এইমাত্র
  • সৌদি প্রবাসীদের উদ্দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের সতর্কবার্তা
  • শেখ পরিবারের দুর্নীতি অনুসন্ধানে ৫ কর্মকর্তা নিয়োগ
  • বালিকা বিদ্যালয়ের ভর্তির লটারিতে ছেলে শিক্ষার্থীর নাম!
  • দুই শিক্ষার্থী হত্যা, জড়িতদের ধরতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
  • পঞ্চগড় সীমান্ত থেকে কিশোরকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
  • ক্ষমা চাইলেন মেহজাবীন
  • চতুর্থ কিস্তিতে সাড়ে ৬৪ কোটি ডলার পাচ্ছে বাংলাদেশ
  • আল্লাহর ওয়াস্তে সংযত হোন, আল্লাহকে ভয় করুন: আজহারী
  • তাবলিগের দুই গ্রুপকে ছাড় দেওয়ার আহ্বান
  • মোদির বিতর্কিত পোস্টের জবাবে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরলো সরকার
  • আজ বৃহস্পতিবার, ৫ পৌষ, ১৪৩১ | ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
    জাতীয়

    আল্লাহর ওয়াস্তে সংযত হোন, আল্লাহকে ভয় করুন: আজহারী

    সময়ের কণ্ঠস্বর রিপোর্ট প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪১ পিএম
    সময়ের কণ্ঠস্বর রিপোর্ট প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪১ পিএম

    আল্লাহর ওয়াস্তে সংযত হোন, আল্লাহকে ভয় করুন: আজহারী

    সময়ের কণ্ঠস্বর রিপোর্ট প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪১ পিএম

    বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের দখল নিয়ে তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, আলেম মিজানুর রহমান আজহারী। তিনি বিবদমান দুই পক্ষকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

    বুধবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা বলেন মিজানুর রহমান আজহারী।

    মিজানুর রহমান আজহারীর ফেসবুক স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো—

    সাত সকালে ঘুম ভাঙতেই এমন একটা খবর শুনে, রীতিমতো আঁতকে উঠেছি। অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছি। হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে ভীষণ। আহারে, আমার দেশে এক মুসলিম-ভাইয়ের হাতে আরেক মুসলিম-ভাই রক্তাক্ত! এই দৃশ্য কেমন করে সহ্য করি!

    মদিনার আউস ও খাযরাজ গোত্রের ভেতর ছিল শত বছরের শত্রুতা। দা-কুড়াল সম্পর্ক বললেও কম হবে। সেই শত্রুতা ঘোচাতে নবিজির এক ঘণ্টাও সময় লাগেনি। কেননা, তিনি সমস্যার একেবারে গোড়ায় হাত দিয়েছিলেন। নবিজি দেখলেন, দুই গোত্রের মাঝেই ভীষণ-রকম ইগো-প্রবলেম, নিজেকে সেরা ভাববার বিশ্রী প্রবণতা। নবিজি তাই শুনিয়ে দিলেন তাওহিদের সবক : ‘শোনো, তোমরা কেউই বড় নও। বড়ত্ব একমাত্র আল্লাহর শান। তাই একবার যখন আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব মেনেই নিয়েছো, তখন আর নিজেকে ছোটো ভাবতে বাধা কোথায়? আল্লাহর ইচ্ছার সামনে নিজেদের সঁপে দাও। সব ভেদাভেদ ভুলে যাও।’

    নবিজির এই আপ্তবাক্য সেদিন স্ফুলিঙ্গ হয়ে, জ্বালিয়ে দিয়েছিল সমস্ত শত্রুতা আর ইগো। আউস আর খাযরাজ হয়ে গেল ভাই ভাই। এক দেহ, এক প্রাণ।

    তাবলীগের নেতৃত্বস্থানীয় মুরুব্বিদের বলবো, দেশের সবচেয়ে বড় দাওয়াতি প্ল্যাটফর্ম তাবলীগ জামাতের এই সংকটে, আপনাদের দায়িত্বশীল ভূমিকার কোনো বিকল্প নেই। আপনারা আলোচনায় বসুন। তবে ফলপ্রসূ আলোচনার পূর্বশর্ত হলো: দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে চিন্তা করতে পারা। একে-অপরকে ছাড় দেবার মানসিকতা রাখা। মনে রাখবেন, বিষয়টা কেবল আর দলীয় গণ্ডিতে আটকে নেই। এটার সঙ্গে এখন বাংলাদেশের মুসলিমদের ভাবমূর্তি জড়িত।

    আপনারা খুব ভালো করেই জানেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশের গণমাধ্যমগুলো ওঁৎ পেতে থাকে কখন এ দেশের মুসলিমদের একহাত নেওয়া যায়। সেখানে আপনারাই যদি বল ঠেলে দেন ওদের কোর্টে, সেটা খুবই দুঃখজনক। গতকালের ঘটনা নিঃসন্দেহে তাদেরকে সুবিধা দেবে। তারা এ ইস্যু ব্যবহার করে, এ দেশের ইসলামি আন্দোলন ও দলগুলোকে বিতর্কিত করবার চেষ্টা চালাতে পারে।

    সেইসঙ্গে এ ঘটনা তাবলীগের দায়িত্বশীলদের সামনে, আত্মসমালোচনার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। বছরের পর বছর ধরে আপনারা কোন সবক দিলেন সাথীদের? আপনারা কি তাদেরকে ‘এক উম্মাহ’ কনসেপ্ট শেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন? আপনারা যথাযথ তারবিয়্যাত দিতে পারেননি বলেই, সাথীরা আজ সত্যিকার শত্রু চিনতে ভুলে গিয়ে, নিজেদেরকেই শত্রু ভেবে বসে আছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে তাবলিগের দুই পক্ষ যার যার মতো কাজ করছে, কিন্তু এমন মারামারি তো হচ্ছে না। কারণ তাদের মধ্যে উম্মাহ স্পিরিট আছে। উম্মাহ স্পিরিটকে যতো বড় করে তোলা যাবে, দলীয় স্বার্থ তাদের কাছে তত নগণ্য হয়ে উঠবে।

    শামের দিকে দৃষ্টি ফেরান। সেখানকার বিজয়ের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে—ঐক্য। অন্তত দশটা বড় বড় গ্রুপ সেখানে লড়াই করেছে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে। প্রত্যেকটা গ্রুপই চিন্তা ও মননে আলাদা। কিন্তু মুসলিমদের স্বার্থের প্রশ্নে, দেশের নিরাপত্তার প্রশ্নে, ক্ষমতার লোভ বিসর্জন দিয়ে তারা এক ছাতার নিচে এসে দাঁড়িয়েছে। দিকে দিকে যখন মুসলিমদের ঐক্যের সুবাতাস বইছে, তখন আমার মাতৃভূমিতে কেন ভেদাভেদের কালোছায়া?

    তাবলীগের সাথীভাইদের বলবো, আল্লাহর ওয়াস্তে সংযত হোন। আল্লাহকে ভয় করুন। মুসলিম ভাইয়ের রক্ত ঝরানো আর যা-ই হোক, নবিজির উম্মতের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। ওটা স্রেফ আসাবিয়্যাত তথা দলবাজি। আর আসাবিয়্যাতের পরিণতি কত ভয়াবহ, তা নবিজির জবানিতেই শুনুন : ‘যে আসাবিয়্যাতের দিকে ডাকে, সে আমার দলভুক্ত নয়। যে আসাবিয়্যাতের জন্য লড়াই করে, সে আমার দলভুক্ত নয়। আর আমার দলভুক্ত নয় সে-ও, যে আসাবিয়্যাতের ওপর মৃত্যুবরণ করে।’ [সুনান আবূ দাউদ: ৫১২১]

    এসএফ

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…