তুরস্কে ফুটবল ম্যাচে জুয়া খেলার অভিযোগে ১ হাজার ২৪ ফুটবলারকে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল দেশটির ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা টিএফএফ। সেই রেশ কাটতে না কাটতে এবার আলোচনায় এলো ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ। ব্রাইটন অ্যান্ড হোভ অ্যালবিয়ন ক্লাবের মালিক টনি ব্লুমের বিরুদ্ধে উঠেছে ৬০ কোটি পাউন্ড—বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার জুয়া সিন্ডিকেটে জড়িত থাকার অভিযোগ।
উচ্চ আদালতে জমা হওয়া একটি নথিতে অভিযোগ করা হয়েছে, প্রায় ৬০০ মিলিয়ন পাউন্ডের একটি আন্তর্জাতিক বেটিং নেটওয়ার্কের সঙ্গে ব্লুমের যোগাযোগ ছিল। এই চক্র পরিচালনায় ব্যবহার করা হতো জর্জ কট্রেলের নামে খোলা ব্যাংক হিসাব। কট্রেল ছিলেন রাজনৈতিক দল ‘রিফর্ম ইউকে’র সাবেক চিফ অব স্টাফ এবং দলের নেতা নাইজেল ফারাজের ঘনিষ্ঠ সহযোগী।
নথি অনুযায়ী, বাজির হিসাবগুলো ছিল কট্রেলের নামে, তবে নিয়ন্ত্রণ ছিল চক্রের হাতে। অভিযোগ উঠেছে, এসব হিসাব ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ফুটবলসহ নানা খেলায় বড় অঙ্কের বাজি ধরা হতো। আর সেই সিন্ডিকেটের অর্থ প্রবাহে ব্লুমের সংশ্লিষ্টতার ইঙ্গিত করা হয়েছে।
১৯ পৃষ্ঠার এই নথি এসেছে ব্লুমের সাবেক সহযোগী রায়ান ডাডফিল্ডের দায়ের করা মামলার সূত্রে। ডাডফিল্ড দাবি করেছেন, বাজি ব্যবসা থেকে তাঁর পাওনা প্রায় ১৯ কোটি পাউন্ড এখনো পরিশোধ করা হয়নি। এই অর্থ নিয়ে বিরোধ গড়িয়েছে আদালতে।
কট্রেল সম্পর্কে নথিতে বলা হয়েছে, বাজিতে তাঁর দক্ষতা খুব একটা ছিল না; বরং নিয়মিতই তিনি বড় অঙ্কের টাকা হারাতেন। তবে তাঁর নামে থাকা হিসাবগুলোই নাকি সিন্ডিকেটের আড়াল হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে, যাতে প্রকৃত লেনদেনকারীদের পরিচয় সামনে না আসে।
টনি ব্লুম ব্রাইটনের মালিক হওয়ার আগেই পরিচিত ছিলেন পেশাদার বেটিং জগতের সফল মুখ হিসেবে। ২০০৯ সালে ক্লাবটির চেয়ারম্যান হওয়ার পর দ্রুতই তিনি ৭৫ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা নেন এবং স্টেডিয়াম অবকাঠামো উন্নয়নেও বড় বিনিয়োগ করেন।
অভিযোগ নিয়ে ব্লুম কিংবা ব্রাইটন এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে প্রিমিয়ার লিগে ক্লাব মালিকদের আচরণ ও আর্থিক স্বচ্ছতা নিয়ে যে নজরদারি বেড়েছে, এই ঘটনা সেই আলোচনাকে আরও তীব্র করবে বলেই মনে করছেন ফুটবল বিশ্লেষকেরা।
আরডি