রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিধান আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনে থাকছে না বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
বুধবার সচিবালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে খসড়াটি অনুমোদন দেওয়া হয়। আজই প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে অফিস করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৈঠক শেষে সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
এর আগে, মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেছিলেন, কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ থাকলে ও আদালত মনে করলে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এই সুপারিশ করা যাবে। এমন বিধান রেখে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) অধ্যাদেশের সংশোধনী প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করা হয়েছে।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৪’–এর খসড়াটি উপদেষ্টা পরিষদের বেঠকে উপস্থাপন করা হয়েছিল এবং এটি গৃহীত হয়েছে।
তিনি বলেন, তবে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়েছে উপদেষ্টা পরিষদে। উপদেষ্টা পরিষদ মনে করেছে আমরা যে অধ্যাদেশের সংশোধনী করেছিলাম, সেখানে সংগঠনকে শাস্তি দেওয়ার বিধান ছিল। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে বলা হয়েছিল, কোনো সংগঠনকে শাস্তি দেওয়ার যদি প্রয়োজন মনে করে, যদি মনে করে শাস্তি দেওয়া দরকার, তাহলে ট্রাইব্যুনাল শাস্তি দেওয়ার সুপারিশ করতে পারবে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে।
আজকে উপদেষ্টা পরিষদের আলোচনায় বলা হয়েছে, ‘আমরা এই বিচারকে অন্য কোনো বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত করতে চাই না। রাজনৈতিক দল বা কোনো সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্ন এলে এই আইনকে অযথা প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। আমরা সেই সুযোগ দিতে চাই না। আমরা একদম স্বচ্ছতার সঙ্গে বিচারটি করতে চাই। সে জন্য এই বিধান বাতিল করা হয়েছে।
আসিফ নজরুল বলেন, তারা অনুভব করেছেন, কোনো রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের অপরাধমূলক কার্যক্রমের জন্য যদি নিষিদ্ধ করার প্রয়োজন হয়, যদি নিষিদ্ধ করার দাবি ওঠে সমাজে, তাহলে অন্যান্য আইন রয়েছে। সেসব আইনে নিষিদ্ধ করার বিধান আছে। সন্ত্রাস দমন আইনে রয়েছে, নির্বাচনী আইনে রয়েছে, ‘দ্য পলিটিক্যাল পার্টিস অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৮’–এ রয়েছে। কাজেই এখানে [‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) সংশোধন অধ্যাদেশ] এই বিধানটি নেই দেখে জনমতের প্রতি, জনদাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ থাকল না এটা নয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনে থাকল না, কিন্তু দেশে প্রচলিত অন্যান্য আইন রয়েছে। রাজনৈতিক ঐকমত্য হলে...সেটা পরে বিবেচনা করা হবে।
এসএফ