এইমাত্র
  • তেলবাহী জাহাজে আগুন, নিহত ২
  • কুষ্টিয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানকে গুলি করে হত্যা
  • কুষ্টিয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানকে নিজ কার্যালয়ে গুলি করে হত্যা
  • ডিসি নিয়োগ নিয়ে সচিবালয়ে হট্টগোল: শাস্তি পাচ্ছেন ১৭ উপসচিব
  • আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানালেন বিশ্বকাপজয়ী গ্রিজমান
  • চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর বিষয়ে কমিটি গঠন
  • বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে তারেক রহমানের অনুরোধ
  • বিভিন্ন দাবিতে মাগুরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মানববন্ধন
  • পাহাড়ে সংঘাত: গুজব ছড়ানোর নেপথ্যে আওয়ামী সমর্থক ও ভারতীয়রা: ডিসমিসল্যাব
  • পৃথিবীর আকাশে দৃশ্যমান হলো নতুন চাঁদ
  • আজ সোমবার, ১৫ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    গ্রাহকদের বীমার টাকা নিয়ে ছলচাতুরি, মারা গেলে কবর হবে না এজেন্ট কর্মীর

    উপজেলা করেসপন্ডেন্ট প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০৪ পিএম
    উপজেলা করেসপন্ডেন্ট প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০৪ পিএম

    গ্রাহকদের বীমার টাকা নিয়ে ছলচাতুরি, মারা গেলে কবর হবে না এজেন্ট কর্মীর

    উপজেলা করেসপন্ডেন্ট প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০৪ পিএম

    "স্যার আপনি যদি মারাও যান তা হলে দাফন করতে দিমু না। আপনার কথায় আমরা চরাঞ্চলের গরীব মানুষ গুলো বীমায় রাখার জন্য টাকা দিয়েছি। কাউকে চিনি না , আপনি আমাদের টাকা দিয়া দ্যান"। অতি কষ্টে পড়ে এ প্রতিবেদককে কথাগুলো বলছিলেন প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানি লি. এর এজেন্ট কর্মী ও চর বিশ্বাস জনতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অব: প্রধান শিক্ষক মো. ইব্রাহীম খলিল।

    জানা গেছে, পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলায় হাতে গোনা কয়েকটি বীমা কোম্পানি রয়েছে। প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানি লি. এর মধ্যে একটি। গলাচিপা পৌরসভার ৭নম্বর ওয়ার্ডের ফিডার রোডে যার অফিস। এদের মাঠকর্মী বা এজেন্ট কর্মী রয়েছে ৪০জন। গ্রাহক আছে ১২০০ জন। অধিকাংশ গ্রাহক গ্রামের সহজ সরল মহিলা। বীমা টাকার দাবিতে গ্রাহকরা গলাচিপা অফিস আসলে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এড়িয়ে চলে। এ অফিসের সহযোগিতায় এজেন্ট কর্মীদের মাধ্যমে গ্রাহকরা প্রায় ৩ থেকে ৪ কোটি টাকা জমা দিয়েছে। তাদের অভিযোগ জমাকৃত টাকার বীমার মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক বছর পার হয়ে গেলেও গ্রাহকরা টাকা ফেরত পাচ্ছে না। ফলে দুঃচিন্তায় দিন কাটাচ্ছে গলাচিপার প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানি লি: গ্রাহকরা। এমনকি গ্রাহকরা টাকা আদৌ পাবেন কিনা তার কোন নিশ্চয়তা নেই। ফলে বিমা নিয়ে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে মানুষের মনে কারণ পলিসি শেষ হলেও সময়মতো পাওয়া যায় না টাকা।

    অনুসন্ধানে পাওয়া যায়, গলাচিপা সদর ইউনিয়নের চরখালী গ্রামের গ্রাহক হাজরা বেগম জানান, পলিসি নং ০১২৯৩৫৩-৬ , টাকা পাওয়ার তারিখ ছিল ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর অথচ অফিসে যোগাযোগ করার পরও ১লাখ ৩৫ হাজার ৫৬০টাকা পায়নি। বোয়ালীয়া গ্রামের গ্রাহক অভিনাস জানান, পলিসি নং ০১০০৭৬২-৪ , টাকা পাওয়ার তারিখ ২০১৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর । অফিসে ৫বছর ধরে ঘুরতেছি টাকা পাইনি।

    চর বিশ্বাস গ্রামের বীমার এজেন্ট ও অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইব্রাহিম খলিল জানান, আমার ৪শত এর উপরে গ্রাহক রয়েছে। জীবনে ভুল করেছি এ বিমা কোম্পানিতে প্রবেশ করে। গ্রাহকরা টাকা না পেয়ে আমাকে ধরে । ঘর থেকে বের হতে পারছি না। ঘরের ভেতর লুকিয়ে থাকতে হচ্ছে। যে সমস্ত কথা বলছি তা কষ্টের কথা ।

    রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরবেষ্টিন গ্রামের এজেন্ট কর্মী পিয়ারা বেগম জানান, বীমা কোম্পানি থেকে গ্রাহকদের টাকা তুলতে না পারায় একই এলাকার খোকন ডাকুয়ার স্ত্রী নুর চেহারা বেগমকে মারধর আর ঘর থেকে তাড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছে তার স্বামী। আর আলতাফ মোল্লার স্ত্রী সাহানারা বেগমকে তালাক দেয়ার হুমকি দিয়েছে তার স্বামী এবং এমনও ঘটনা ঘটেছে বীমার টাকা না পেয়ে চরবেষ্টিন এলাকায় স্ত্রীর উপর রাগ করে স্বামী অন্য একটি বিয়ে করে ঢাকা গিয়ে বসবাস শুরু করছে। ভুক্তভোগী নারী গ্রাহকরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এর সমাধান চেয়েছে।

    এজেন্ট কর্মী ডাকুয়ার ছোটচত্রা গ্রামের বিপুল ভূইয়া , বাশবাড়িয়া গ্রামের বাদল চন্দ্র রাজা , সুতাবাড়িয়া গ্রামের বলরাম জানান, বীমার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও গ্রাহকদের টাকা পঁয়সা না দেয়ায় এজেন্ট কর্মীদের গরু মহিষ নিয়ে যাচ্ছে, এমনকি কারো কারো পকেট থেকে টাকা দিতে হচ্ছে গ্রাহকদের। কালারাজা গ্রামের আ: রাজ্জাক খান জানান, মহা বিপদে আছি গ্রাহকদের টাকা পয়সা দিতে না পারায় গাল মন্দ করছে। অফিসে গিয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পাওয়া যাচ্ছে না।

    গলাচিপা শাখার প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানি লি. এর সার্ভিস সেল এ জি এম তপন চন্দ্র রায় জানান, গ্রাহকদের বীমার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও দাবিকৃত টাকা পাচ্ছেন না। কোম্পানিকে অবহিত করলেও তারা টাকা না দিয়ে ছলচাতুরি করছে এতে গলাচিপা অফিসের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। বহু গ্রাহক প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে ফেরত আসেন এবং উপজেলা কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেন তারা। লিগ্যাল নোটিশ, এমনকি বীমা উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়েও সমাধান হচ্ছে না।

    প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানি লি. প্রধান কার্যালয় ঢাকায় -মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. সাইদুর আমিনকে গলাচিপা অফিসের লোকজন পালিয়ে বেড়াচ্ছে কেন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, হতাশ হওয়ার কিছু নাই কয়েক দিনের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে। সম্প্রতি পটুয়াখালী জেলায় ২শত চেক বিতরণ করা হয়েছে। বীমার কাগজ পত্র জমা দিলেই পযার্য়ক্রমে গ্রাহকদের চেক দেয়া হবে এবং সবাই টাকা পাবে।

    এইচএ

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    Loading…