সৌদি আরবে নির্মাণ কাজ করার সময় ভবন থেকে নিচে পড়ে আহত হওয়ার সাত মাস পর মো. সবুজ মিয়া (২৫) নামে এক বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় রাত ১১টার দিকে সৌদি আরবের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত মো. সবুজ মিয়া কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের আব্দুল কাদিরের ছেলে।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দেড় বছর আগে পরিবারের সুখ ও জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান মো. সবুজ মিয়া। সেখানে ভালোভাবেই চলছিল তার প্রবাস জীবন। দেশের বাড়িতে তার স্ত্রী ও মেয়েসহ পরিবারে অন্য সদস্যরা রয়েছেন। গত সাত মাস আগে একটি ভবন নির্মাণ করার সময় নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন সবুজ। পরে সহকর্মীরা তাকে সেখানকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানেই চলছিল তার চিকিৎসা। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এরপর সেখান থেকে সবুজের মৃত্যুর খবর বাংলাদেশে গ্রামের বাড়িতে জানানো হয়। এ খবর জানার পর থেকে পারিবারে চলছে শোকের মাতম।
নিহতের বাবা আব্দুল কাদির বলেন, ‘সবুজ আমার বড় ছেলে ছিল। সে কাজের জন্য খুব পরিশ্রমী। বাড়িতে মাছ ধরার কাজের পাশাপাশি নিজ বাড়িতে একটি দোকান চালাতেন। সংসারের সুখের জন্য গত দেড় বছর আগে সবুজ সৌদি আরবে যায়। সৌদিতে প্রথম দিকে সে কষ্ট করলেও পরে তার ভালো অবস্থান তৈরি হয়। সাত মাস আগে খবর পেলাম সেখানে নির্মাণ কাজ করার সময় হঠাৎ করে এক তলা ভবন থেকে নিচে পড়ে যায়। সৌদিতে সাত মাস চিকিৎসাধীন থেকে সোমবার হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। আমার ছেলে ছাড়া দুনিয়ায় আর কেউ নেই, পুরা সংসারই এখন এলোমেলো হয়ে গেল। তার স্ত্রী এক সন্তান নিয়ে বিধবা হলো। আমি এখন কি করব বুঝতে পারছি না। আমার ভাতিজা সৌদি প্রবাসী কাশেম বলল, তার লাশ দেশে পাঠাবে না, সৌদিতেই দাফন করবে। কারণ লাশ দেশে পাঠাতে অনেক ঝামেলা ও ব্যয়বহুল। আমার পরিবারের সদস্যরা শেষ পর্যন্ত ছেলের লাশ দেখতে পারবে না এই দুঃখ সইবার নয়।’
এলাকার ইউপি মেম্বার মো. রাশিদ মিয়া বলেন, ‘পরিবারটি দরিদ্র। সুখের আশায় সবুজ সৌদিতে গিয়েছিল। সেখানে একটি বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে নিচে পড়ে প্রথমে গুরুতর আহত হয়। সাত মাস চিকিৎসা শেষে সোমবার রাতে সে হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছে শুনলাম। পরিবারটি অসহায় হয়ে গেল। এমন মৃত্যু দুঃখের। এখন সান্ত্বনা দেওয়া ছাড়া আমাদের কারো কিছু করার নেই।’
বাবা আব্দুল কাদির তার ছেলের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
এবি