এইমাত্র
  • চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল
  • দেশের ৭ বিভাগে বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা
  • পিলখানার সামনে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের অবস্থান
  • দিনাজপুরে বইছে মৃদু তাপপ্রবাহ
  • আজ থেকে আমি জয় বাংলা বলব: কাদের সিদ্দিকী
  • মার্কিন শুল্কারোপ রফতানিতে বড় প্রভাব ফেলবে না: অর্থ উপদেষ্টা
  • মালয়েশিয়ায় ভয়াবহ আগুনে দগ্ধ বাংলাদেশি শ্রমিক
  • বেনাপোল-শার্শা সীমান্তে মাদকসহ ভারতীয় পণ্য জব্দ, আটক ১
  • বাউফলে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার
  • শায়েস্তাগঞ্জে যুবলীগ কর্মী সালাহ উদ্দিন গ্রেপ্তার
  • আজ রবিবার, ২৩ চৈত্র, ১৪৩১ | ৬ এপ্রিল, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    বান্দরবানে রাবার ফ্যাক্টরি স্থাপনে, তিন হাজার শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশংকা

    ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২৫, ১২:০২ এএম
    ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২৫, ১২:০২ এএম

    বান্দরবানে রাবার ফ্যাক্টরি স্থাপনে, তিন হাজার শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশংকা

    ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২৫, ১২:০২ এএম

    পার্বত্য বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে অবস্থিত কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। দীর্ঘ তিন দশক ধরে সবুজ প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে কাজ করছে প্রতিষ্ঠান টি। বিবর্ণ পাহাড়ি এলাকাটিকে পরিকল্পিতভাবে স্বাস্থ্যকর ও প্রকৃতিবান্ধব এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে ভূমিকা রেখেছে। অনগ্রসর এই এলাকায় অসহায় ও বঞ্চিত শিশু-কিশোরদের লেখাপড়ার জন্য স্থাপন করেছে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ। আবাসিক এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছে প্রায় তিন হাজারের বেশি শিক্ষার্থী। কিন্তু লামার স্বনামধন্য এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে এবং ওই এলাকার সুপেয় পানির উৎস আন্ধারি খালের উৎপত্তিস্থলে রাবার প্রসেসিং ফ্যাক্টরি স্থাপনের উদ্যেগ ঘিরে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক।

    লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এরই মধ্যে লামার সরই ইউনিয়নের গোধূলি এলাকায় প্রস্তাবিত রাবার প্রসেসিং ফ্যাক্টরি নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু করে যেখানে রাবার ফ্যাক্টরি নির্মাণের করা হবে তার পাশেই রয়েছে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের আবাসিক ক্যাম্পাস ও স্থাপনা। এ ফ্যাক্টরি স্থাপনের মধ্যে দিয়ে রাবার প্রসেসিংয়ের কাজ শুরু হয়ে গেলে এর বর্জ্য সেখানকার পরিবেশকে দূষিত করে তুলবে। চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়াবে এবং শব্দ দূষণ হবে। এতে স্কুলটির তিন হাজার কোমলমতি শিক্ষার্থী স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে পড়বে। পাহাড়ের স্নিগ্ধ পরিবেশে লেখাপড়াসহ শারীরিক- মানসিক সুস্থতা নিয়ে তারা যেভাবে বেড়ে উঠছিল, সেটি বাধাগ্রস্ত হবে। তাদের লেখাপড়া খেলাধুলা ও দৈনন্দিন জীবনযাপনে পরিবেশগত একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সাফল্য ও অর্জনে চরমভাবে ব্যাঘাত ঘটবে,লামা রাবার কোম্পানি ফ্যাক্টরি স্থাপন চেষ্টাকে ঘিরে এই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

    লামার স্বনামধন্য আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০১ সালে। এটি পার্বত্য অঞ্চলের একমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেখানকার আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থী এখন দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়,মেডিকেল এবং বুয়েটে পড়ছে। তারা লেখাপড়ার পাশাপাশি গত কয়েক বছর ধরে জাতীয় পর্যায়ের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং জাতীয় শিশু- কিশোর কুচকাওয়াজেও অনবদ্য সাফল্যের স্বাক্ষর রেখে চলেছে। পাবলিক পরীক্ষা গুলোতে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের পাশের হার শতভাগ। পিইসি, জেএসসি,এসএসসি এবং এইচএসসি প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষায় এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। আর এর কারণ হলো ক্লাসে নিয়মিত লেখাপড়া করা। জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার স্কুলভিত্তিক বিভাগে ক্রীড়া নৈপুণ্য দেখিয়ে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল চারবার দেশসেরার মর্যাদা অর্জন করেছে।

    প্রস্তাবিত রাবার প্রসেসিং ফ্যাক্টরির মাত্র ১৬০ মিটার দূরত্বে মধ্যে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল অ্যান্ড কলেজের আবাসিক ও স্কুল ক্যাম্পাস। লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের চেষ্টা করা প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে কোনো ভাবেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। গত কিছু দিন ধরে কসমো স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়ালেখা করা শিক্ষার্থী,শিক্ষক ও অভিভাবকরা এই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

    এ ছাড়াও আন্ধারী খালের উৎপত্তিস্থলে প্রস্তাবিত রাবার প্রসেসিং ফ্যাক্টরি হলে সুপেয় পানির সংকটে পড়বে স্থানীয় কয়েক হাজার পাহাড়ি ও বাঙালি বাসিন্দা। কৃষি, মৎস্য চাষসহ দৈনন্দিন প্রয়োজন পূরণের একমাত্র প্রাকৃতিক উৎস্য আন্ধারী খালে পানি দূষণ এবং পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে তারা।

    স্থানীয়রা বলেন, সরই ইউনিয়নে রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের ১ হাজার ৬০০ একর জমি থাকতে কেন আন্ধারী খালের উৎসে ও কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের পাশে এসে ফ্যাক্টরি কেন বানাতে হবে? প্রস্তাবিত রাবার প্রসেসিংফ্যাক্টরি অন্যত্র স্থাপনের দাবি জানিয়ে গত ১৭ মার্চ লামা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনও করেছি আমরা।

    এই বিষয়ে বান্দরবান জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, রাবার প্রসেসিং ফ্যাক্টরি স্থাপনের বিষয়ে এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি বা অনুমোদন দেওয়া হয়নি। রাবার ইন্ডাস্ট্রি আমাদের কাছে একটি আবেদন করেছে। আমি এলাকা পরিদর্শন করেছি। বিশেষজ্ঞরা পরিদর্শন করবেন। সব বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    এই বিষয়ে, বান্দরবান জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, আমার জানামতে দুই বছর রাবার ফ্যাক্টরি স্থাপনের কাজ বন্ধ আছে। ওই এলাকায় ফ্যাক্টরি স্থাপনের কোনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি। নতুন করে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কি না,আমার জানা নেই। তবে পরিবেশ বিপর্যয়ের মতো পরিস্থিতি হলে অবশ্যই এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    এমআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…