ঢাকাই সিনেমার শীর্ষ নায়ক শাকিব খানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও কুৎসা রটানোর অভিযোগে প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করা হয়েছিল। তবে প্রযোজকের বিরুদ্ধে চিত্রনায়কের আনা অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রমাণিত হয়নি। পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা যায়, বাদীপক্ষ নারাজির আবেদন করলেও তদন্তে পর্যাপ্ত উপাদান না থাকায় ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এ মামলা খারিজ করে দেন। ফলে প্রযোজক রহমত উল্লাহ মামলার দায় থেকেও অব্যাহতি পেয়েছেন।
যদিও এ মামলার পুনরায় তদন্ত চেয়ে উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন শাকিবের আইনজীবী খায়রুল হাসান।
প্রযোজকের আইনজীবী বলেন, রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে শাকিবের সাইবার ট্রাইব্যুনালে যে মামলাটি করেছিলেন, প্রাথমিকভাবে সেই অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় গেল ১ সেপ্টেম্বর মামলাটি খারিজ করার নির্দেশ দিয়ে নিষ্পত্তি করেন আদালত। এতে মামলার দায় থেকেও অব্যাহতি পেয়েছেন প্রযোজক রহমত উল্লাহও।
অন্যদিকে উচ্চ আদালতে যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে গণমাধ্যমে শাকিবের আইনজীবী বলেন, এই মামলার নারাজীর ধার্য তারিখে সময়ের আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন। একইসঙ্গে মামলাটি খারিজ করে দেন। তাই এই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গেল বছরের ২৭ মার্চ প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে এই মামলা করেন শাকিব। ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জুলফিকার হায়াতের আদালতে উপস্থিত হয়ে মামলাটি করেন তিনি।
আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে শাকিব বলেন, রহমত উল্লাহ হঠাৎ করে টেলিভিশনে এসে আমার নামে মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে বক্তব্য দিয়ে পালিয়ে যান। তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়া থেকে আমি নাকি দুইবার পালিয়ে এসেছি। অথচ, অস্ট্রেলিয়ায় আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের কোনো অভিযোগ নেই এবং কোনো মামলাও হয়নি।
শুনানি নিয়ে আদালত পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। সেদিন আদালত থেকে বের হওয়ায় পর শাকিবের আইনজীবী গণমাধ্যমে বলেন, টেলিভিশনে মিথ্যা ও মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ায় রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা করেছি আমরা। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।
শুধু তাই নয়, প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও হত্যার হুমকির অভিযোগ এনে ২০২৩ সালের ২৩ মার্চ দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিবের আদালতে আরও একটি মামলা করেন শাকিব। কিন্তু প্রযোজকের বিরুদ্ধে মামলা করে বারবার নিজেই আদালতে অনুপস্থিত থেকেছেন শাকিব।
এখন পর্যন্ত নিজের আইনজীবীর মাধ্যমে আদালত থেকে মোট ৬ বার সময় চেয়ে নিয়েছেন এই চিত্রনায়ক। নির্ধারিত সব কয়টি তারিখে সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকে এসে হাজিরা দেন বিবাদী রহমত উল্লাহ। অথচ, দেশে থাকার পরও একবারও আদালতে উপস্থিত হননি শাকিব।
শুধু শাকিবই নন, মানহানির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেছেন প্রযোজক রহমত উল্লাহও। ২০২৩ সালের ১৩ এপ্রিল ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে দণ্ডবিধি ৪৯৯, ৫০০ ও ৫০১ ধারায় মামলাটি করেন রহমত উল্লাহর আইনজীবী ড. মো. তবারক হোসেন ভূঁইয়া। বর্তমানে মামলাটি চলমান রয়েছে। পিবিআই ইতোমধ্যেই এই মামলার তদন্ত রিপোর্ট আদালতে দাখিল করেছে বলেও জানা গেছে।