এইমাত্র
  • ১৮ লাখ টাকা ব্যাগে নিয়েছিল তিন ডাকাত: পুলিশ
  • ওবায়দুল কাদেরের দুর্নী‌তি অনুসন্ধানে মাঠে নামছে দুদক
  • মাগুরায় বিএনপি নেতার ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা
  • আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ বাংলাদেশের
  • আ.লীগের নির্বাচনে আসা নিয়ে বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন বদিউল আলম
  • ‘মুমূর্ষু রোগীকে বাঁচাতে ব্যাংকে ডাকাতির চেষ্টা’
  • বাংলাদেশের হয়ে খেলতে ফিফার অনুমতি পেলেন হামজা চৌধুরী
  • ২০ বিলিয়ন ডলার ছুঁই ছুঁই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ
  • ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার নতুন করে তদন্ত হওয়া উচিত: হাইকোর্ট
  • রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ: যা বললেন জাপানের রাষ্ট্রদূত
  • আজ শুক্রবার, ৫ পৌষ, ১৪৩১ | ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪
    প্রবাস

    লন্ডনে রাউন্ড টেবিল বৈঠক

    উপদেষ্টা পরিষদে ১০% প্রবাসী বাংলাদেশীকে রাখার দাবি

    সময়ের কণ্ঠস্বর রিপোর্ট প্রকাশ: ৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪১ পিএম
    সময়ের কণ্ঠস্বর রিপোর্ট প্রকাশ: ৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪১ পিএম

    উপদেষ্টা পরিষদে ১০% প্রবাসী বাংলাদেশীকে রাখার দাবি

    সময়ের কণ্ঠস্বর রিপোর্ট প্রকাশ: ৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪১ পিএম

    বৃটিশ-বাংলাদেশী পেশাজীবীদের উদ্যোগে “ জাতি গঠনে প্রবাসীরা কিভাবে ভূমিকা পালন করতে পারেন” শীর্ষক এক গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

    গত বুধবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় লন্ডন স্কুল অব কমার্স এন্ড আইটি’র মিলনায়তনে এই গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

    এতে বক্তারা বলেন, বৈষম্য ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে প্রবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। বিভিন্ন দেশে প্রবাসীরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে দুতাবাস ও হাইকমিশন ঘেরাও করেছেন, সভা-সমাবেশ করেছেন নিয়মিতভাবে দিনের পর দিন। মধ্যপ্রাচ্যে বিক্ষোভ করতে গিয়ে অর্ধশত প্রবাসী জেল খেটেছেন। সর্বশেষে প্রবাসীরা ৫ আগষ্টের আগে মাসব্যাপী রেমিটেন্স পাঠানো বন্ধ করে সরকারের টনক নাড়িয়ে দিয়েছিলেন। সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যংকের গভর্নর সম্প্রতি জানিয়েছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর প্রবাসীদের রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়ার ফলে বৈদেশিক রিজার্ভে হাত না দিয়েই বৈদেশিক ঋনের কিস্তি পরিশোধ করা হয়েছে। সুতরাং দেড় কোটির উপর প্রবাসীকে অবহেলা করার কোন সুযোগ নেই। তাই দেশ পরিচালনায় উপদেষ্টা পরিষদে অন্তত ১০ শতাংশ প্রবাসী বাংলাদেশীকে রাখা অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত।

    বক্তারা আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আমাদের অকুন্ঠ সমর্থন আছে। যে কোন উপায়ে এই সরকারকে সফল হতেই হবে। বর্তমান সরকার ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ ব্যর্থ হবে। সফল গণ-অভূত্থানের মাধ্যমে ৫৩ বছর পর দেশ গড়ার এক সুবর্ণ সুযোগ এসেছে। এই সুযোগ থেকে মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ বাংলাদেশী, যারা প্রবাসে থাকেন তাদের বঞ্চিত করলে বরং দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পৃথিবীর প্রায় ১৫টি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ আছে যাদের একেকটির মোট জনসংখ্যা দেড় কোটি হবে না। সুতরাং এত বিপুল সংখ্যক প্রবাসীদের অবহেলা করে রাষ্ট্রের টেকসই সংস্কার বা মেরামত করা সম্ভব নয়। দেড় কোটি প্রবাসীদের সন্তুষ্ট করুন ও তাদের ন্যায্য এবং যৌক্তিক দাবীসমূহ মানুন, তার বিনিময়ে দেখবেন প্রবাসীরা কোটি কোটি ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করে দেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সিনেটর নাসরুল্লাহ খান জুনায়েদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এবং প্রতিথযশা আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার নাজির আহমদের প্রানবন্ত সঞ্চালনায় সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ওলিউল্লাহ নোমান। এতে প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. হাসানাত হোসেন এবং বিশেষ অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ইসলামী ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক আব্দুল কাদের সালেহ।

    আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, ব্যারিস্টার ইকবাল হোসেন, ব্যারিস্টার হামিদুল হক আফিন্দী লিটন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা আমিন চৌধূরী, ব্যারিস্টার আলিমুল হক লিটন, ব্যারিস্টার এম ফয়ছল, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম এমাদ, ব্যারিস্টার আলী ইমাম, যুবনেতা নাসির উদ্দিন, গবেষক শরীফুল ইসলাম, মানবাধিকার কর্মী তানভীর হাসান, বৈষম্যবিরুধী আন্দোলনে বিলেতের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ আহমদ, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট সাজেদুর রহমান, সমাজকর্মী আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

    দুই ঘন্টাব্যাপী প্রাণবন্ত আলোচনা ও মতবিনিময়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা উঠে আসে। রাউন্ড টেবিল বৈঠকে নিম্নোক্ত প্রস্তাবনা ও দাবি সর্বসম্মতিতে গৃহীত হয়:

    ১। প্রবাসীদের ন্যায়সঙ্গত বিভিন্ন দাবি-দাওয়া ও অভিযোগ আছে। এসব ন্যায়সঙ্গত দাবি-দাওয়া ও অভিযোগ অতীতে সরকারের কাছে পাঠালেও যথাযথ বা সন্তুষজনক জবাব পাওয়া যায়নি। অথচ প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স হচ্ছে দেশের অর্থনীতির বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় বৃহত্তম খাত। এই খাতকে মোটেই অবহেলা করা ঠিক নয়। অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যে বিভিন্নক্ষেত্রে ১০টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছেন। অনুরূপভাবে প্রবাসীদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার, বিভিন্ন দাবী-দাওয়া, সেবার মান ও অভিযোগ - এসব বিষয়ে সংস্কারের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সংস্কার কমিশন গঠণের দাবী জানাচ্ছি।

    ২। দেড় কোটির উপরে প্রবাসী অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০% বাংলাদেশের বাহিরে বসবাস করছেন। তারা বাংলাদেশের নাগরিক। চার লক্ষ চাকমাদের জন্য প্রতিটি সরকারে তাদের প্রতিনিধিত্ব থাকে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারেও আছে। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে দেড় কোটি প্রবাসীদের জন্য কোনো সরকারেই প্রবাসী প্রতিনিধি রাখা হয়নি। তাই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দেড় কোটি উপরে প্রবাসীদের মধ্য থেকে অন্তত: দুইজন উপদেষ্টা রাখার দাবী জানাচ্ছি।

    ৩। বৃটেন, ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করেন অনেক বাংলাদেশী দ্বৈত-নাগরিক। অনেকে বাস্তব ও প্রায়োগিক সুবিধার্থে দ্বৈত-নাগরিকত্ব নিলেও তারা জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক এবং সর্বোচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী জন্মসূত্রে প্রাপ্ত নাগরিকত্ব কেউ কেড়ে নিতে পারে না।

    বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬(২)(গ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দ্বৈত নাগরিকরা সংসদ সদস্য হতে পারবেন না। দ্বৈত নাগরিকরা বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, এমনকি প্রধান বিচারপতি হতে পারলেও এমপি হওয়ার পথে সাংবিধানিক বাঁধা ও বৈষম্য রাখার কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। উল্লেখ্য, গণতন্ত্রের সুতিকাগার বৃটেনে দ্বৈত নাগরিকরা বৃটিশ পার্লামেন্টের মেম্বার হতে পারেন। শুধু তাই নয় বৃটেনে এমপি হবার জন্য বৃটিশ নাগরিক হওয়ারও বাধ্যবাদকতা নেই। বাংলাদেশী নাগরিকত্ব ও বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়েও বৃটেনে সেটেল্ড যে কেউ বৃটিশ এমপি হতে পারবেন। সুতরাং জন্মসূত্রে বাংলাদেশি নাগরিক যারা দ্বৈত-নাগরিকত্ব নিয়েছেন তাদের জন্য সংবিধানের বৈষম্যমূলক ৬৬(২)(গ) অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করার দাবী জানাচ্ছি।

    ৪। প্রায় দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশের বাহিরে বসবাস করছেন। সবাইকে একভাবে দেখা উচিৎ নয়। বৃটেনে বৃটিশ-বাংলাদেশিরা সুপ্রতিষ্ঠিত। এখানে শত শত দক্ষ প্রফেশনাল আছেন যারা স্ব স্ব ক্ষেত্রে যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে চলছেন। হাজার হাজার অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ ও লন্ডন গ্রেজ্যুয়েট আছেন যারা বাংলাদেশ পূনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। আধুনিক মালয়েশিয়া নির্মাণে মালয়েশিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মুহাম্মদ বৃটেনে এসে বৃটিশ- মালয়েশিয়ানদের মধ্যে টেলেন্ট হান্ট করতেন। এমনটি করা জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছি। সুপ্রতিষ্ঠিত বৃটিশ বাংলাদেশিরা বাংলাদেশকে দেয়ার মতো তাদের অনেক কিছু আছে।

    ৫। বৃটেন থেকে পাওয়ার অব এটর্নি দিতে ভেলিড বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে গত ২/৩ বছর আগে। পাওয়ার অব এটর্নির সাথে ভেলিড বাংলাদেশী পাসপোর্টের সম্পর্ক কি তা বোধগম্য নয়। পৃথিবীর অন্য কোন দেশে এমন আজগুবি নিয়ম নেই। এই নিয়ম চালু করার কারণে লক্ষ লক্ষ বৃটেনে বসবাসরত প্রবাসীরা মারাত্বক ঝামেলায় পড়েছেন। অন্য দেশের প্রবাসীরাও বিড়ম্বনায় পড়েছেন। এমতাবস্থায়, পাওয়ার অব এটর্নি সম্পাদনে আইডি হিসেবে বাংলাদেশি পাসপোর্ট অথবা বৃটিশ পাসপোর্ট অথবা এনআইডি কার্ড গ্রহনযোগ্য বলে অতি দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারীর জোর দাবী জানাচ্ছি।

    ৬। বাংলাদেশে সাধারণ মানুষের ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হোন। অথচ, যাদের ভোটে এমপি নির্বাচিত হোন তাদের সাথে সুযোগ-সুবিধায় বিরাট বৈষম্য রয়েছে। যেমন-এমপি হলেই টেক্স ফ্রি গাড়ি, ঢাকায় রাষ্ট্রীয় জমি বরাদ্দসহ নানা উন্নয়ন বরাদ্দ দেওয়া হয় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে। রাস্ট্রের মালিক তথা ভোটারদের বাসস্থান ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত না হলেও এমপি সাহেবদের জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। এটা রাষ্ট্রের নাগরিকদের সাথে বিরাট বৈষম্য তৈরি করে। অথচ সংবিধানে বলা আছে আইনের চোখে সকলেই সমান। অবিলম্বে এসব বৈষম্যমূলক সুযোগ-সুবিধা ও বরাদ্দ বাতিল করতে হবে।

    পিএম

    ট্যাগ :

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…