সংবিধানে ‘আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও ঈমান’ ফিরিয়ে আনার দাবি করেছেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে নাগরিক ফোরামের উদ্যোগে ‘সংবিধান অনুলিখন: সংশোধন ও জাতীয় ঐকমত্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘এখন যে অংশ আছে (সংবিধানের), বলা হয়েছে সংবিধানের একটি বিরাট অংশ অপরিবর্তনীয়। এটা বদলাতে হবে, তাই তো? আমার পঞ্চম সংশোধনী ও সপ্তম সংশোধনী যে বাতিল হয়েছে- এটার একটা প্রক্রিয়া বের করতে হবে। জিয়াউর রহমান যে সংবিধান করেছিলেন পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে। সেখানে ছিল আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও ঈমান। এটা ফিরিয়ে আনতে হবে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান। আমার ৯০ ভাগ মানুষের যে সংস্কৃতি, যে ধর্মীয় বিশ্বাস তার প্রতিফলন যদি সংবিধানে না থাকে তাহলে এটা কিসের সংবিধান? আপনি তো সংখ্যাঘরিষ্ঠের জন্য করছেন, সংখ্যাঘরিষ্ঠ মানে ৯০ শতাংশ সংখ্যাঘরিষ্ঠ। তো আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও ঈমান- এটা যদি আমার সংবিধানে না থাকে, তাহলে এই সংবিধান তো আমার না। মুসলমানদের তো এই সংবিধান হতে পারে না। তাহলে ওটা ফিরিয়ে আনতে হবে।’
মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘যেদিন স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা চুপ্পুকে রাষ্ট্রপতি বানিয়েছেন সেই দিনই সংবিধান নষ্ট হয়ে গেছে। একজন রাষ্ট্রপতি যখন বলে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গেছেন, আবার পরবর্তীকালে তিনি বলেন, পদত্যাগপত্র তার কাছে নেই বা তিনি পাননি। যিনি এত বড় মিথ্যা কথা বলতে পারেন, তাহলে তিনি সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন এবং তার শপথ ভঙ্গ করেছেন। ওই চেয়ারে তার থাকার আর কোনো বৈধতা নেই।
তিনি বলেন, ‘এই সংবিধান একটি পরিবারের পক্ষের দলিল। এই সংবিধান শুধুমাত্র একটি পরিবারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এই সংবিধানে বলা হয়েছে— এই সংবিধান অপরিবর্তনীয়। এই সংবিধানে বলা হয়েছে- প্রধানমন্ত্রী সারাজীবন ক্ষমতায় থাকবে। তার মানে বাংলাদেশে তার (শেখ হাসিনা) পিতা শেখ মুজিব যেমন ৭২ সালে বাকশাল কায়েম করেছিলেন, তেমনই তার কন্যাও এই সংবিধান অনুযায়ী অঘোষিত বাকশাল কায়েম করেছিলেন।’
আমার দেশ সম্পাদক বলেন, ‘এই সংবিধানের মাধ্যমে প্রেসিডেন্সিয়াল করা হয়েছিল আবার হয়ে গেলো পার্লামেন্টারি সংবিধান, যা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ভয়ানক ফ্যাসিস্ট সরকার গঠন করে দীর্ঘদিন বাংলাদেশে রাজত্ব কায়েম করেছেন। বাংলাদেশে এখন প্রেসিডেন্সিয়াল সরকারের ফিরে যাওয়ার সময় এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন বাংলাদেশে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করতে হবে, এটি রাজনৈতিক দলে নেতারা মানবেন কি না সেটা জানি না।’
সাবেক বিচারপতি এ এফ এম আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আবেদ রেজা, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার ও জেলা জজ ইফতেদার আহমেদ প্রমুখ।
এফএস