‘হাজারটা অর্থপূর্ণ শব্দের চেয়ে একটি শক্ত আলিঙ্গন অনেক বেশি শক্তিশালী’। বিখ্যাত মার্কিন লেখক অ্যান হুডের এই বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত করার খুব একটা সুযোগ নেই। আলিঙ্গন অব্যর্থ ওষুধ। আলিঙ্গন ভালোবাসার মানুষকে কাছাকাছি থাকার অনুভূতি যোগায়। মৃতপ্রায় সম্পর্ককে একলহমায় সারিয়ে তুলতে পারে। কেবল মনের অসুখের কথাই বা বলি কেন। শারীরিক অসুস্থতার ক্ষেত্রেও আলিঙ্গন দারুণ উপকারী।
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রীতিপূর্ণ আলিঙ্গন রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। কমায় রক্তচাপ ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি, নানা শারীরিক ব্যথা দূর করে। আলিঙ্গনে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। এর মাধ্যমে নির্গত হয় অক্সিটোসিন হরমোন, যার ফলে মানসিক অবসাদ কমে গিয়ে মনে আনন্দের অনুভূতি তৈরি হয়। এই হরমোন মস্তিষ্ককে শান্ত রাখে। ফলে, দুশ্চিন্তা কমে গিয়ে স্বস্তি আসে। ১০ সেকেন্ড বা তার বেশি সময় ধরে জড়িয়ে ধরলে মনের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিশেষত, খুব কাছের কোনো বন্ধু বা প্রিয়জন কেউ জড়িয়ে ধরলে মানসিক প্রশান্তি আসে।
আপনার সব থেকে প্রিয় যে মানুষ, শেষবার তাকে কবে প্রবল আবেগে জড়িয়ে ধরেছেন মনে আছে? বুকের ভিতর অনেক কথা জমে আছে কিন্তু বলতে পারছেন না? কিছু না বলেই হাজারো কথা বলে ফেলার এই অনুভূতির তরজমা করতে পারে, পৃথিবীতে এমন কোনো ভাষা কি আছে! ভাষা না থাকলেও কিন্তু একটা উপায় আছে যেখানে কিছু না বলেই সব অনুভূতি শেয়ার করা যায়। আর তা হলো আলিঙ্গন। আলিঙ্গনের মধ্যে হাজারও না বলা কথা লুকিয়ে থাকে।
আজ ৩ ডিসেম্বর ‘লেটস হাগ ডে’ বা ‘চলো আলিঙ্গন করি’ দিবস। তাই আজ মান-অভিমান, ঝগড়া-বিবাদ, সব ভুলে আপনার প্রিয় মানুষকে জড়িয়ে ধরুন।
এই দিবসটির উৎস সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে একটি সূত্রমতে, কেভিন জ্যাভরনি নামক একজনের মাধ্যমে এর যাত্রা শুরু হয়।
সমীক্ষা অনুযায়ী, আলিঙ্গন কেবল আবেগ প্রকাশের মাধ্যমই নয়। আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক আছে প্রিয়জনের আন্তরিক স্পর্শের।
এবি