আশ্বিন মাসেও মেঘমুক্ত আকাশ, সূর্যের চোখ রাঙানি। তীব্র তাপদাহের দাপটে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে সীমাহীন লোডশেডিং। গরমে সব চেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে নিম্ন মধ্যবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষেরা।
কয়েকদিন থেকে শেরপুরের গারো পাহাড়ে আশ্বিনের তীব্র রোদে পুড়ছে সীমান্তবাসি। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে তাপমাত্রা। এতে শহর ও গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষদের পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। রিকশাচালক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশার শ্রমজীবী ও দিন মজুররা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। তীব্র এ গরমে সাধারণ মানুষ বের না হওয়ায় আয় কমেছে এসব মানুষদের। স্বল্প আয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা।
নালিতাবাড়ী উপজেলার উত্তর নাকশী এলাকার কৃষিশ্রমিক হবিবুর রহমান জানান, প্রচণ্ড গরমের কারণে ধান ক্ষেতে বেশিক্ষণ কাজ করা যায়না। গরম বেশি হওয়ায় শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে ঘাম বের হয়। অতিরিক্ত ঘাম বের হওয়ার কারণে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং অনেক শ্রমিক অসুস্থ হয়েপড়ে তিনি আরও জানান, তাপ প্রবাহের কারণে শ্রমিকরা এখন অতিরিক্ত মজুরি পেয়েও অনেকেই কাজ করতে আগ্রহী নন।
একই এলাকার কৃষক মোহাম্মদ আলী জানান, অতিরিক্ত গরমের কারণে কৃষকরা মাঠে বেশি সময় কাজ করতে পারেননা। অনেক সময় কাজ করতে গিয়ে অতিরিক্ত ঘাম বের হয়ে যাওয়ায় অসুস্থ হওয়ার উপক্রম দেখা দেয়। এই মাত্রারিক্ত গরমের কারণে তারা এখন আর মাঠে কাজ করতে চাননা।
অপর কৃষক মনিরুজ্জামান বলেন, দিন-রাতে কতবার বিদ্যুৎ যায়, তার হিসাব থাকেনা। দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় আমন ধান ক্ষেতে সেচ দিতে পারছেননা কৃষকরা। তার উপর আশ্বিনমাসের শুরুতে এসেও দাবদাহ শুরু হয়েছে। এমন সময়ে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি আমরা। গরমে আমার পরিবারের কেউই ঠিকমতো ঘুমাতে পারছেনা।
পথচারী সাইদুল ইসলাম বলেন, প্রচন্ড গরম হওয়ায় বাইরে বের হওয়ায় অনেক কষ্ট হয়। জরুরি প্রয়োজনের কারণেই বাইরে বের হওয়া। এ সময়ে বৃষ্টি হলে অনেক ভালোহত।
রিক্সাচালক বদিউজ্জামান জানান, রোদের কারণে মানুষ আর বেশি বাইরে বের হয় না। সে কারণে আমাদের আয় হচ্ছেনা। আগে দিনে ৫০০-৬০০ টাকা আয় হত। এখন ২৫০-৩০০ টাকার মত হয়। আমাদের রিক্সা জমার টাকা তুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নালিতাবাড়ী জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. আখতারুজ্জামান সময়ের কন্ঠস্বরকে বলেন, এ উপজেলায় দুইসাব স্টেশনে ১৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদা রয়েছে। কিন্ত প্রতিদিন গড়ে ৭-৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে। গ্রাহকের চাহিদার চেয়ে বিদ্যুৎ কম সরবরাহ। এ কারণে লোডশেডিং বেড়েছে। দ্রুত সময়ে সমস্যা সমাধানের আশা করছেন তিনি।
এইচএ