চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় আলু ও পেঁয়াজের পর এবার রসুন চাষেও লোকসান গুনতে হচ্ছে চাষিদের। এ উপজেলার চাষিরা এখন জমি থেকে রসুন তোলা, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। কিন্তু আশানুরূপ দামে রসুন বিক্রি করতে না পেরে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে চাষিরা। গত বছরে দাম ভালো পাওয়ায় এ এলাকায় এবার উল্লেখযোগ্য হারে রসুনের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। অধিক লাভের আশায় রসুন চাষ করে উৎপাদন খরচ তো উঠছেই না বরং গুনতে হচ্ছে লোকসান।
স্থানীয় ফসলি জমি ঘুরে দেখা গেছে, গত বছরের তুলনায় এবার রসুনের চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে ফসলি জমি থেকে রসুন উত্তোলনে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। কিন্তু ফলন ভালো হলেও ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কৃষকের কপালে।
উপজেলার সন্তোষপুর গ্রামের জাহিরুল ইসলাম বলেন, ২ বিঘা জমিতে এবার বারি-৩ জাতের রসুন চাষ করেছিলাম। রসুনের বীজ ক্রয়, শ্রমিক খরচ, সার ও কীটনাশক ক্রয় করে বিঘা প্রতি ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। দু' বিঘা জমিতে আনুমানিক ৬০ মণ রসুন হয়েছে। ধাপেধাপে প্রতি কেজি রসুন ৪০ থেকে ৬০ টাকা করে বিক্রি করতে পেরেছি। উৎপাদন খরচ ও জমি লিজের টাকা বাদ দিয়ে অনেক লোকসান হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আলু ও পেঁয়াজ চাষে ব্যাপক লোকসানের মধ্যে পড়ে রসুনে চাষে কিছুটা পুষিয়ে যাবে মনে করেছিলাম। কিন্তু বর্তমান বাজারমূল্য হিসাব করে রসুন চাষ করেও লোকসান গুনতে হচ্ছে।
উথলী গ্রামের সোহেল আহম্মেদ প্রদীপ বলেন, পার্শ্ববর্তী চাষিদের পরামর্শে ৫ বিঘা জমিতে রসুন চাষ করেছি। কিন্তু রসুনের চারার মূল্য সার কীটনাশক ও শ্রমিক খরচ বেড়ে যাওয়ার কারনে উৎপাদন খরচ অনেক বেশি হয়ে গেছে। বর্তমান রসুনের যে বাজার মূল্য এতে করে অনেক টাকা লোকসান হবে।
একই গ্রামের আকরাম হোসেন সন্টু বলেন, রসুন উৎপাদনে যে খরচ হয়েছে এতে করে সর্বনিম্ন একশো টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে না পারলে খরচ উঠবে না। কিন্তু বর্তমান বাজারমূল্য প্রতিকেজি ৫০-৬০ টাকা।
জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, এবার জীবননগর উপজেলায় ৮০ হেক্টর জমিতে রসুন চাষ হয়েছে। ইতোমধ্যে আনুমানিক ৪০ হেক্টর জমি থেকে রসুন উত্তোলন করা হয়েছে। প্রথমদিকে দাম কম ছিলো। যারা আগাম চাষ করে উত্তোলন করেছে তারা কিছুটা লোকসানের মধ্যে পড়েছে। ঈদের পরে রসুনের দাম আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রসুন মজুদ করে কিছুদিন রেখে বিক্রি করতে পারলে লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এইচএ