কুড়িগ্রামের উলিপুরে হাতিয়া গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে হাতিয়া ইউনিয়নের অনন্তপুর শহীদ মিনারে জাতীয় ও কালো পতাকা উত্তোলন, শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, র্যালী, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবছর ধারাবাহিকভাবে ১৩ নভেম্বর হাতিয়া গণহত্যা দিবসটি পালন করে আসছে আয়োজক কমিটি।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব হোসেন ম-লের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক এমপি আব্দুল বারী সরকার, বিশেষ অতিথি যুগ্ন-আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন হাতিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল বাতেন মিয়া। এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বারী সরকার বলেন, 'দেশে এত বড় একটি গণহত্যার ঘটনা হাতিয়াতে ঘটলেও, স্বাধীনতার ৫২ বছরেও জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি পায়নি। পুনর্বাসনের জন্য কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি স্বজন হারা পরিবারগুলোর। শীঘ্রই ১৩ই নভেম্বরের হাতিয়ার এ গণহত্যাকে জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।'
জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ১৩ নভেম্বর এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকারদের সহযোগিতায় হাতিয়া ও বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের ৬৯৭ জন নারী-পুরুষ ও শিশুকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়। ধর্ষণ করা হয় শত শত নারীকে। ফিরে যাওয়ার সময় জ্বালিয়ে দেয় গ্রামের পর গ্রাম। জেলার উলিপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় নয় কিলোমিটার পূর্বে ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্ঠিত হাতিয়া ইউনিয়নের দাগারকুটি গ্রামের ঘুমন্ত এসব নিরীহ মানুষকে ধরে এনে পাকিস্তানি হায়েনারা নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে। স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে জঘন্যতম নারকীয় এ হত্যাকা-ের ইতিহাস জাতীয় পর্যায়ে তেমন গুরুত্ব না পেলেও উলিপুরে মানুষের কাছে স্মরণীয় হয়ে আছে।##
এমআর