এইমাত্র
  • বাঁধ ভেঙে শেরপুরে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত
  • নোয়াখালীতে সড়কে প্রাণ গেল ২ বিএনপি-জামায়াত নেতার
  • গজারিয়ায় কাভার্ডভ্যান-ট্রাক ও সিএনজির ত্রিমুখী সংঘর্ষে আহত ২
  • যার ফোনকলে সিদ্ধান্ত বদলান রাহুল দ্রাবিড়
  • চুয়াডাঙ্গায় পল্লী উন্নয়ন কিশোরী সংঘের সচেতনামূলক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
  • রূপচাঁদা মাছের দোপেঁয়াজা তৈরির রেসিপি
  • মাদারীপুরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি
  • চুয়াডাঙ্গায় কিশোর শ্রমিকের লাশ নিয়ে বিক্ষোভ
  • টাঙ্গাইলে পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারা ২২ শিক্ষার্থীর মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা ভবনে অভিযান শুরু
  • আজ মঙ্গলবার, ১৮ আষাঢ়, ১৪৩১ | ২ জুলাই, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    দুর্ভোগের ৪ বছর সরিষাবাড়ীর শুয়াকৈর ভাঙ্গা সেতু

    উপজেলা করেসপন্ডেন্ট প্রকাশ: ১ জুলাই ২০২৪, ১২:২৩ এএম
    উপজেলা করেসপন্ডেন্ট প্রকাশ: ১ জুলাই ২০২৪, ১২:২৩ এএম

    দুর্ভোগের ৪ বছর সরিষাবাড়ীর শুয়াকৈর ভাঙ্গা সেতু

    উপজেলা করেসপন্ডেন্ট প্রকাশ: ১ জুলাই ২০২৪, ১২:২৩ এএম

    অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের ৪ বছর শুয়াকৈর ভাঙ্গা সেতু। জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার শুয়াকৈর গ্রামের ঝিনাই নদীর ওপর ২০০ মিটার একটি গার্ডার সেতু। সেতুটি বন্যার পানির তোড়ে নদীতে বিলীন হয় ২০২০ সালে। প্রায় চার বছর পেরিয়ে গেলেও সেতুটির পুনঃনির্মাণের কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এরফলে নদী পারাপরে চরম ভোগান্তির শিকার হয়ে আসছে চরাঞ্চলের অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ।

    সেতুটি না থাকায় সড়ক যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে চরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ তাদের কাঙ্খিত সময়ের কাজ সময়ে করতে পারেন না। সেতু ভেঙ্গে নদী পারাপারে চরম বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে ওই এলাকার মানুষের। বর্ষা শুরু হতে না হতে নদীর এপাড় ওপাড়ে নৌকার জন্য অপেক্ষা করতে হয় কৃষক-জনতার। কৃষক তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্যের ন্যায মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়া চরাঞ্চলের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী লেখাপড়ারও চরম বিঘ্নতার মুখে পড়তে হচ্ছে।

    সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ‘উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের মধ্যে অবস্থিত শুয়াকৈর ঝিনাই নদী। এ ইউনিয়নসহ অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষের উপজেলা সদরের সঙ্গে যাতায়াতের একমাত্র যোগাযোগের সংযোগ ব্যবস্থা শুয়াকৈর ঝিনাই নদী। এ অঞ্চলের মানুষের কৃষি পণ্য পরিবহণসহ সড়ক যোগাযোগ সুগম করতে ২০০৬ সালে শুয়াকৈর ঝিনাই নদী ওপর ২০০ মিটারের একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় চরাঞ্চলের মানুষের সড়ক যোগাযোগের দুঃখ দূর হয়। সেতুর পাড়ে গড়ে উঠে একটি বাজার। এতে গড়ে উঠে শতশত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এই সেতু দিয়ে চলাচল শুরু হয় সকল প্রকার যানবাহনের। এ যানবাহন দিয়ে অতি সহজে চরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতে ও কৃষি পণ্য পরিবহণের সুযোগ হয়ে উঠে। এ ছাড়া স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা, চাকুরিজীবি, ব্যবসায়ীরা ও জরুরী চিকিৎসা সেবাসহ বিভিন্ন সুবিধা সহজেই ভোগ করে আসছিলেন চরাঞ্চলের মানুষেরা।

    হঠাৎ করে ২০২০ সালের ২২ জুলাই বন্যার স্রোতে ২০০ মিটার দৈর্ঘ্য গার্ডার সেতু মাঝামাঝি ৪টি পিলার ও তিনটি স্প্যানসহ ৬০ মিটার সেতু নদীতে এক রাতেই বিলীন হয়ে য়ায়। এর ফলে চরাঞ্চলের মানুষের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এরপর থেকে নদী পারাপারে চরম ভোগান্তির শিকার হয় ওই অঞ্চলের মানুষের। সেতুটি ছিল চরাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের সেতু। এ সেতুটি নদীতে বিলীন হওয়ায় সাধারন মানুষে দীর্ঘদিনের স্বপ্ন যেনো ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। ভেঙে যাওয়া সেতুটির দু'পাশের অংশ মূর্তিমান হিসেবে দাড়িয়ে আছে। সেতুটি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া চার বছর অতিবাহিত হলেও সেতুটি নির্মাণের কোনো উদ্দ্যোগ নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।


    এতে চরম অনিশ্চিত হতাশায় ভোগছেন চরাঞ্চলের অর্ধশত গ্রামবাসী। এ জনবহুল চরাঞ্চলের নারী-পুরুষরা নদী পারাপারে বিকল্প হিসেবে নৌকায় গাদাগাদি করে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে। নৌকায় পারাপারের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয় নদীর দুই পাড়ের মানুষের। এতেও এক চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে চরাঞ্চলের মানুষেরা। এর ফলে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সঠিক সময় বিদ্যালয়ে পৌঁছতে পারছে না। এতে তাদের লেখাপড়ার ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য আনা নেওয়াতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। র্দীঘ দিন ধরে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় কৃষকরা কৃষি পণ্যের ন্যায মুল্য থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। সেতুটি নদীর গর্ভে বিলীন হওয়ায় বেকার হয়ে পড়ছে শতশত দরিদ্র রিকশা, ভ্যান ও অটোরিকশা চালকরা। ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছে ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা। বন্যায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষ তাদের গন্তব্যে পৌঁছতে বিভিন্ন এলাকার রাস্তা ব্যবহার করে। নৌকার অপেক্ষা না করে দূরদূরান্তের রাস্তা ব্যাবহারে বাধ্য হতে হচ্ছে। এ সেতু সংস্কার বা নতুন কোন পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান র্অধশতাধিক গ্রামের মানুষ।

    স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানান, বর্তমান সরকার র্দীঘ দিন ধরে দেশ পরিচালনা করে আসছে। দেশের অনেক উন্নয়নের কাজ, বড় বড় ব্রিজ র্নিমান করছে। চার বছর হয়ে গেলো আমাদের ভেঙ্গে যাওয়া সেতুর কোন ব্যবস্থা হলো না। আমাদের দুঃখ দুর্দশার দেখার কেউ নেই। ব্রিজ নির্মানে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের প্রাণের দাবি।

    উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) জাহিদুল ইসলাম জানান, ‘এই ব্রিজের সংস্কার কাজের ড্রয়িং, ডিজাইন ইউনিটে রয়েছে। ইউনিটের কাজ শেষ হলইে নতুন করে ব্রীজ তৈরী ব্যয়ের বরাদ্দের টেন্ডার দরপত্র আহব্বান করা হবে। ব্রীজ সংস্কার সকল প্রস্তুতি চলমান রয়েছে বলেও তিনি জানান।

    এ-বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার জানান, ‘শুয়াকৈর ঝিনাই নদীর সেতু সংস্কার কাজের জন্য চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। খুব শ্রীঘ্যই ব্রীজ নির্মানের অনুমোদন হবে বলেও জানান তিনি।

    উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন পাঠান বলেন, ‘বন্যায় ব্রীজটির মাঝখানে ভেঙে যাওয়ায় এলাকার মানুষের যাতায়াতের সমস্যা হচ্ছে। এ সমস্যা দূর করতে ব্রীজের পূণঃ নির্মান বা ভেঙে যাওয়া অংশ সংস্কার করার চেষ্ঠা করা হচ্ছে।

    এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুয়াকৈর ব্রীজ মেরামতের টেন্ডার হয়েছিল। বরাদ্ধ কম থাকায় পুনরায় নতুন করে টেন্ডার চলমান রয়েছে। আগামী শুকনো মৌসুমে ব্রিজের কাজ শুরু হবে বলেও তিনি জানান।

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…