এইমাত্র
  • আরও দুই নেতাকে সুখবর দিল বিএনপি
  • পুলিশকে অত্যন্ত সতর্ক থাকার নির্দেশ
  • আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য কঠোর হচ্ছে ইউরোপ, না ছাড়লে হবে জেল
  • চীনের কাছে ভারতীয়দের নিশানা না করার আশ্বাস চায় ভারত
  • জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা জারি
  • জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর সুনামির আঘাত
  • নাগরিকদের চীন ভ্রমণ নিয়ে সতর্কতা জারি ভারতের
  • বিশ্বরেকর্ড গড়ার প্রত্যয়ে বিজয় দিবসে সর্বাধিক পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং
  • ফেইসবুক পোস্টে কমেন্টকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ৫
  • জুনিয়র হকি বিশ্বকাপের চ্যালেঞ্জার ট্রফি বাংলাদেশের
  • আজ মঙ্গলবার, ২৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    পানির দরে মিলছে পান, টিকে থাকাটাই বড় চ্যালেঞ্জ চাষীদের

    তারিকুল ইসলাম সুজন, কালকিনি (মাদারীপুর) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৫, ০৩:২৪ পিএম
    তারিকুল ইসলাম সুজন, কালকিনি (মাদারীপুর) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৫, ০৩:২৪ পিএম

    পানির দরে মিলছে পান, টিকে থাকাটাই বড় চ্যালেঞ্জ চাষীদের

    তারিকুল ইসলাম সুজন, কালকিনি (মাদারীপুর) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৫, ০৩:২৪ পিএম

    পান বিক্রি হচ্ছে পানির দামে, তবে থেমে নেই উৎপাদন খরচ, যা বৃদ্ধি পাচ্ছে অস্বাভাবিকভাবে। লাভ তো দূরের কথা, টিকে থাকাটাই যেন বড় চ্যালেঞ্জ এখন পান চাষীদের জন্য। যেখানে এ মৌসুমে ১ বিড়া (৬৪ টি পান) পানের দাম থাকার কথা ১০০-১৫০ টাকা, সেখানে বাজারে ১ বিড়া পান বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫ থেকে ২০ টাকার মধ্যে। কোথাও আবার ১ ও ২ টাকায়ও মিলছে এক বিড়া পান। যা দেখে হতাশ পান চাষীরা। লাভের কথা তো ভাবছেই না, বরং কিভাবে শোধ করবে স্থানীয় ও এনজিওর কাছ থেকে নেওয়া ঋণের টাকা। তবে উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, সরকারীভাবে নতুন উদ্যোক্তা ও পানের রপ্তানি বাড়াতে পারলেই চাষী পাবে ন্যায্য দাম, আয় হবে বৈদেশিক মুদ্রা।

    মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় পান চাষ হয় প্রায় ১৮০ হেক্টর জমিতে। এ অঞ্চলে পান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে বহু কৃষক। গত কয়েক বছর পানের দাম বেশি পাওয়া নতুন নতুন কৃষক উদ্বুদ্ধ হয়ে এসেছে এ পেশায়। তবে বিপাকে পড়েছে এ বছরে তারা। নতুন চাষী কিংবা পুরানো, সবাই আছে টিকে থাকার লড়াইয়ে। পানের দাম যেমন কম, তেমনি উল্টো চিত্র উৎপাদন খরচে। বেড়েছে সারের দাম, শ্রমিক মজুরী, কীটনাশক, ও বিভিন্ন ধরনের উপকরণের। এক দিকে উৎপাদন খরচ বেশি, অন্য দিকে ন্যায্য মূল্য না পেয়ে লোকসানের মুখে পড়েছে চাষীরা। পান বিক্রি হচ্ছে ১ থেকে ২ টাকায় এবং ৫ থেকে ২০ বা ২২ টাকা, অর্থাৎ প্রতি পানের বরজে খরচ হচ্ছে ২৫০০ টাকা আর পান বিক্রি করে পাচ্ছে ৫০০ টাকা। পানের বরজ প্রতি ক্ষতি হচ্ছে ২০০০ টাকা। এমতাবস্থায় পানের উৎপাদন খরচই পাচ্ছে না চাষীরা, কিভাবে চালাবে সংসার বা পরিশোধ করবে লোনের টাকা। চরম হতাশায় মধ্যে রয়েছে পান চাষীরা। অনেকে বলছে, এরকম চলতে থাকলে বাড়ি ঘর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। পাইকারী ব্যবসায়ী কিংবা আড়ৎদারেরা বলেছে, এরকম পরিস্থিতিতে পড়েনি তারা কখনো।

    পান চাষী সাইফুল বলেন, এ বছর পানের দাম কম হওয়ায় শ্রমিকের মজুরীর টাকা দিতে পারছি না ঠিক সময়ে। আমার ১ হাজার পানের বরজ রয়েছে। যেখানে ৭০০ টাকা দরে প্রতিদিন ১০ জন শ্রমিক কাজ করে, সাথে দুই বেলা খাবার। কিভাবে এই খরচ বহন করবো বুঝতে পারছি না। পানের দাম এতো কম দরে চলতে থাকলে আগামী দিনগুলোতে ভয়ংকর বিপদের মুখে পড়বে পান চাষীরা। চাষীও থাকবে না, পান চাষও থাকবে না।

    আরেক চাষী ফয়সাল হোসেন বলেন, এরকম চলতে থাকলে ভিক্ষার থালা হাতে নেয়া ছাড়া আর কোন রাস্তা থাকবে না তাদের।

    আরেক চাষী সিরাজ খলিফা বলেন, গত বছর এই দিনে এক বিড়া পানের দাম ছিল ১৫০ টাকা আর এ বছর মাত্র ১০ থেকে ২০ টাকা। এরকম দাম আগামী তিন মাস থাকলে পানের বরজ বলতে কিছু থাকবে না। দেনার দায়ে বাড়ি ছাড়তে হবে অনেককেই।

    তবে পান চাষীরা আশায় বুক বেঁধে বলেন, সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিলে চাষী পাবে ন্যায্য দাম এবং বাঁচবে কৃষক। ঘর ছাড়া হতে হবে না কাউকে। এ বিষয়ে আড়ৎদার সাইদুর রহমান বলেন, ব্যবসায়িক জীবনে এমন সময়ের সম্মুখীন হয়নি কখনো। এ আধাঁর কবে কাটবে জানি না। চাষীদের সাথে আমরাও ভাল নেই। লোকসানের মুখে আমরাও আছি।

    কালকিনি উপজেলা কৃষি অফিসার মিল্টন বিশ্বাস বলেন, সরকারীভাবে নতুন উদ্যোক্তা ও পানের রপ্তানি বাড়াতে পারলেই চাষী পাবে ন্যায্য দাম, আয় হবে বৈদেশিক মুদ্রা।

    পান চাষীদের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতে হলে প্রয়োজন সরকার, ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারকদের সমন্বিত উদ্যোগ। অন্যথায় আগামী মৌসুমে পান চাষে আগ্রহ হারাতে পারে পান চাষীরা, যার প্রভাব পড়বে দেশের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক পানের বাজারে।

    এইচএ

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    Loading…