শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে কর্মবিরতি পালন করছেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা। এদিকে বার্ষিক পরীক্ষার জন্য বাইরে অপেক্ষায় কোমলমতি একদল শিক্ষার্থী। এমন সময় শ্রেণিকক্ষের তালা ভেঙে পরীক্ষা শুরু করেন এক ইউএনও।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার শ্রীবরদী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ব্যবস্থা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনীষা আহমেদ। এ সময় উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরন নবী উপস্থিত ছিলেন।
প্রাথমিকে বেতন স্কেল দশম গ্রেডে নির্ধারণ, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির বিষয়ে জটিলতার অবসান এবং সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির দাবিতে বুধবার থেকে সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা।
এতে সংহতি জানিয়ে শ্রীবরদী উপজেলার ১৯৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও কর্মসূচি পালন করছেন। বৃহস্পতিবারও এই কর্মসূচি অব্যাহত আছে।
এর মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে বার্ষিক পরীক্ষা। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে দাবি আদায়ে শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরাও।
শ্রীবরদী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসা অভিভাবক মিজান উদ্দিন বলেন, ‘হঠাৎ পরীক্ষা বন্ধ হওয়ায় শিশুরা মানসিক চাপের মধ্যে আছে। শিক্ষকরা এতদিন দাবি জানানোর সময় পাননি। আমাদের বাচ্চাদের পড়াশোনার ক্ষতি করে কীসের আন্দোলন? সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে তাদের এই আন্দোলন।’
আরেক অভিভাবক আফজাল মিয়া বলেন, ‘কোমলমতি শিশুদের জিম্মি করে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষকরা। সরকারকে কঠোর হতে হবে, বাচ্চাদের ক্ষতি হবে, আর আমরা চেয়ে চেয়ে দেখব তা হয় না। এসব শিক্ষকদের বাদ দিয়ে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হোক।’
ইউএনও মনীষা আহমেদ জানান, ‘প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বুধবার জরুরি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শিক্ষকদের অবিলম্বে পরীক্ষায় ফেরার চূড়ান্ত নির্দেশ দিয়েছে। সেইসঙ্গে কর্মবিরতি বা শাটডাউন অব্যাহত থাকলে সরকারি চাকরি আইন, আচরণবিধি ও ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সতর্কবার্তাও দিয়েছে।’
শিক্ষকরা পরীক্ষা না নিয়ে আন্দোলন করছেন, এমন তথ্যের ভিত্তিতে শ্রীবরদী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয় বলে জানান তিনি।
এসএম