কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে হিলচিয়া ইউনিয়নে চার মাস ধরে পরিষদের কার্যালয়ে আসছেন না চেয়ারম্যান মাজহারুল হক নাহিদ। গত (০৫ আগস্টের) পর একদিনের জন্যও অফিসে আসেননি তিনি, সেবা বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষজন। এ নিয়ে ইউনিয়নের সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সরেজমিনে বেশ কয়েকজন সেবাগ্রহীতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চেয়ারম্যান পরিষদে চারমাস ধরে না আসায় সেবা পেতে তাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। দ্বারে দ্বারে ঘুরেও সেবা পাচ্ছেন না সেবাগ্রহীতারা।
পরিষদে গিয়ে দেখা যায়, ইউনিয়ন উদ্যোক্তার রুমে নিয়োগকৃত উদ্যোক্তা নেই। তার স্থলে একজন যুবক আছেন যার কাছে কাজ করার পাসওয়ার্ড নেই।
পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রঞ্জন বণিক সূত্রধরকে দেখা যায় ব্যস্ততার মধ্যে সময় কাটাতে। পরিষদে চেয়ারম্যান নেই এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকে পরিষদে আসেননি চেয়ারম্যান । মানুষজন চরম ভোগান্তিতে আছে। সময়মতো সঠিক সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। পাসওয়ার্ড চেয়ারম্যানের কাছে থাকায় অনলাইন সেবা দিতে পারছেন না তারা। তিনি আরও বলেন, দু'সপ্তাহ ধরে বর্তমান চেয়ারম্যান তার বাড়ির সামনে একটি পুরাতন ভবনে বসে কাজ করছেন।
আপনি এই পরিষদে আর চেয়ারম্যান কয়েক কিলোমিটার দূরে আরেকটি পুরাতন ভবনে বসে কাজ করছেন, দু'জন একসাথে কেনো বসে কাজ করছেন না এমন প্রশ্ন করা হলে প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন, ওটাতো পরিষদের ভবন না, আমি ওখানে যেতে পারি না। পরিষদের জন্য সরকার নির্ধারিত ভবনে আমি অফিস করছি।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান মাজহারুল হক নাহিদদের সাথে ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ৫ আগস্টে সরকার পতনের পর ওরা পরিষদে (বালিগাঁও) তালা মেরে দিয়েছিলো। তাই আমি ওখানে যাই না। তবে বর্তমানে আমার বাড়ির সামনে সরিষাপুরে একটি পুরাতন ভবনে বসে সেবা দিচ্ছি।
নতুন ও পুরাতন পরিষদ ভবনের দূরত্ব প্রায় ২০ থেকে ৩০ টাকা ভাড়ার পার্থক্য। নতুন ও সরকার নির্ধারিত পরিষদের ভবনে (বালিগাঁও) বসেন প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও অন্যান্য নির্ধারিত অফিসের লোকজন। আর পুরাতন (সরিষাপুর) ভবনে বসছেন চেয়ারম্যান ও উদ্যোক্তা। ভিন্ন ভিন্ন স্থানে দু'জনে অফিস করায় চরম ভোগান্তিতে আছে জনগণ।
চেয়ারম্যান মাজহারুল হক নাহিদের দাবি স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী লোকের ভয়ে তিনি পরিষদে যেতে পারেন না। তবে কে বা কারা সেই প্রভাবশালী এ বিষয়ে তিনি মুখ খুলেননি।
জানা যায়, মাজহারুল হক নাহিদ আওয়ামী সমর্থিত চেয়ারম্যান। তিনি ৫ আগস্টের পর করা একটি মামলার আসামী। তবে তার দাবি বর্তমানে তিনি জামিনে আছেন। জনগণের ভোগান্তি লাগবে চেয়ারম্যান যেনো নিয়মিত পরিষদে বসেন, না হয় প্যানেল চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হোক তা না হলে চেয়ারম্যান যেনো পরিষদে বসতে পারেন প্রশাসন এমন ব্যবস্থা যেনো দ্রুত নিশ্চিত করে এমনটাই দাবি স্থানীয়দের।
এমআর