেকেই সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে রেখেছেন। আগের রাতেই তাদের প্রশ্ন সরবরাহ করে লোক দেখানো নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে।

    অভিযোগ, মাদ্রাসার সভাপতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক বুলবুল আহমেদ ও অত্র মাদ্রাসার সুপার আবুল হোসেন নিজেরা যোগসাজস করে অর্ধকোটি টাকার বাণিজ্য করে চারটি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছেন। সভাপতি বুলবুল আহমেদ তার আপন ফুপাতো ভাই তারেক মাহমুদ কে অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে এবং আপন চাচাতো বোন রাবেয়া খাতুনকে আয়া পদে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ দেখিয়ে নিয়োগে সুপারিশ করেছেন।

    অন্যদিকে সুপার আবুল হোসেন মোটা অংকের টাকায় তার পরিচিত আলমগীর হোসেন নামের একজনকে ল্যাব সহকারি পদে এবং স্থানীয় ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা ও সাবেক মেম্বার আনোয়ার হোসেনের ভাতিজা নয়ন হোসেনকে নিরাপত্তা কর্মী পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে।

    লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী রাকিবুল ইসলামের দাবি, নিয়ম অনুযায়ী সভাপতির নিকট আত্মীয় প্রার্থী থাকলে তিনি নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি থাকতে পারবেন না। অথচ মাদ্রাসার সভাপতি বুলবুল আহমেদ তার আপন ফুপাতো ভাই ও চাচাতো বোনকে নিয়োগ দিতে নিজেই নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি হন। অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে তারেক মাহমুদ নির্ধারিত সময়ে আবেদন না করলেও সভাপতি ও সুপার পরে আবেদন দেখিয়ে এবং ভুয়া ব্যাংক ড্রাফট এর মাধ্যমে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়েছেন। এসব অনিয়ম দুর্নীতি তদন্ত করে নিয়োগের সুপারিশ বাতিল করে পুনরায় নিয়োগ পরীক্ষার দাবি জানান ভুক্তভোগী রাকিবুল ইসলাম।

    এ বিষয়ে মাদ্রাসার সুপার আবুল হোসেন বলেন, 'যারা নিয়োগে হতে পারে না, তারা এমন অভিযোগ করে। অভিযোগ যে কেউ দিতেই পারে। কিন্তু সেটা তো যাচাই বাছাই করতে হবে কোনটা সত্য, কোনটা মিথ্যা। টাকার লেনদেন কারো সাথে হয়নি। আমি এসবের সাথে জড়িত নই।'

    মাদ্রাসার সভাপতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক বুলবুল আহমেদ বলেন, 'নিয়োগ পরীক্ষা নিয়েছেন ঢাকা থেকে আসা ডিডি'র প্রতিনিধি, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সহ তাদের নির্ধারিত আরো দু'জন। এখানে আমাদের কোনো হাত ছিল না। আর ফুপাতো ভাই ও চাচাতো বোন নিয়োগ পেলেও তাদের সাথে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তার ভিত্তি নেই।'

    চাটমোহর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শফিউল ইসলাম বলেন, ‘নিয়োগের আগে যাছাই বাছাই মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তারাই করেছে। তাদের মধ্যে কারো কেউ আত্মীয় স্বজন আছে কি না সেটা আমার জানা নাই। পরীক্ষা শেষে ফলাফল দেয়া হয়েছে। এর বাইরে আমি কিছু জানি না।’

    চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, 'লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। যাচাই বাছাই সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।'

    পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মনিরুজ্জামান বলেন, ওখানে নিয়োগের বিষয়ে আমাদের নিকট একটি অভিযোগ এসেছে। সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে নির্দেশ প্রদান করা হচ্ছে।

    এসআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…