শরীয়তপুরের রুদ্রকরে ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে এক মাসের অধিক সময় ধরে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি পুকুরের মধ্যে হেলে পড়ে আছে। হেলেপড়া বৈদ্যুতিক তারগুলো নিচু হয়ে পড়ে থাকায়, বাধ্য হয়ে নিচ দিয়েই চলাচল করছে শিশুসহ সবাই। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন তারা।
স্থানীয় ও বিদ্যুৎ বিভাগের সাথে কথা বলে জানা যায়, অন্তত ৮ বছর আগে ৪ টি নতুন খুঁটির মাধ্যমে সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের আমতলী এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড (ওজোপাডিকো)। যার মধ্যে ০.২ কেভি ও ২২০ ভোল্টের সঞ্চালন লাইন চালু রয়েছে। লাইনটিতে ৭ টি মিটারের মাধ্যমে সুবিধা নিচ্ছে বেশ কয়েকটি পরিবার। খুঁটি এবং লাইনগুলো দেখভাল করছেন এম আর ট্রেড মার্ক নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত ২৭ মে (সোমবার) ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে সেই সঞ্চালন লাইনের একটি খুঁটির গোড়ার মাটি সরে গিয়ে মালেক ঢালীর পুকুরের মধ্যে পড়ে যায়। এছাড়াও তাঁরগুলো একটি চলাচলের রাস্তার উপর পড়ে থাকায় অন্তত ২০ টি পরিবারের লোকজন ঝুঁকি নিয়ে তারের নিচ দিয়ে চলাচল করছে। ঝুঁকিপূর্ণ খুঁটিটি ঠিক করতে ২৮ মে (মঙ্গলবার) ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড শরীয়তপুরের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে আবেদন করেন স্থানীয় বাসিন্দা মালেক ঢালী। এরপর দীর্ঘ ১ মাস ৪ দিন পার হলেও ক্ষতিগ্রস্ত খুঁটিটি মেরামত করা হয়নি। বিদ্যুৎ বিভাগ বলছেন খুঁটির দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারকে খুঁটিটি মেরামত করতে একাধিকবার বলা হয়েছে।
গৃহবধু তানজিলা আক্তার নিপা বলেন, আমাদের এই তারগুলো অনেকদিন আগে তুফানে পড়ে গেছে। আমরা এই রাস্তা দিয়েই বাড়িতে চলাচল করি। আমরা যখন বাড়িতে কাজে ব্যস্ত থাকি, আমাদের শিশুরা বাচ্চারা না বুঝে এই তার এসে ধরে। প্লাস্টিকের কাভার বলে রিস্ক কম, কিন্তু দুর্ঘটনা হতে তো আর সময় লাগেনা। আমরা চাই দ্রুত এই তার সরানো হোক।
কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী আলী আশ্রাব বলেন, আমাদের ত্রিশটি পরিবারের যাওয়ার রাস্তা এই একটাই। দীর্ঘদিন ধরে খুঁটিটি পড়ে থাকলেও বিদ্যুৎ বিভাগ কোন মাথা ঘামাচ্ছে না। তাদের কাছে অভিযোগ দেয়া হয়েছে তাপ আমলে নিচ্ছে না। বড় ধরনের দুর্ঘটনা হলে এর দ্বায় কে নিবে? আমরা চাই দ্রুত খুঁটির আগের জায়গায় স্থাপন করা হোক।
ভুক্তভোগী খালেক ঢালী বলেন, ১ মাসের উপরে হয়েছে বিদ্যুতের খুটিতে উল্টাইয়া পড়ে ঘরের উপরে খুব খারাপ অবস্থায় রয়েছে। আমরা বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে যাতায়াত করতে পারছি না। রিস্ক হয়ে গেছে। বিষয়টি বিদ্যুৎ বিভাগকে সাথে সাথে জানালেও তারা এখনো কাজ শুরু করেনি। আমাদের একটাই দাবী দুর্ঘটনা ঘটার আগে জরুরী ভিত্তিতে খুঁটিসহ লাইনটি সংস্কার করা হোক।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম আর ট্রেড মার্কের ঠিকাদার মজিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমরা অবগত আছি। তবে আমাদের লোকজন ঈদের ছুটিতে থাকায় মেরামত করা সম্ভব হয়নি। আজকে আমাদের লোকজন এসেছে, আশাকরি কাল খুঁটিটি ঠিক করা হবে।
বিষয়টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি উল্লেখ করে শরীয়তপুর ওজোপাডিকো'র উপ-সহকারী প্রকৌশলী মুহাম্মদ নবীদ আলী বলেন, এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছি। খুঁটিটি ঠিকাদারকে ঠিক করতে বলা হয়েছিলো। তবে ঈদের ছুটি পড়ে যাওয়ায় লোকজন সংকটের কারণে ঠিক করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন তারা। আমরা এ নিয়ে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেছি। আগামী কালকের মধ্যে ঠিক করার কথা জানিয়েছে ঠিকাদার।
এফএস