নেত্রকোনায় ৪১ জন কৃষকের চাষ করা ধান থেকে বাছাই করে পছন্দের ধানের জাত নিয়ে কৃষক মাঠদিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) জেলার আটপাড়া উপজেলার রামেশ্বরপুর গ্রামে এ মাঠ দিবস অনুষ্টিত হয়েছে। বেসসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক এর সহযোগিতায় তুষাই পাড়ের কৃষক সংগঠনের উদ্যোগে ৪০০ স্থানীয় জাতের ধান গবেষণার করে কৃষকের পছন্দের ধানের জাত বাছাইয়ের মাধ্যমে এ মাঠদিবসটি করা হয়। মাঠদিবসকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরের ন্যায় এবছর কলমাকান্দা, তারাকান্দা, নেত্রকোনা সদর, কেন্দুয়া, আটপাড়া, মদন, ফুলপুর ময়মনসিংহ সদরসহ আট উপজেলা থেকে ৪১ জন কৃষক এসেছেন মাঠে চাষ করা ধানের জাত থেকে পছন্দের বাছাই করা ধানের জাত।
মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জনাব নুরুজ্জামান, জেলা জনসংগঠনের সভাপতি সায়েদ আহমেদ খান বাচ্চু খানসহ উদ্যোগী কৃষকেরা।
অতিথিরা প্রথমেই আগত কৃষকেরা মাঠে চাষ করা শতশত জাতের ধানজাত পরিদর্শন করেন। কৃষকেরা মালশিরা, কাডিডিট, মালশিরা, হেকিম ধান, কাবুনডুলান, পাইজাম, বিরই, বোরো আবজি, বিশালীবিন্নী, আপাচি, ময়নামতি, চিনিশাইল, গুনসি, গিঘজ, খেকশিয়াল, এম—২৫২, ব্রিডিং আট জাতের ধান পছন্দ করেন। পছন্দের কারণ হিসেবে কৃষকেরা বলছেন, ফলন ভালো,রোগবালাই কম,শীষে পুষ্ট ধানের সংখ্যা বেশী, ধানগাছ হেলে পড়েনা, ও কুশির সংখ্যা বেশী।পরবর্তীতে কৃষকেরা গত দিনগুলোতে যেসব ধানজাত পছন্দ করেছেন সেই ধানগুলো প্লেকার্ড প্রদর্শন করেন।
গত বছরগুলোতে কৃষকেরা পছন্দ করে তুলসিমালা, বিন্নী ,বাদশাভোগ, কার্তিক বিন্নী, চিনিগুড়া, মালশিরা, খেকশিয়াল, গেংগেং বিন্নী বোরো, আগাম শাইল, বগার্ বোরো, বিরই, বাঁশফুল, সোনালী পাইজাম, ভোলানাথ, রাজলক্ষী বিলাস, সাদাকুমড়ি ,চিনিগুড়া ,সতীন, ঋতু পাইজাম, খাইনল, খামা, গচি, লাফা, গুটিস্বর্ণা, ভারত, আইজং, মকবুল, লক্ষীবিলাস, ইয়র চাউল, গারো বিনি, সুবাস আবজি, নুইন্যা, আগুন্যা বিন্নী, ভূইট্টা আইজং, রতিশাইল, হেমার, বিশালী বিন্নি, বিন্নি, জেসমিন, খাইনল, বাদশাভোগ, কাটারীভোগ, কালিজিরা, ফুলবাইন, সিলেট বালাম, কাডিডিট, মালা, ময়রম, বদ্দিরাজ, বোরো আবজী, বোরো ঝাপি, গাজী, খাসিয়া বিনি, চান্দিনা, সাঁথিয়া, অহনঢেপি, বিরন, চানমুনি, আসকল, লোহাজং, বাশিরাজ, চিনিসাগর, পাখিবিরন, রাধুনিপাগল, কুমড়ী, জাতগুলো নিজ নিজ এলাকায় চাষ করছেন।
প্রধান অতিথি জনাব নূরুজ্জামান বলেন, আমাদের অনেক ধানের জাত হারিয়ে গেছে। কৃষকসংগঠন ও বারসিক অনেক স্থানীয় জাত সংগ্রহ করে চাষ করে গবেষণায় বাছাই করে কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। আজ অনেক কৃষক এখানে উপস্থিত হয়ে ধান বাছাই করছেন। স্থানীয়জাত গুলো কৃষকের মাঝে সম্প্রসারিত হোক।” তারাকান্দা উপজেলার কৃষক মো. ইব্রাহিম বলেন, আমি গত বছর মালশিরা,বিরই,লোহাজং ধান বাছাই করে নিয়েছিলাম সেই ধান চাষ করে লাভবান হয়েছি। এই বছর আবার আইছি নতুনভাবে বাছাই করার জন্য।
কৃষকের বীজ কৃষকের সম্পদ। এই বীজ সম্পদের অধিকার আদায়ের জন্য নেত্রকোনার কৃষক সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে কাজে করে যাচ্ছে।
পিএম