সেনাবাহিনীর লেফট্যানেন্ট মো. তানজিম সারোয়ার নির্জনের শান্তি মিশনে যাওয়ার কথা ছিল আগামী ডিসেম্বরে। সেখান থেকে এসে বিয়ে করবে বলেও জানিয়েছিল। আমরা সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এর আগেই আমার শ্যালক পরপারে চলে গেল।
কথাগুলো বলছিলেন কক্সবাজারের চকরিয়ায় যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালনাকালে সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তানজিম সারোয়ার নির্জনের ভগ্নিপতি এনামুল হক।
তিনি আরও বলেন, আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। খুনিদের ফাঁসি চাই।
নিহত তানজিম সারোয়ার নির্জন টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করের বেতকা গ্রামের সারোয়ার জাহানের ছেলে। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নির্জনের মরদেহ কক্সবাজার থেকে হেলিকপ্টারযোগে টাঙ্গাইল হেলিপ্যাডে এসে পৌঁছায়। এ সময় পুরো এলাকা ঘিরে রাখে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এরপর নিহতের মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি করের বেতকা এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পর নিহতের স্বজনদের আহাজাররিতে চারপাশ ভারি হয়ে উঠে। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন নিহতের মা।
মা বিলাপ করে বলছেন, ‘ও আমার আত্মা ছিল। ও যখন অপারেশনে যায়, বলেছি তুমি দেশের জন্য ও দশের জন্য করিও। যেটি ভালো হয় সেটি দেখেশুনে করিও।’ এ সময় নাজমা বেগম সরকারপ্রধান ও সেনাপ্রধানের কাছে ছেলে হত্যার বিচার চান।
একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বাবা সারোয়ার জাহানও প্রায় বাকরুদ্ধ। তিনি বলেন, ‘এ রকম মৃত্যু যেন আর কারও না হয়। আর যেন কোনো বাবার এভাবে আর্তনাদ করতে না হয়। আমি আমার ছেলের হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার চাই। তানজিমই আমার একমাত্র ছেলে। সেই ছিল বাড়ির একমাত্র উপার্জন করার লোক। আমি এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার ও ফাঁসি চাই।’
তানজিমের বড় বোন সুচি বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে সারাকে শান্তি মিশন থেকে এসে একটা আইফোন কিনে দেবে বলেছিল ভাই। ভাগনিকে আর ফোন কিনে দেওয়া হলো না নির্জনের (নিহত তানজিম)।’ এসব বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন সুচি।