মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া কলিম উল্লাহ কলেজের অধ্যক্ষ মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজাকে বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে কলেজ অভ্যন্তরে অবস্থানকালে শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ বলছে, অধ্যক্ষ মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজা (৫৩) উপজেলার হোসেন্দি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুরের মামলায় জড়িত ছিলেন।সে মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তবে মামলার বাদি বলছেন এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
গ্রেপ্তার মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজা নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার ললাটি গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে। তিনি সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পদে ছিলেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কলেজের অধ্যক্ষের পদ নিয়ে গ্রেপ্তারকৃত মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজার সাথে স্থানীয় একটি পক্ষের দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছিলো। গজারিয়া কলিম উল্লাহ কলেজ পরিচালনার জন্য অস্থায়ী এডহক কমিটি ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে তাকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেয়। পরে সেই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে ওই মাসেই উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেন অধ্যক্ষ। গত বছরের ৭ নভেম্বর শুনানি শেষে আদালত সাময়িক বরখাস্তের আদেশটি ৩ মাসের জন্য স্থগিত করেন। পাশাপাশি অধ্যক্ষ মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজাকে বহিষ্কারের পন্থা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের রুল জারি করেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশে অধ্যক্ষ মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজার দায়িত্ব পালনে কোন বাঁধা না থাকলেও স্থানীয় একটি পক্ষ তাকে কলেজ প্রবেশে বাঁধা দিচ্ছিলেন বলে জানা যায়। সে ঘটনার জের ধরেই অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চর বলাকী গ্রামে স্থানীয় আতাউর রহমানের মেয়ে খাদিজা আক্তার এবং শুক্কুর আলীর ছেলে জান্নাত প্রেম করে পালিয়ে বিয়ে করেন। খাদিজার পরিবার ছিলো আওয়ামী লীগের পন্থি এবং জান্নাতের পরিবার ছিলো বিএনপি পন্থি। বিয়ের ঘটনাকে কেন্দ্রকরে গত বছরের ২৩ নভেম্বর ওই দুই পরিবারের লোকজনের মধ্যে মারামারি ঘটনা ঘটে। তবে ঘটনাটি অন্যদিকে প্রবাহীত করতে ওইদিন রাতেই গজারিয়া থানায় ৪৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ২০-২৫ জনকে আসামি করে ওই এলাকার বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুরের মামলা করেন ওয়ার্ডটির বিএনপি নেতা মো. মাহফুজ।তবে ওই মামলায় অধ্যক্ষ মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজার কোন নাম ছিলনা।
গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, হোসেন্দী ইউনিয়নের চর বলাকী গ্রামে ওয়ার্ড বিএনপি কার্যালয়ের ভাঙচুর ঘটনায় মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজার সম্পৃক্তরা রয়েছে। দুপুর ১২টার দিকে তাকে প্রথমে আটক করা হয়। পরে বিকেলে সে মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে মুন্সিগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
মামলার বাদী মো. মাহফুজকে এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে ফোন করা হলে তিনি বলেন, অধ্যক্ষ মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজাকে তিনি চেনেন না। এ ব্যাপারে তিনি পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।
অধ্যক্ষ অধ্যক্ষ মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজা সাংবাদিকদের বলেন, আমি একজন শিক্ষক মানুষ, আমি সোনারগাঁও উপজেলার যে এলাকায় বসবাস করি সেখান থেকে মেঘনা নদী পাড়ি দিয়ে অন্য উপজেলায় বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর করতে গিয়েছি, বিষয়টা হাস্যকর। আমার জীবনে আমি কোন দিন ওই গ্রামে যাইনি। আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার।
এইচএ