দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে অবারও নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘন্টায় ধরলার বৃদ্ধি পেয়েছে । তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, পানি বাড়লেও এখনও সব নদ-নদী বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে এই অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা নেই।
এদিকে গত দু’দিন ধরে অবিরাম ধারায় ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। কখনও হালকা আবার কখনও ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি যেন থামছে না। ফলে কর্মস্থলে যেতে নানান বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে সব পেশা শ্রেণীর মানুষজনের। বিশেষ করে কাজের সন্ধানে ছুটে চলা শ্রমজীবি মানুষজন পড়েছেন চরম বিপাকে। বৃষ্টিপাত আরো চারদিন থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিছেন আবহাওয়া অফিস।
পাউবো কুড়িগ্রামের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, শনিবার (৫ অক্টোবর) সকাল ৯ টার প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ধরলা পানি সেতু পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিস গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে ১৩৮ মিলিমিটার। এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায় জেলার কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাতে সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটি।
কুরুষাফেরুষা গ্রামের দিন মজুর কাশেম আলী ও রতন চন্দ বলেন, দুইদিন থেকে বৃষ্টি। কাজ কাম বন্ধ। টাকার চিন্তায় কিছু ভালো লাগে না। রাত পোহালে কিস্তি। ঘরে নাই বাজার সদাই নাই। খুব দুঃশ্চিন্তায় পড়েছি আমরা। এভাবে বৃষ্টি হলে মানুষের চলাফেরা কাজকর্ম সব বন্ধ হয়ে যাবে।
বালারহাট বাজার ভ্যান চালক জহুরুল ইসলাম ও হাক্কু মিয়া জানান, যে বৃষ্টি পাত হচ্ছে কাল থেকে কোন ধরণের ক্ষ্যাপ মারতে পারি নাই। জানি না বৃষ্টি পাত কতদিন চলবে।
এদিকে দুদিন ধরে যে হারে বৃষ্টি শুরু হয়েছে এভাবে বৃষ্টি পড়তে থাকলে পানিতে বেগুন, শাক, লাউ ও বাদামসহ বিভিন্ন ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাওযার আশঙ্কা করছে চাষিরা। সেই সাথে টানা বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে ধরলাসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সময়ে স্বল্প মেয়াদী বন্যার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
কুড়িগ্রাম রাজারহাট উপজেলার কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, গত ২৪ ঘন্টা কুড়িগ্রাম জেলা জুড়ে সর্বোচ্চ ১৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী আরো চারদিন কখনো হালকা ও মাঝারি সহ ভারী বৃষ্টিপাত অব্যহত থাকবে বলে জানান তিনি।
পাউবো কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, নদ নদীর পানি বাড়লেও জেলায় আপাতত বন্যার পূর্বাভাস নেই। বরং ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমারের পানি কমার পূর্বাভাস রয়েছে। ব্রহ্মপুত্র আগামী ৫ দিন বাড়লেও বিপদসীমা অতিক্রম করার পূর্বাভাস নেই।
এইচএ