নির্মাতা হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন মিনহাজ। বানিয়েছেন নাটক, মিউজিক ভিডিও ও বিজ্ঞাপন। এরপর ২০১৮ সালে জার্মান চলে যান চলচ্চিত্র নির্মাণের উপর মাস্টার্স করতে। সম্প্রতি দেশে এসে বিয়ে করেছেন। বিয়ের পর থেকে শুরু হয় যৌতুকের জন্য তার স্ত্রী তাহামিদার উপর শ্বাশুড়ি ও ননদের অকথ্য গালিগালাজ আর নির্যাতন। যার জের ধরে মিনহাজ আজ মায়ের মামলার আসামী।
এ নির্মাতার অভিযোগ, নানা ঘটনার জের ধরে ৬ ডিসেম্বর রাতে তাহামিদার হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে স্বামী স্ত্রীর ব্যাক্তিগত চ্যাট পড়া শুরু করেন শ্বাশুরি নাসিমা আক্তার ও ননদ আফিয়া আঞ্জুম মালিহা। তখনই প্রতিবাদ করেন মিনহাজ। আর এতে ক্ষেপে গিয়ে মিনহাজকে গালিগালাজ করে শারীরিক আক্রমণ চালান তার মা ও বোন। দুজনের আক্রমণ থেকে স্বামীকে বাঁচাতে গেলে তাহামিদাও লাঞ্ছিত ও নির্যাতিত হন। ঘটনার রাতেই মিনহাজ ও তাহামিদা ফেনী সদর হাসপাতালে গিয়ে জরুরী বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করে ফেনী থানায় গিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরী করেন যার নম্বর ৪৮৫। মা ও বোন সমঝোতা স্বাক্ষর করে জিডি তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকলে পারিবারিক শান্তি রক্ষার্থে মিনহাজ রাজি হন। কিন্তু ১০ ডিসেম্বর সমঝোতার জন্য তারিখ নির্ধারণ করলেও আদালতে মা নাসিমা আক্তার মিনহাজের বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজী, স্বর্ণালঙ্কার লুট ও হত্যার চেষ্টা মামলা দায়ের করে বসেন। তাই সঙ্গত কারণেই সমঝোতার বিষয়টি বাঁধাগ্রস্ত হয়। ঘটনাটি স্থানীয় জনমনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
মিনহাজ আরও জানান, করোনার সময় যখন কাছের মানুষরা একে অন্যের থেকে দূরে সরে যাচ্ছিলো তখন সুদূর জার্মানি থেকে নিজ পরিবারের পাশে দাঁড়াতে মিনহাজ ছুটে এসেছিলেন বাংলাদেশে। কিন্তু মিনহাজের জার্মান ব্যাংক একাউন্টগুলোতে টাকার পরিমাণ জানতে পেরে ভয়ভীতি দেখিয়ে বোনের ষড়যন্ত্রে তার মা তাকে পাগল সাজিয়ে ফেনী সাইকিয়াট্রিক হাসপাতালে নিয়ে তাকে একটি কেবিনে আটকে রাখেন। কিন্তু সেখানকার ডাক্তার বা হাসপাতালের কেউ মিনহাজকে পাগল হিসেবে চিহ্নিত করতে পারেনি। তখন মিনহাজের মা এবং বোন তার জার্মানির সবগুলো ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের পিন নাম্বার মিনহাজের থেকে এই হুমকি দিয়ে নিয়ে নেন যে গোপন পিন নাম্বার না দিলে তাকে সেখান থেকে বের করা হবে না বলে হুমকি দেন। নিজের মা ও বোনের সম্মানের কথা চিন্তা করে এবং পারিবারিক সম্প্রীতি বজায় রাখতে মনে কষ্ট চেপে রেখে বিষয়টি ভুলে যাবার চেষ্টা করেন মিনহাজ। কিন্তু সম্প্রতি তার নববধূর সঙ্গে তাদের আচরণ ও নির্যাতন-মামলায় সার্বিকভাবে বিপর্যস্ত মিনহাজ। বাধ্য হয়ে বোন মালিহা ও তার স্বামীর নামে মামলা করেছেন তিনি। আর তার স্ত্রী তাহামিদাও মিনহাজের মা ও বোনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা দায়ের করেছেন।
মিনহাজ তার মা নাসিমা আক্তার সম্পর্কে জানান, তার মা অহংকারী মানুষ। আরও জানা যায়, বসুরহাট এ এইচ সি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে যোগদানের পর থেকে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অপরাধে জড়িত তিনি। তার কন্যার জামাতা সজিব মাহমুদও দুর্নীতি করে বিভিন্ন আমদানীকৃত পণ্যের ডিউটি ট্যাক্স কারসাজি করে কমিয়ে সরকারী রাজস্বের ক্ষতিসাধন করেন নিয়মিতই। এসব কারণে সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) নাসিমা আক্তার ও সজিব মাহমুদের নামে অভিযোগও দায়ের করেছেন এক সাংবাদিক যার কপি এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।