সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাসভবনের সামনে ২০১৩ সালে বালু ও ময়লার ট্রাক দিয়ে অবরুদ্ধ করার ঘটনায় মামলা হয়েছে। শুক্রবার (০৪ অক্টোবর) রাতে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সদস্য শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে গুলশান থানায় মামলাটি করেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ ৯৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি হয়েছে। এতে অভিযোগ করা হয়েছে, মার্চ ফর ডেমোক্রেসি কর্মসূচিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে যেতে বাধা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এ কাণ্ড ঘটানো হয়।
গুলশানের উপ-পুলিশ কমিশনার রিয়াজুল হক মামলার বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মার্চ ফর ডেমোক্রোসি কর্মসূচিতে ওইদিন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের যোগদান করার কথা ছিল। সেই উদ্দেশ্যে তিনি গুলশানের বাসা থেকে কর্মসূচিতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু আসামিরা তার বাসার সামনে বালু ও ময়লার ট্রাক দিয়ে অবরুদ্ধ করার কারণে তিনি বাসা থেকে বের হতে পারেননি। এ ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে।
পুলিশ মামলাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করবে।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, '২০১৪ সালে একতরফা ও অগণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন আয়োজন করে আওয়ামী লীগসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন কমিশন নির্বাচন। এরপর প্রতিবাদে বিএনপিসহ সব বিরোধী দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের জন্য আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনের রূপরেখা হিসেবে ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর ‘মার্চ অব ডেমোক্র্যাসি’ শিরোনামে সমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি। ওই সমাবেশ পণ্ড করতে এবং বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২০১৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর দিবাগত গভীর রাতে বালুভর্তি পাঁচ থেকে ছয়টি ট্রাক বেগম খালেদা জিয়ার ফিরোজা বাসভবনের গেটের সামনেসহ আশপাশে অবৈধভাবে এলোমেলো করে রাখেন উল্লিখিত আসামিরা।'
'তারা রাস্তার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান-২-এর ফিরোজা বাসভবনের গেট বন্ধ করে দেয় উল্লেখ করে অভিযোগ করা হয়, ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অন্যায়ভাবে আসামিরা রাস্তার ওপর অবৈধভাবে অন্তর্ঘাতমূলক কার্যক্রম করে রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে জনসাধারণের চলাচল ও বেগম খালেদা জিয়া যেন সমাবেশে যোগ দিতে না পারেন, সেজন্য রাস্তার ওপর ত্রাস সৃষ্টি করে গণতন্ত্র অধিকারকে হরণ করে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এতে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। যা সংবিধান পরিপন্থি ও গণতন্ত্রের অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ।'
মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, 'কর্মসূচি অনুযায়ী ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর সকাল ৯টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে গুলশান-২ ফিরোজা ভবন থেকে বের হওয়ার প্রস্তুতি নেন। সেদিন বেআইনি ও অবৈধভাবে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে অন্তর্ঘাতকমূলক কার্যকলাপ করার জন্য উল্লিখিত আসামিরাসহ অন্যান্য সাদা পোশাকধারী ও পুলিশের পোশাক পরা অবস্থায় অজ্ঞাত অফিসার ও সদস্যরা মিলে রাস্তায় বের হতে বাধা দেয় এবং অবৈধভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আটক করে রাস্তার আশপাশে বালুর ট্রাকসহ অন্যান্য ট্রাক দিয়ে ব্যারিকেড করে আটক করে রাখে, যাহা সংবিধান ও গণতান্ত্রিক পরিপন্থি।'
'শান্তিপূর্ণ সমাবেশে যোগদান করার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বারবার চেষ্টা করা সত্ত্বেও আসামিরা অবৈধভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বেআইনিভাবে আটকে রাখে অভিযোগ করে বলা হয়, আসামিরা বেগম জিয়াকে শান্তিপূর্ণ সমাবেশে যেতে না দেওয়া, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ পণ্ড করা, সংবিধান লঙ্ঘন করা ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে অবৈধভাবে আটক রাখার অপরাধ করেছে।'